সুইস ব্যাংকে যেসব কারণে অর্থ রাখেন দুনিয়ার বিখ্যাত ধনীরা

0
696
Dunkle Wolken haengen ueber dem Zuercher Paradeplatz mit der UBS, am Donnerstag, 9. Juli 2009. Der Schlagabtausch zwischen den US-Behoerden und der Schweiz wird wenige Tage vor der Eroeffnung des UBS-Prozesses in Miami taeglich haerter. Nun will Richter Alan Gold vom US-Justizdepartement wissen, ob er notfalls UBS-Teile in den USA beschlagnahmen kann. Der zustaendige Richter des Bundesbezirksgerichts in Miami reagierte am Mittwoch, 8. Juli 2009 auf die juengste Erklaerung des Bundesrates, er werde der UBS gegebenenfalls die Herausgabe von 52'000 Kundendaten verbieten, da dies gegen das Schweizer Recht sei. Gold gibt dem Justizministerium bis Sonntag Zeit, sich zu aeussern. (KEYSTONE/Alessandro Della Bella)

অনলাইন ডেস্ক: সারা দুনিয়ার ধনী এবং বিখ্যাত লোকজন তাদের টাকা রাখার জন্য সুইস ব্যাংক কেন এত পছন্দ করেন? এর প্রধান কারণ, গ্রাহকের গোপনীয়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সুইস ব্যাংকগুলোর সুনাম। কোন সুইস ব্যাংকে কে কত অর্থ জমা রেখেছে, সেই তথ্য সুইস ব্যাংক পারতপক্ষে ফাঁস করবে না। এসোসিয়েশন অব সুইস প্রাইভেট ব্যাংকার্স এর প্রধান মিশেল ডি রবার্ট কয়েক বছর আগে বিবিসির কাছে ব্যাখ্যা করছিলেন কিভাবে এই গোপনীয়তার নীতি কাজ করে।

একজন ডাক্তার বা আইনজীবী যেভাবে তার রোগী বা মক্কেলের গোপনীয়তা বজায় রাখেন, এখানেও ব্যাপারটা তাই, বলছিলেন তিনি। একজন সুইস ব্যাংকার তার গ্রাহকের কোন তথ্য কাউকে দিতে বাধ্য নন, এটা রীতিমত নীতি এবং আইন বিরুদ্ধ। ঠিক এ কারণেই সুইজারল্যান্ড হয়ে উঠেছে বিশ্বের ব্যাংকিং সেবার এক বড় কেন্দ্র। তিনশোর উপরে ব্যাংক এবং আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুটি ব্যাংক হচ্ছে ক্রেডিট সুইস এবং ইউবিএস। এই গ্রাহকের গোপনীয়তা কিভাবে রক্ষা করে সুইস ব্যাংকগুলো। সিনেমা, থ্রিলার উপন্যাসে কিংবা মিডিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি ধারণা হচ্ছে, সুইস ব্যাংকগুলোতে বেনামী বা অনামী (এনোনিমাস) একাউন্ট খোলা যায়। কিন্তু বাস্তবে এটি সত্য নয়।

সুইস ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন তাদের সাইটে বলছে, অনামী একাউন্ট বলে কিছু সুইজারল্যান্ডে নেই। কোন ব্যাংক গ্রাহকের একাউন্টটি হয়তো কেবল সংখ্যা দিয়েই চিহ্ণিত করা থাকবে, কিন্তু এই গ্রাহকের আসল পরিচয় ব্যাংকের খুবই অল্প কয়েকজন কর্মকর্তা অবশ্যই জানবেন। কিন্তু সুইস ব্যাংকগুলোর এই কঠোর গোপনীয়তার নীতি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক শিথিল করতে হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাপের মুখে।
মূলত কর ফাঁকি দেয়া, কিংবা দুর্নীতি বা অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ রাখার জন্যও অনেকে সুইস ব্যাংক বেছে নেয়। বিশ্বের অনেক দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক, ব্যবসায়ী বা নামকরা তারকা সুইস ব্যাংকে তাদের অর্থ পাচার করেছেন, এমন খবর বিগত দশকগুলোতে বহু বার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

কিন্তু এ নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইজারল্যান্ডের ওপর চাপ বেড়েছে এ রকম অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অনেকেই দাবি জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোকে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের গ্রাহকদের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। বাধ্য হয়ে তাতে নতি স্বীকার করতে হয়েছে তাদের। সুইজারল্যান্ড কিভাবে সারা দুনিয়ার ব্যাংকিং সেবার বড় কেন্দ্র হয়ে উঠলো তার ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। বলা হয়ে থাকে, ১৯৩০ এর দশকে জার্মানিতে যখন ইহুদীরা নাৎসীদের শুদ্ধি অভিযানের মুখে পড়ে, তখন তাদের অর্থ গোপন ব্যাংক একাউন্টে রাখার মাধ্যমে সুইস ব্যাংকগুলোর এই ব্যবসার শুরু।

তবে তারও আগে ১৯৩৪ প্রথম সুইস ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের গোপনীয়তার রক্ষার আইন করে। ফ্রান্সের কয়েকজন রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ী তাদের বিপুল অর্থ সুইস ব্যাংকে রেখেছিলেন। সেই তথ্য ব্যাংক থেকে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এরপর সুইস ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়।
এই গোপনীয়তা আইনের সুযোগে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলো ফুল ফেঁপে উঠে। তৃতীয় বিশ্বের দুর্নীতিবাজ স্বৈরশাসক থেকে শুরু করে ইউরোপ-আমেরিকার কর ফাঁকি দেয়া বিত্তশালী ব্যবসায়ী, সবাই তাদের অর্থ গোপন রাখার জন্য বেছে নেন সুইস ব্যাংকগুলোকে।