পেটার হান্টক্যর নোবেল বিজয় নিয়ে ক্ষোভ

0
295

খুলনাটাইমস বিদেশ : এ বছর অস্ট্রিয়ার লেখক পেটার আর হান্টক্যর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়া নিয়ে আলবেনিয়া, বসনিয়া এবং কসোভো বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।হান্টক্যকে তারা ‘বলকানের কসাই’ নামে কুখ্যাত সার্ব নেতা স্লোবোদান মিলোসেভিচের কট্টর সমর্থক বলে মনে করে। এমনকি এই অস্ট্রিয়ান লেখক ২০১৪ সালে নোবেল পুরস্কার বিলোপের বিতর্কিত দাবি তুলেও সমালোচিত ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে যুগস্লাভ যুদ্ধের সময় হান্টক্য সার্বদের সমর্থন দেন এবং তাদের পক্ষে জোর প্রচার চালান। ওই সময় তিনি সার্বদের অসহায় অবস্থার বর্ণনা করতে তাদের নাৎসি সরকারের অধীনে ইহুদিদের সঙ্গে তুলনাও করেন। যদিও পরে তিনি তার ওই বক্তব্য অস্বীকার করেছেন। হান্টক্য ২০০৬ সালে মিলোসেভিচের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েও দারুণ বিতর্কিত হয়েছিলেন। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে বিচার চলার মাঝেই মিলোসেভিচের মৃত্যু হয়। তার আগে মিলোসেভিচ আদালতের কাছে তার পক্ষের সাক্ষী হিসেবে হান্টক্যকে চেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে হান্টক্যের ভ্রমণকাহিনী ‘এ জার্নি টু দ্য রিভার্স: জাস্টিস ফর সার্বিয়া’ প্রকাশ পেলে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এছাড়া বেলগ্রাদে নেটোর বিমান হামলার প্রতিবাদে ১৯৯৯ সালে তিনি জার্মানির অভিজাত বুকার পুরস্কার ফিরিয়ে দেন। এভাবে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দেওয়া ব্যক্তিকে নোবেল পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া তাই অনেকেই ভালো ভাবে নেননি। আলবানিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা টুইটারে লেখেন, “কখনো ভাবিনি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম শুনে আমার বমি আসবে। “নোবেল অ্যাকাডেমির মত একটি নৈতিক কর্তৃপক্ষ এরকম অসম্মানজনক কাউকে বেছে নেবে, লজ্জাই এখন তাহলে নতুন মূল্যবোধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। না, আমাদের পক্ষে বর্ণবাদ এবং গণহত্যার নিয়ে এতটা অনুভূতিশূন্য হওয়া সম্ভব না।” হান্টক্যর নোবেল পুরস্কার পাওয়াকে ‘কলঙ্কিত এবং লজ্জাজনক’ বলে বর্ণনা করেন বসনিয়ার যৌথ প্রেসিডেন্সির মুসলমান সদস্য সেফিক জাফেরোভিচ। তিনি বলেন, “হান্টক্য কুখ্যাত সার্ব নেতা স্লোবোদান মিলোসেভিচের সমর্থন এবং তাকে সুরক্ষা দিয়েছেন জানার পরও নোবেল প্রাইস কমিটি কতটা সহজে ওই বিষয়গুলোর সঙ্গে আপোশ করেছে, যা সত্যিই লজ্জাজনক। অথচ মিলোসেভিচ, তাদের নেতা র‌্যানডোভান কারাদজিক এবং তাদের সেনা প্রধান রাৎকো ম্লাদিচকে গণহত্যাসহ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধের জন্য জাতিসংঘের একটি আদালত দোষীসাব্যস্ত করে কারাদ- দিয়েছে।” কসোভোর প্রেসিডেন্ট হাশিম থাচির টুইট, “হান্টক্যকে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার অসংখ্য মানুষের জন্য অপরিসীম কষ্ট বয়ে নিয়ে এসেছে।” সেখানে একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে হান্টক্যর নোবেল জয়ের খবরের শিরানাম করে ‘মিলোসেভিচের সমর্থক এবং সার্বিয়ায় গণহত্যা অস্বীকারকারী সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন’। নানা জায়গায় সমালোচনা হলেও সার্বিয়ার দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ঠিক প্রশংসার বন্যায় ভেসেছেন হান্টক্য। বেশির ভাগ পত্রিকার শিরোনাম ছিল অনেকটা ‘সার্বিয়ার একজন বন্ধু’ নোবেল পুরস্কার জিতেছেন।