পাইকগাছায় বিধিনিষেধের ৩য় দিনে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন

0
158

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলমান ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতে খুলনার পাইকগাছা পৌরসভায় শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। শনিবার (১২ জুন) কঠোর বিধিনিষেধের ৩য় দিন । এর আগে, বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ বিধিনিষেধ চলবে আগামী ২১ জুন পর্যন্ত। বুধবার (০৯ জুন) এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলায় নোবেল করোনাভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা পর্যায়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও প্রতিরোধসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটির গত ৭ জুনের সভার সিদ্ধান্ত ও সার্বিক তথ্য বিশ্লেষণপূর্বক বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ৬টা থেকে সোমবার (২১ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত পাইকগাছা উপজেলার পৌর সভায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, বিধিনিষেধ চলাকালে পৌরসভার সকল দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। কাঁচা বাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি দোকান সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। নির্ধারিত সময়ের পরে কোন কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান খোলা রাখা যাবে না।

সমস্ত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান, ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে হবে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। হোটেল-রেস্তোরাগুলো শুধুমাত্র পার্সেল/প্যাকেটজাত খাবার সরবরাহ করতে পারবে। সন্ধ্যার পর কোন রাস্তার মোড়ে বা স্থানে একের অধিক কেউ অবস্থান করা বা একসঙ্গে চলাফেরা করা যাবে না। উপজেলার সব ধরনের গণপরিবহন আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

র্উপজেলার বাজার খেঁয়া ঘাট ও দোকানপাট সমূহ জনসমাগম করা যাবেনা উপজেলা সকলকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। কেনাকাটার ক্ষেত্রে সকলকে ন্যূনতম তিন ফিট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে হবে। খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য বলা হলো। অন্যথায় দন্ডবিধি ১৮৬০ ও সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ সংশ্লিষ্ট ধারায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রসঙ্গত, পৌরসভায় নির্দিষ্ট সময়ের পর দোকান পাট খোলা রাখা ও মাস্ক বিহীন চলাফেরা’র অভিযোগে কঠোর বিধিনিষেধের ১ম দিনেই (১০ জুন) ১৩ জনকে আটক করে জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।

বৃহষ্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দীকি পৌর সদরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও জিরোপয়েন্ট থেকে এ সকল ব্যক্তিদের আটক করেন। এ সময় থানা অফিসার ইনচার্য (ওসি) মোঃ এজাজ শফী উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমান আদালতে ঐ সকল ব্যক্তিদের জরিমানা আদায় পূর্বক পরবর্তীতে স্বাস্থ্যবিধি মানা সহ মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ শনিবার কঠোর বিধিনিষেধের ৩য় দিনে বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌরসদরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লোকজনের উপস্থিতি বহুলাংশে কম। নির্দেশনা ব্যতীত প্রায় সকল দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া হোটেল রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও সে গুলোতে বসে খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে না। খাবার পার্সেল করে পাঠানো হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহারিয়ার হক, থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এজাজ শফি, ওসি (অপারেশন) স্বপন রায় সহ সংশ্লিষ্ঠ সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে পৌর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছেন।

খুলনা টাইমস/এমআইআর