আলমশাহী ইনস্টিটিউটের অর্ধেক শিক্ষার্থীর পায়নি সরকারি বই

0
437

শেখ নাদীর শাহ্ : বই উৎসবের ৮ দিনেও পাইকগাছার আলমশাহী ইনস্টিটিউটের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী হাতে পৌছেনি সরকারের বিনামূল্যের বই। নতুন বইয়ের মন মাতানো গন্ধ অনুভ’ত হয়নি সেখানকার কোমলমতিদের। বই উৎসবের দিনে জনপ্রতি ৩ শ’ টাকার বিনিময়ে সেখানকার শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার অভিযোগ উঠে বিদ্যাপীঠটির প্রধান শিক্ষকসহ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। টাকা দিতে ব্যর্থ অনেক নিম্ন বিত্ত পরিবারের বই না পাওয়া সন্তানদের সেদিন শুধু বই বিতরণের দৃশ্য হজম ও দূরে দাঁড়িয়ে ভেঁজা চোখে দাঁত দিয়ে নখ কাটতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে প্রতিবাদে আবেদনও করেন। ইতোমধ্যে অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
লিখিত অভিযোগ ও সংশ্লষ্ট অভিভাবকরা জানান, উপজেলার গড়ইখালী আলমশাহী ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক মধুসুদন সরকার ও সেখানকার সভাপতি কামরুল গাইন পরষ্পর যোগসাজসে বই দিবসে ছাত্র প্রতি ৩শ’ টাকা করে আদায় করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করেন। টাকা দিতে না পারায় বই না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী কাঁদতে কাঁদতে সেদিন বাড়ী ফিরে যায়। অনেককে আবার দূরে দাঁড়িয়ে বই বিতরণের দৃশ্য দেখে নিজেকে সংবরণ করে। অনেকে আবার দাঁতে নখ কেটে নিজেকে সামলে এক সময় বাড়ী ফিরে যায়। বিষয়টি নজর এড়ায়নি ঐ দিন উপস্থিত অন্যান্য অভিভাবকদের,বই বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ঘটনায় ঐদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগও করেন। অভিযোগটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবদীন জানান, ইতোমধ্যে অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। তদন্তকালে যা পাওয়া গেছে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যার প্রতিবেদন ২/১ দিনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে অভিভাবক তরিকুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজস করে বই দিবসে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাব-মুর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।
প্রধান শিক্ষক মধুসুদন সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩শ টাকা করে সেশন চার্জ আদায় করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭০% বই বিতরণ করা হয়েছে। বাকীদের সংবাদ দিয়ে বিতরণ করা হবে।
সর্বশেষ সার্বিক ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আন্দোলনের কথা জানিয়েছেন গড়ইখালী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম কেরু।