শিগগিরই চালু হচ্ছে খুলনা নার্সিং কলেজ

0
644

কামরুল হোসেন মনি: 
খুব শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে খুলনা নার্সিং কলেজ। কলেজটি চালুর লক্ষ্যে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। চলছে মাটি ভরাটের কাজ। কলেজের আসবাবপত্র ও সরঞ্জামাদীও পৌঁছে গেছে। চলতি ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তির মধ্যে দিয়ে কলেজটি যাত্রা শুরু করবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।
খুলনা নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ খালেদা বেগম শনিবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, চলতি ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তির মধ্যে দিয়ে কলেজটি যাত্রা শুরু করবে। এ জন্য কলেজের সীমান প্রাচীর নির্মাণ কাজ ও কলেজের উঁচুনিচু মাঠ সমতল করার জন্য মাটি ভরাটের কাজও চলছে। এ সব কাজ সম্পন্ন হলেই মার্চ মাসে ডিজি মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে কলেজটি চলতি শিক্ষাবর্ষে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রশাসনিক ও হোস্টেলের কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এগুলোও যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় সে ব্যাপারেও কথাবার্তা চলছে।
নার্সিং কলেজ অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ১০ একর জমির ওপর ১৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায় ২০০৯ সালে। ওই সময় একটি একাডেমিক ভবন, একটি গেস্ট হাউজ, কলেজছাত্রীদের জন্য দুইটি হোস্টেল ও ২য় ও ৩য় শ্রেণি পদে কর্মরতদের তিনটি স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ কাজের অধিকাংশ সম্পন্ন করা হয়। ২০১১ সালে একাডেমিক ভবন চালুর উদ্যোগ নিয়ে ১৩ জন শিক্ষক পদায়ন করা হলেও বর্তমানে একজন প্রভাষকসহ ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন কাগজে-কলমে। তারা সবাই এখনো ডেপুটেশনে রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন প্রভাষক রেবা ম-ল, ডিমোনেস্ট্রেটর আছেন শরিফুল ইসলাম, আসমাতুল নেছা, আলেয়া বেগম ও জুথিকা রানী মুখার্জী। এদের মধ্যে আবার শিক্ষা ছুটি এবং বাকীরা প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত আছেন। এছাড়া ৩য় শ্রেণিতে ১২ জন কর্মরত আছে। যার মধ্যে প্রেষণে আছে ২ জন। কর্মরত আছে ১০ জন। এরা হচ্ছে ল্যাব সহকারী ৪ জন, কম্পিউটার অপারেটর ২ জন, স্টোর কিপার ১ জন, ড্রাইভার ১ জন, হিসবারক্ষক ১ জন ও ক্যাশিয়ার ১ জন।
কলেজের হিসাবরক্ষক নীতিশ চন্দ্র রায় বলেন, কলেজটি চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও সরঞ্জামাদীর প্রায় ৯৫ শতাংশ কলেজে পৌঁছে গেছে। বাকী ৫ ভাগ এ মাসেই চলে আসবে। ইতোমধ্যেই ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং চেয়ার, কাঠের টপ চেয়ার, উডেন খাট, ডাইনিং টেবিল, টেবিল ফর পেন্টি, টিভি স্ট্যান্ড, উডেন রাইটিং চেয়ার, রিডিং টেবিল (৪ জন বসার), রিডিং টেবিল (৮ জন বসার), রিডিং চেয়ার (হাতলছাড়া), উডেন আলমারী, বুক সেলফ, ফুল সেক্রেটারিয়েট টেবিল, হাতলযুক্ত কুশন চেয়ার, হাতলযুক্ত কাঠের চেয়ার, ডেস্ক টেবিল, উডেন আলমারী, সোফাসেটসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চলে এসেছে।
খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচইডি) সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ১২ একর জমির ওপর ১৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে নার্সিং কলেজ এবং ১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে আইএইচটি’র নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মুন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজের দুই বছরের মাথায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে ৩০ মাসের মধ্যে হোস্টেল ও আবাসিক ভবনগুলো এবং ১৮ মাসের মধ্যে একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কলেজের ৯৫ ভাগ এবং আইএইচটি’র ৪৬ ভাগ শেষ হওয়ার পরও বাকি কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। ২০০৭ সালে নির্মাণ করা হয় একটি গেস্ট হাউজ, অধ্যক্ষের বাসভবন, তিনটি স্টাফ কোয়ার্টার, একটি একাডেমিক ভবন এবং দুটি হোস্টেল ভবন। কলেজটি চালুর জন্য ২০১১ সালে ১৩ জন শিক্ষক পদায়ন করা হলেও বর্তমানে কাগজ-কলমে মাত্র ৫ জন রয়েছে।