অভয়নগর থানার পাথালিয়া ক্যাম্পের ইনচার্জ’র বিরুদ্ধে ঘুষ, নির্যাতন ও দুর্নীতির অভিযোগ

0
274

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগর উপজেলার পাথালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে, এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ, ঘুষের টাকা না দিলে অমানবিক জুলুম-নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশের মহাপরিদর্শক, জেলা পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইনচার্জের দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ নামা ও তথ্যানুন্ধানে জানা গেছে, ওই ক্যাম্পের পাশে কোদলা গ্রামের আব্দুল জলিল মোল্যার ছেলে আসাদ মোল্যা (৩৫) মাছের খামারে পুঁজি বাবদ বছরে ৪০ মন ধান সুদ হিসাবে ২ লাখ টাকা ধার করে। পাশের বর্ণি গ্রামের ওমর আলী মোল্যার ছেলে নূর ইসলামের কাছ থেকে দুই বছর আগে আসাদ মেল্যা ওই টাকা ধার নেয়। চুক্তি মোতাবেক আসাদ মোল্যা ৩০ বৈশাখ এর মধ্যে নূর ইসলামকে দুই লাখ টাকার সুদ বাবদ ৪০ মন ধান প্রদান করে আসছেন। এ অবস্থা চলাকালে গত ১৫ দিন আগে নূর ইসলাম তার টাকার প্রয়োজনে সুদ আসলে টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য আসাদ মোল্যার বাড়ি এসে গালিগালাজ করতে থাকে। ওই দিন এ ঘটনায় উভয়ের মধ্যে হাতাহতি হয়। পরে এ ঘটনায় আদালতে আসাদ মোল্যার স্ত্রী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা করার পর নূর ইসলাম ক্যাম্প ইনচার্জ এস আই শহিদুলকে দিয়ে আসাদকে শায়েস্তা করার হুমকি দেয়।
গত ১৯ ডিসেম্বর ভোরবেলায় আসাদ মোল্যা তার মাছের ঘেরে জেলে নিয়ে মাছ ধরছিলেন। এ সময়ে ক্যাম্প ইনচার্য শহিদুল ইসলাম নিজে আসাদের ঘেরে যান। তিনি আসাদকে বলেন, নূর ইসলামের টাকা পরিশোধ না করে ঘেরে মাছ ধরা যাবে না। এই বলে তিনি ঘেরে মাছ ধরা বন্ধ করে দেন। আসাদ মোল্যা পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশ মোতাবেক মাছ ধরা বন্ধ করে ওই দিন বিকালে তার আত্মী-স্বজন নিয়ে পাথালিয়া পুলিশ ক্যাম্পে যান। আসাদ মোল্যা জানান, ক্যাম্পে যাওয়ার সাথে সাথে ইনচার্জ এস আই শহিদুল ইসলাম তার দুই হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে পা ও হাতের মধ্যে লাঠি ঢুকিয়ে ক্যাম্পের মেঝেতে ফেলে দেয়। এ সময়ে সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। সেখানে উপস্থিত আমার স্ত্রী, ও ভাইদের সামনে বেদম ভাবে পেটাতে থাকে। আমার স্ত্রী ও ভাই কান্নাকাটি করতে থাকলে তাদেরকে ক্যাম্প থেকে বের করে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে এস আই শহিদুল ইসলাম ৩০ হাজার টাকা ঘুষের দাবি করেন। তা না হলে ৩/ ৪ টি মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি দেয়। এ কথা শুনে প্রাণের ভয়ে আসাদ মোল্যা রাজি হয়। ওই দিন রাত ১২ টার সময় তার ভাই ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিলে তাকে ক্যাম্প হাজত থেকে বের করে।
পরে এস আই শহিদুল ইসলাম ৩শ টাকার স্টাম্পে লিখিত চুক্তি করে আসাদ মোল্যার কাছ থেকে সহি করে নেয়। লিখিত চুক্তিতে উল্লেখ করা হয় আগামী ১০ দিনের মধ্যে নূর ইসলামের ২ লাখ টাকা ও সুদ বাবদ ধান ফেরত দিতে হবে। টাকা ফেরত না দিলে আসাদ মোল্যার দখলীয় ১৪ বিঘার ঘের পাওনাদার নূর ইসলাম ভোগ দখল করিবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এস আই শহিদুল ইসলাম বলেন, আসাদ মোল্যা ও নূর ইসলামের মধ্যে একটি সুদে টাকার লেনদেন আছে। এ বিষয়ে আমার ক্যাম্পে একটি সালিশ মীমাংসা হয়। আসাদ মোল্যার ভাই একটি শিশু নির্যাতন মামলার আসামী। তার ভাইকে গ্রেফতার করতে গেলে সে ওই সব নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছে।