দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় শিল্পখাতে সিআইপি হলেন ৫৬ উদ্যোক্তা

0
645

খুলনা টাইমস ডেস্কঃ বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের প্রতি বছরই শিল্প খাতের জন্য সিআইপি বা বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (শিল্প) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে সরকার। সম্প্রতি ২০১৬ সালের ৫৬ জন সিআইপির (শিল্প) নাম ঘোষণা করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। ৭ আগস্ট এ নিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, নির্বাচিত সিআইপিরা এক বছরের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এসব সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে সিআইপি (শিল্প) সংক্রান্ত একটি পরিচয়পত্র, যা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হবে। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন তারা। এছাড়া ব্যবসাসংক্রান্ত ভ্রমণকালে আকাশ, রেল, সড়ক ও জলপথে চলমান সরকারি যানবাহনগুলোয় আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার পাবেন তারা।

শিল্প খাতের সিআইপিদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধার মধ্যে আরো রয়েছে ব্যবসাসংক্রান্ত কাজে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভিসাপ্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে উদ্দেশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লেটার অব ইনট্রোডাকশন, নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার, বিমানের ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা এবং এ সুবিধার মেয়াদকালে সরকারের শিল্পবিষয়ক নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ।

তবে নির্বাচিতদের মেয়াদ শেষ হওয়ার সাতদিনের মধ্যে সিআইপি হিসেবে পাওয়া পরিচয়পত্র শিল্প মন্ত্রণালয়ে ফেরত দিতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা রয়েছে। এছাড়া সরকারও জনস্বার্থে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির সিআইপি (শিল্প) হিসেবে পাওয়া সুযোগ-সুবিধা মেয়াদ চলাকালেই যেকোনো সময় প্রত্যাহার করতে পারবে বলে শর্ত রয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৪ সালের সিআইপি (শিল্প) নির্বাচন নীতিমালার ভিত্তিতে মোট ৫৬ জন ব্যক্তিকে ২০১৬ সালের জন্য শিল্প খাতের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে পদাধিকারবলে শিল্পসংশ্লিষ্ট সংগঠন থেকে সিআইপি হচ্ছেন আট ব্যক্তি। এছাড়া উৎপাদনমুখী বৃহৎ শিল্প খাতে ২০ জন, সেবামুখী শিল্পে পাঁচ, উৎপাদনমুখী মাঝারি শিল্প খাতের ১২, সেবামুখী মাঝারি শিল্প খাতের তিন, ক্ষুদ্রশিল্প খাতের পাঁচ ও সেবামুখী ক্ষুদ্র শিল্প খাতে একজন সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া মাইক্রো শিল্প ও কুটির শিল্প খাতে একজন করে আরো দুজনকে সিআইপি (শিল্প) ঘোষণা করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

পদাধিকারবলে নির্বাচিত আট সিআইপি হলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সাবেক সভাপতি একে আজাদ, বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান, এফআইসিসিআই সভাপতি রুপালী হক চৌধুরী, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সেলিমা আহমাদ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি তপন চৌধুরী এবং জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বাংলাদেশের (নাসিব) সভাপতি মির্জা নূরুল গণী শোভন।

উৎপাদনমুখী বৃহৎ শিল্প খাতের ২০ জনের মধ্যে রয়েছেন বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী, ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নাছির উদ্দিন, বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি মো. পারভেজ রহমান, এসিআই লিমিটেডের এমডি ড. আরিফ দৌলা, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের এমডি আমের আলী হোসাইন, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেডের এমডি আব্দুস ছামাদ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (নোমান), কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের পরিচালক তানভীর আহমেদ, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের এমডি আবদুল মোনেম, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেডের এমডি প্রকৌশলী মো. আবু নোমান হাওলাদার, পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলসের এমডি মির্জা সালমান ইস্পাহানি, ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মামুন ভূইয়া, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি মো. শামসুর রহমান, মেসার্স ভিয়েরাটেক্স লিমিটেডের এমডি কেএম রেজাউল হাসানাত, সোহাগপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের মনোনীত মালিক পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের এমডি অঞ্জন চৌধুরী, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের এমডি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন আহমেদ, বাদশা টেক্সটাইল লিমিটেডের এমডি মো. বাদশা মিয়া এবং মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক সায়েম সোবহান।

বৃহৎ শিল্প (সেবা) খাতের পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের এমডি খন্দকার মনির উদ্দীন, নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএম কামাল উদ্দিন, জিএমই এগ্রো লিমিটেডের এমডি চৌধুরী হাসান মাহমুদ এবং শেলটেক (প্রা.) লিমিটেডের এমডি ড. তৌফিক এম সেরাজ।

মাঝারি শিল্প (উৎপাদন) খাতের ১২ জনের মধ্যে রয়েছেন আরএফএল প্লাস্টিকস লিমিটেডের এমডি আহসান খান চৌধুরী, প্রমি অ্যাগ্রো ফুডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এনামুল হাসান খান, অকো-টেক্স লিমিটেডের এমডি আব্দুস সোবহান, মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস লিমিটেডের এমডি মো. নিজাম উদ্দিন ভূইয়া লিটন, ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের এমডি আরিফ আহমেদ চৌধুরী, এ্যাকোয়া মিনারেল টারপেনটাইন অ্যান্ড সলভেন্টস প্লান্ট লিমিটেডের এমডি রামজুল সিরাজ, মেসার্স সিটাডেল অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মো. মাহিদুল ইসলাম খান, জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডস লিমিটেডের এমডি আব্দুল জব্বার মোল্লা, বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের এমডি জেডএম গোলাম নবী, ইগলু ফুডস লিমিটেডের পরিচালক এএসএম মঈনউদ্দিন মোনেম, বিআরবি পলিমার লিমিটেডের এমডি মো. মজিবর রহমান এবং মোশাররফ স্পিনিং মিলস (প্রা.) লিমিটেডের এমডি মো. মোশাররফ হোসেন।

মাঝারি শিল্প (সেবা) খাতের তিন সিআইপি হলেন— স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান খান মো. আফতাব উদ্দিন, শান্তা প্রোপার্টিস লিমিটেডের পরিচালক জেসমিন সুলতানা ও বিল্ডিং ফর ফিউচার লিমিটেডের এমডি তানভিরুল হক প্রবাল।

উৎপাদনমুখী ক্ষুদ্রশিল্প খাতের নির্বাচিত পাঁচ সিআইপির মধ্যে রয়েছেন কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি মো. মিজবার রহমান, ফুজি ইংক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফারহানা মোনেম, আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, রানার ব্রিকস লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং সবজীয়ানা লিমিটেডের ডিএমডি মোহাম্মদ আবু শাহরিয়ার।

ক্ষুদ্রশিল্প (সেবা) খাতের সিআইপি হয়েছেন কিউএনএস কনটেইনার সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ুম খান। এছাড়া টেকনোমিডিয়া লিমিটেডের এমডি যশোদা জীবন দেব নাথকে মাইক্রো শিল্প খাতে এবং এবি ফ্যাশন মেকারের স্বত্বাধিকারী সানাউল হক বাবুলকে কুটির শিল্প খাতে সিআইপি নির্বাচিত করা হয়েছে।