পুরনো কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর কিছু সহজ উপায়

0
392

অনেক সময় দুই বছরের পুরনো কম্পিউটারে আর কাজ করা সম্ভব হয় না। অথবা নতুন কেনা ল্যাপটপ চালু হতেই ১০ মিনিট লেগে যায়! ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের এ রকম অনেক ধরনের সমস্যার অনেকটাই আপনি নিজে খুব সহজে মিটিয়ে ফেলতে পারেন। দরকার শুধু একটু নিয়মিত যতœ আর চেকআপ।
তাপমাত্রা:
সাধারণত আমরা খেয়াল করি না কম্পিউটারের ভিতরে কী চলছে। এক-দুই বছরের পুরনো হতে থাকে যখন কম্পিউটার, স্বাভাবিক ভাবেই সিপিইউ-এর উপর যে কুলার থাকে, সেখানে ধুলো জমে কুলিং-এর কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। এ ছাড়াও ওই ফ্যানের নীচে আর সিপিইউ-এর মাঝে একটা পাতলা থার্মাল পেস্টের লেয়ার থাকে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটাও কিছুটা শুকিয়ে আসে। ফলে সিপিইউ থেকে তাপ কুলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।
এখন থেকে কম্পিউটার চালিয়ে এইচডব্লিউ-মনিটর (ঐডগড়হরঃড়ৎ) নামের সফটওয়্যার (বিনামূল্যে পাবেন) ব্যবহার করুন। মাঝে মাঝে খেয়াল করে দেখুন— কম্পিউটার যখন চালু করছেন, আর যখন খুব কাজ করছেন, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কত। যদি দেখেন সাধারণভাবে ৩৫-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ৭৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে, খুব একটা চিন্তার কারণ নেই। তাপমাত্রা যদি তার থেকে বেড়ে যায়, ভালো করে ভিতরের ধুলো পরিস্কার করুন। অনেক ক্ষেত্রে এতেই কাজ হয়ে যায়। কিন্তু তাতেও না হলে থার্মাল পেস্ট পাল্টাতে হতে পারে। নিজে না পারলে অভিজ্ঞ কারও সাহায্য নিন।
হার্ডডিস্কস্লো:
কম্পিউটার চালু হতেই অনেক সময় নিচ্ছে? অথবা সামান্য একটা ফাইল খুলতে গেলে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে? ভাল করে খেয়াল করে দেখুন, আপনার ল্যাপটপের হার্ড ডিস্কের স্পিড কত আরপিএম। যদি সেটা ৫,৪০০ রোটেশন প্রতি মিনিট হয়, তবে তা সাধারণ ৭,২০০ আরপিএম হার্ড ডিস্কের থেকে স্লো হবেই, কিছু করার নেই। এটা কেনার আগেই খেয়াল করবেন। কিন্তু আপনার যদি সাধারণ ৭,২০০ আরপিএম এর হার্ড ডিস্ক আগের থেকে স্লো হয়ে যায়, সেটাকে ডিফ্র্যাগ করুন। এর ফলে যত তথ্য রয়েছে হার্ড ডিস্কে, সব একটা নির্দিষ্ট অংশে থাকবে, হার্ড ডিস্ক জুড়ে ছড়িয়ে থাকবে না, ফলে আপনি যখন কোনও ফাইল খুজবেন, অনেক তাড়াতাড়ি সেটা খুঁজে পাবেন, খুলে ব্যবহার করতে পারবেন। যদি নতুন কম্পিউটার হয়ে থাকে, তাতে শুরুতেই বায়োস সেটিংস (ইওঙঝ ঝবঃঃরহমং) ব্যবহার করে ফাস্ট বুট চালু করে দিন, উইনডোজ চালু হবে আরও তাড়াতাড়ি।
র্যামেরযথাযথব্যবহার:
৮ জিবি র্যাম থাকা সত্বেও সামান্য কিছু ট্যাব খুলতেই প্রায় অর্ধেক র্যাম ভরে যাচ্ছে, তারপর ছবি বা ভিডিও এডিটের মত কাজ করার কোনও উপায় প্রায় থাকছেই না। এ ক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কম্পিউটার শুরু হতেই পিছনে কী কী সফটওয়্যার চালু হয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে একাধিক এ রকম সফটওয়্যারও চালু হয়ে যায়, যা আপনি হয়ত কোনও দিন ব্যবহারও করেননি, বা খুব অল্প ব্যবহার করেছেন। টাস্ক ম্যানেজার থেকে দেখুন স্টার্ট আপে কী কী সফটওয়্যার চালু হচ্ছে । অপ্রয়োজনীয় সবকটি সফটওয়্যার বন্ধ করুন। দেখুন অটো আপডেটে কী কী সফটওয়্যার রয়েছে, যার জন্যে আপনার কম্পিউটার এবং নেট স্লো হয়ে যেতে পারে, সব বন্ধ করুন। ম্যানুয়ালি আপডেট করুন নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী। খেয়াল রাখুন ক্যাশে মেমরি এবং টেম্প ফাইল, জাঙ্ক ফাইল নিয়মিত ক্লিয়ার করার কথা। শুধু র্যাম নয়, ফাস্ট হবে গোটা কম্পিউটার, লাভবান হবেন আপনি। সি-ক্লিনার (ঈ ঈষবধহবৎ) এ রকমই একটা সফটওয়্যার, ফ্রি-তে পাবেন, আপনার জন্যে এ রকম সব কাজ একটা ক্লিকে করে দেবে।
প্রয়োজনীয়আপডেট:
সাধারণত কোনও আপডেট দেখলেই সেটা ‘রিমাইন্ড মি ল্যাটার’ করে রাখি আমরা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এটা শুধু দরকারি তাই নয়, আপনার কম্পিউটারকে সুরক্ষিত রাখার জন্যও এটা ভাল। ওয়ানাক্রাই (ডধহহধ ঈৎু) বেশি দিন আগের কথা নয়। এটা এমন এক ভাইরাস, যা আপনার কম্পিউটারকে হ্যাক করে এমন অবস্থায় রেখে দেবে, দাবি অনুযায়ী টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আপনি কিছু করতে পারবেন না ওই কম্পিউটারে। কিন্তু এই ভাইরাস আসার আগে আগেই উইনডোজ আপডেট দিয়েছিল সমস্ত ব্যবহারকারীর জন্যে, এবং যাঁরা আপডেট করে নিয়েছিলেন, তাঁদের কিন্তু কিচ্ছু হয়নি। আপডেটগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনও নতুন ফিচার বা পুরনো সমস্যা মেটানোর জন্যই, তাই আপনার প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলি আপডেট করে রাখুন ।
ক্লিনফরম্যাট:
ডেস্কটপ ভর্তি আইকন, ফাইল, হার্ড ডিস্ক প্রায় ভর্তি, এ রকম অবস্থায় কম্পিউটার আগের থেকে স্লো চলবে, সেটাই স্বাভাবিক। সব থেকে ভাল, সমস্ত ফাইলের ব্যাকআপ নিন একটা হার্ড ডিস্কে, নিয়ে ক্লিন ফরম্যাট করুন। এটা ঠিক, তার পর সমস্ত সফটওয়্যার ইনস্টল করা, বুকমার্ক তৈরি করা, সব মেইল আইডি ধরে লগ ইন করা, হাজার ঝক্কি। কিন্তু যদি মনে করেন আগের থেকে একটু ভাল ভাবে কম্পিউটারটা চলুক, তা হলে হয় আপনার অগোছালো অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে, অথবা ক্লিন ফরম্যাট। তথ্য সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন