শরণখোলায় স্বামীর নির্যাতনে মারা গেছে গৃহবধূ লাইজু, পিতার অভিযোগ

0
456

শরণখোলা আঞ্চলিক অফিস:
শরণখোলায় স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধুর কথিত আত্মহত্যার ঘটনাটি যৌতুকের দাবীতে হত্যাকান্ড বলে অভিযোগ করেছেন নিহত খাদিজা আক্তার লাইজুর পিতা উপজেলার দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন খান। তিনি কন্যা হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত চান।
সাংবাদিকদের কাছে এক লিখিত অভিযোগে জয়নাল আবেদীন খান বলেন, ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের পুত্র সেলিম হোসেন ডালিমের সাথে সামাজিকভাবে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তার কন্যা খাদিজা আক্তার লাইজু আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য জামাতাকে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার সহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল উপঢৌকন দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে জামাতা সেলিম কারণে অকারণে খাদিজাকে মারপিট করে। এমনকি ২০১৭ সালে একবার স্বামীর মারধরে খাদিজা গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ দিন যাবৎ চিকিৎসাধীন ছিলো। স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় খাদিজা আক্তার লাইজু ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারী শরণখোলা ব্র্যাকের আইন সহায়তায় শাখায় স্বামী সেলিমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। তখন সেলিম আত্মীয়স্বজন নিয়ে স্ত্রী খাদিজার সাথে আপোষ মিমাংশা করে খাদিজাকে ঘরে তুলে নেয়। এর কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পরে সেলিম মোটর সাইকেল কেনার জন্য নতুন করে দুই লাখ টাকা যৌতুক পিতার বাড়ী থেকে এনে দেবার জন্য খাদিজাকে পুনরায় মারধর করতে থাকে। গরীব পিতা এতো টাকা দিতে পারবেনা বলে খাদিজা জানালে গত ১৯ জুলাই সারাদিন স্বামী সেলিমের দফায় দফায় মারপিটে খাদিজা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তখন সেলিম খাদিজাকে কীটনাশক খাইয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসক খাদিজাকে মৃত ঘোষনা করলে সেলিম ও তার পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগে বলা হয়। লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে মাথার পিছনে ফোলা চিহ্ন রয়েছে উল্লেখ করা হলেও ময়নাতদন্তের পরে পরিবারের লোকেরা দাফনের জন্য খাদিজাকে গোসল করানোর সময় তার পিঠে অসংখ্য মারপিটের চিহ্ন দেখতে পেয়েছে বলে জানায় ।
নিহত খাদিজার পিতা তার কন্যা হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবী করেন।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ দিলিপ কুমার সরকার বলেন, মৃত দেহের সুরতহাল করার সময় যা পাওয়া গেছে পুলিশ তাই লিপিবদ্ধ করেছে। পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।