বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী মার্কিন ব্যবসায়ীরা

0
152

টাইমস ডেক্স :বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে অনুষ্ঠিত হলো একটি বিশেষ নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট। যেখানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রধান ও শতাধিক মার্কিন ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারী অংশ নেন। গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ও ইউএস-বাংলাদেশ গেøাবাল চেম্বার অব কমার্সের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মার্কিন ব্যবসায়ী ও নিউইয়র্ক টাইমসের সাবেক ম্যানেজিং ডিরেক্টর মার্ক জোলার। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি, তৈরি পোশাক, নিট কম্পোজিট, ব্যাংকিং, পুঁজিবাজার, বীমা, তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পাট, বস্ত্র, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ইত্যাদি খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং ইউএস-বাংলাদেশ গেøাবাল চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান আজিজ আহমদের যৌথ সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রতিনিধি জেনিফার লারসেন, মার্কিন ব্যবসায়ী ও রফেলার ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি স্টিভ রকফেলার, স্ট্রাটেজিক এক্সিকিউটিভ সার্চ গ্রæপের চেয়ারম্যান ক্রিস ট্রব, ওপেনএক্সোর চেয়ারম্যান সেলিম ইসমাইল, ইউএস-চায়না পার্টনার্সের চেয়ারম্যান সাভিও চ্যানসহ আরও অনেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিবেশ, অভ্যন্তরীণ বাজার ও চাহিদা এবং রফতানিনির্ভর শিল্পভিত্তিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের অপেক্ষাকৃত দ্রæতবর্ধনশীল অর্থনীতির কাতারে তুলে এনেছে। এখানকার অর্থনীতি অব্যাহতভাবে গড়ে ৬.৫ শতাংশ হারে বাড়ছে আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে এক সম্ভাবনার দেশ। এর উন্নয়নশীল বাজার অর্থনীতি এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো, উল্লেখ করেন বক্তারা। জাতিসংঘের উন্নয়ননীতিবিষয়ক কমিটি স¤প্রতি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করেছে। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সকল ক্রাইটেরিয়ায় বাংলাদেশ তার পারঙ্গমতা দেখাতে পেরেছে বলেই এই উত্তরণ। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির মাঝেও বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক শক্তি দেখিয়েছে, বলেন তারা। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই ওয়েবিনারের শুরুতেই বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধক পরিবেশের একটি চিত্র তুলে ধরে সম্ভাব্য মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহŸান জানান। এ ছাড়া চলতি বছরের বাংলাদেশে হতে চলা বিডার বিনিয়োগ সম্মেলনে আসতে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। জাপানের সুমিটোমোর বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের উদাহরণ তুলে ধরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে কর্তৃপক্ষ (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী মার্কিন নাগরিকদেরও বিনিয়োগের আহŸান জানান। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবাটিকসসহ তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনার কথা জানান। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রুবিনা হক বলেন, বিশ্বের শীর্ষ ১০টি গ্রিন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ৯টিই বাংলাদেশে অবস্থিত, তাই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ‘গ্রিন প্রাইন’ এর দাবিদার। আমেরিকান ব্যবসায়ী নেতারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বর্তমান চিত্রের ব্যাপক প্রশংসা করে, এই ক্রমবর্ধনশীল অর্থনীতিতে তাদের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান তারা। বাংলাদেশের স্মার্ট গভর্নেন্স, মানবসম্পদ, উদ্ভাবনী ব্যবসায়ী উদ্যোগ ও সবুজ জ¦ালানি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যা কিছু বেস্ট প্রাকটিস সেগুলো বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তারা। তবে এজন্য দুর্নীতির ক্ষেত্র জিরো টলারেন্স চান। শিক্ষা, জীবনাচার ও সুস্থ মানবজীবন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলোচনায় অংশ নেন স্ট্রাটেজিক এক্সিকিউটিভ সার্চ গ্রæপের চেয়ারম্যান ও কোমাস্টারমাইন্ড ও ভোরটেক্স গেøাবালের কো-ফাউন্ডার ক্রিস ট্রব, এক্সপোটেনশিয়াল সাসটেইনেবেলিটি স্ট্রাটেজিস্টের ফাউন্ডার জাবিন কাদির, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া-নেপাল-শ্রীলংকা বিষয়ক পরিচালক জেনিফার লারসন, নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি মাইনরিটি ডেভেলপমেন্ট সাপ্লায়ার কাউন্সিলের সিইও টেরেন্স ক্লার্ক, ইউএস-চায়না পার্টনার্সের চেয়ারম্যান স্যাভিও চ্যান, গেøাবাল ট্রেড টেকনোলজি সেন্টারের চেয়ারম্যান মাইলেস এম ম্যাথিউ, ওপেন এক্সোর চেয়ারম্যান ও কো-ফাউন্ডার সেলিম ইসমাইল, নিউইয়র্ক স্টেটের বিজনেজ ইনকিউবেটর অ্যাসোসিয়েশেনর মার্ক অ্যালেসি, গেøাবাল বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের ডেভিড সি ট্রব, বিজনেস এক্সিকিউটিভ স্টেভেন রোকেফেলার থার্ড, পিএসইজি এনার্জি রিসোর্সেসের প্রেসিডেন্ট শহিদ মালিক, এবং ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়ান (এমবিএ) নির্বাহী পরিচালক মার্ক জোলার।