দেবহাটার নওয়াপাড়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা আবারো সক্রিয় : প্রশসনের হস্তক্ষেপ কামনা

0
308

দেবহাটা প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এ জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে একটি ছোট্ট উপজেলা দেবহাটা। যে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি ইউনিয়নই বাংলাদেশ ও ভারতের সিমান্তবর্তী ইছামতি নদীর কোল ঘেষা। সিমান্ত এলাকার পারুলিয়া, দেবহাটা সদর এবং নওয়াপাড়া এই ৩টি ইউনিয়নের মানুষের ভারত যাওয়ার জন্য অনেকেরই প্রয়োজন হয়না পার্সপোট-ভিসার। ২৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই ইউনিয়নের আয়তন ৩৬.৩১ বর্গ কি.মি। যেখানে ৩২ হাজার ৮৭০ জন মানুষের মধ্যে ৭০ ভাগই শিক্ষিত। তাই এখানে গড়ে উঠেছে সরকারী, বে-সরকারী প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান। এটি সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন হওয়ায় প্রভাবশালী চোরাকারবরীদের ছত্রছায়ায় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কথিত ঝাপানো পার্সপোটে ভারতে যেয়ে নেশাজাতীয় পন্যসহ অবৈধ মালামাল নিয়ে আসছে অনেকে। এদের রুখতে সীমান্তে নজরদারী বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছে এলাকার সচেতন মহল। এই ইউনিয়নের নাংলা, ছুটিপুর ও নওয়াপাড়া ৩টি গ্রাম পড়েছে সীমান্ত এলাকায়। তার উপর দিয়ে যোগাযোগের জন্য বয়ে গেছে বিভিন্ন পিচ ঢালা রাস্তা। ঠিক সীমান্তের পাশের নাংলা বাজার। আর এই বাজার থেকে একটি রাস্তা নলতা এবং কালিগঞ্জ, একটি দেবহাটা সদরগামী, একটি শাখা দেবহাটা সখিপুর প্রধান সড়কে আর একটি আবার নাংলা বাজার হতে জোয়ারের বিলের ভিতর দিয়ে হাদিপুর পানির কল নামকস্থানে সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়কে মিলিত হয়েছে। এ সড়ক গুলি চোরকারবারীদের এখন নিরাপদ সড়ক। আর এ সকল রুট চোরা কারবারীদের অভয় অরন্য হিসাবে গড়ে উঠেছে। আর এই সুযোগে হাদিপুর, জগন্নাথপুর এলাকার কয়েকজন মাদক কারবারী আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানাযায়। যাদের ভয়াল ছোবলে এখন ইউনিয়নের ২৬ গ্রামসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার যুবসমাজ। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস নামক ঘাতক ব্যাধি থেকে দেশকে রক্ষা করতে যখন পুলিশসহ প্রসাশনের কর্মকর্তারা ব্যস্ত। তখন উপজেলার নাংলা, ছুটিপুর এলাকার কিছু প্রভাবশালীর ছত্র ছায়ায় মাদক ব্যবসায়ী ও চোরা কারবারীরা সক্রীয়। যাদের এক দেশ থেকে আর এক দেশের সীমানা অতিক্রম করতে লাগেনা কোন পার্সপোর্ট ভিসা। অবৈধ ভাবে ইছামতি নদী সাতরীয়ে চলে যায় ভারত সিমান্তে। রাতের আধারে পারাপার করে নিয়ে আসে ঘাতক মরনব্যাধী নেশার সামগ্রী মাদকসহ অবৈধ মালামাল। আর প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এসব রুট ব্যবহার করে নিয়ে যায় বিভিন্ন এলাকায়। একটি সুত্রে জানাযায়, উপজেলার সিমান্তবর্তী দক্ষিন নাংলা গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র মোরসেলিম, একই গ্রামের জমাত আলীর পুত্র জাহিদুল এবং দীন আলীর পুত্র শরিফুল মাল আনার জন্য অবৈধ ভাবে প্রায়ই ভারতে অবস্থান করে। এ জন্য কয়েক জনকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেনটাইনেও থাকতে হয়েছে। এছাড়া একই এলাকার জিয়াদ আলীর পুত্র আদর আলী, আনছার মন্ডলের পুত্র রফিকুল, সাহামোত আলীর পুত্র মাজেদ প্রতি নিয়ত ভারতে যেয়ে অবৈধ মালামাল পারাপার করে বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একজন। আর এ সুযোগে উপজেলার হাদিপুর-জগন্নাথপুর পানির কল নামক স্থানের কয়েকজন মাদক কারবারী আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এ সব সিন্ডিগেট বাড়িতে-বাহিরে ছাতার ভিতর করে এমনকি মোবাইলের যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন যায়গায় পৌছে দেয় মরন ব্যাধী নেশা সামগ্রী মদ, গাজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মালামাল। প্রাপ্ত তর্থে জানাযায়, নওয়াপাড়ার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত আদর আলীর পুত্র একাধিক মামলার আসামী আহছান, একই গ্রামের হোসেন আলীর পুত্র শিমুল হোসেন, ভদুর পুত্র এশার আলী, হাদিপুর গ্রামের মৃত আকবার আলীর পুত্র আবুল শেখ, আবুল শেখের পুত্র সাজিদ। তবে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের কারনে হুমকিতে আছে নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ২৬টি গ্রামসহ উপজেলার যুবসমাজ। তাই এলাকাবাসীর দাবী উল্লেখিত রাস্তা গুলোসহ এসকল ব্যবসায়ীদের উপর নজর দারী বাড়িয়ে যুবসমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য সরোজমিনে গেলে, জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত আদর আলীর পুত্র একাধিক মামলার আসামী আহছানকে দীর্ঘ সময়েও বাড়িতে পাওয়া যায়নি। পরে তার পুত্রে দেখা মিললে তিনি তাদের পিতা আহছানকে অনেক চেষ্টাও ভাল করতে পারছেননা বলে দাবী করে বলেন, আমার পিতা ব্যবসা করেনা, নেশা করে। এসময় অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার পিতা একসাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য এনে কয়েককে দেয়। এদিকে হাদিপুর গ্রামের মৃত আকবার আলীর পুত্র আবুল শেখের দেখা মিললে তিনি আর এ ব্যবসা করছেন না বলে দাবী করেন আর তার পুত্র সাজিদ মোবাইল ফোনে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অন্যদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকদিন পুর্বে এলাকায় পুলিশ তাদের ধরার জন্য গিয়েছিল বলে কয়েকজন জানান। অপরদিকে নওয়াপাড়া বীট অফিসার দেবহাটা থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই নয়ন চৌধুরী এ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীর প্রধান আহছানের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন বলে জানান।