৬৯তম বারেও পেছাল সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন

0
335

খুলনাটাইমস: সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ নিয়ে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ৬৯তম বার পেছাল। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস এ আদেশ দেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাড়িতে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। সাগর তখন মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যাকা-ের সময় বাসায় ছিল তাঁদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সারওয়ার মেঘ। হত্যাকা-ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে এ মামলায় মোট আটজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান। তাঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনই মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র হত্যার ঘটনায় র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেফতার হন। প্রথম পাঁচজন ও নিরাপত্তারক্ষী এনামুল এখনো এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এই মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের অতিরিক্ত ডিএজি খন্দকার শফিকুল আলম গত সোমবার হাইকোর্টের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তারপর তিনি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে একটি প্রতিবেদন দেন। তাতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলায় এখনো কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিএনএ পরীক্ষার চারটি প্রতিবেদনের মধ্যে দুটি এলেও আসামিদের সঙ্গে এসব নমুনা মেলেনি। আরো দুটি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। এসব প্রতিবেদন কবে নাগাদ আসবে, তা বলা যাচ্ছে না। এ সময় আদালতও তদন্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে কিছু বক্তব্য দেন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত এ মামলার প্রতিবেদন না পেয়ে আদালতও হতাশা প্রকাশ করেন। শুনানি শেষে আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বিষয়টি গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন। ফাওজিয়া করিম বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাজির হয়েছিলেন। এ মামলার এখন পর্যন্ত সাতজন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু মামলার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। শুনানিকালে তদন্ত কর্মকর্তা খন্দকার শফিকুল আলম আদালতে বলেন, এ মামলার কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। চারটি ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনের জন্য নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। এর মধ্যে দুটি নমুনা এসেছে। এসব নমুনার সঙ্গে আসামিদের কারো কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। অপর দুটি পরীক্ষার নমুনা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইতে রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। এ সময় অদালত বলেন, আপনারা আলামত হিসেবে কী পেয়েছেন? জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আমরা কয়েকটি ছোরা, দা ও বঁটি পেয়েছি। তবে রিপোর্ট না আসায় কারো সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি। আইনজীবী জানান, তখন আদালত হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, দীর্ঘ আট বছর মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?