জীবদ্দশায় বা মরণোত্তর দেহ-অঙ্গ দান প্রসঙ্গে ইসলাম যা বলে

0
512

খুলনাটাইমস ধর্মপাতা: মুফতী আবু তাহের মিসবাহ: জীবদ্দশায় বা মরণোত্তর নিজের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অন্যকে দেওয়া জায়েজ আছে কি?
ইসলামি শরিয়তে মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মালিক সে নিজে নয়। এর মালিক আল্লাহ তায়ালা। সে জন্য কারো জন্যই নিজের রক্ত বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রয় করা জায়েজ নয়। রক্ত দান করা যায়, এটা জায়েজ আছে। কিন্তু বিক্রয় করা হারাম। চক্ষু বা অন্যান্য অঙ্গ দান সাধারণত জায়েজ নয়।
কারণ ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুই মানুষের শেষ নয়। এরপরও তার পুনরুত্থান ও পরকালীন জীবন আছে। তা ছাড়া মৃত ব্যক্তির প্রচ্ছন্ন একটি অনুভূতি শক্তিও থাকে। সে আশেপাশের লোকজনকে বুঝতে পারে। শরিয়ত বিরোধী কাজ, বেপর্দা, সীমাতিরিক্ত বিলাপ, কান্নাকাটি তাকে কষ্ট দেয়। জোরে নড়াচড়া, অধিক ঠান্ডা বা অধিক গরম পানি ব্যবহারে তার কষ্ট হয়। জানাজা নিয়ে বেশি ছুটাছুটি, ঝাঁকুনি ও আঘাত সে অনুভব করে। কবর থেকে লোকজন চলে যাওয়ার সময় সে পায়ের আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পায়।
এমন একজন মৃত ব্যক্তির সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ যদি সে দান করে যায় আর মৃত্যুর পরই ছয় ঘন্টার মধ্যে ডাক্তার এসে তার চোখ খুলে নেয়, হার্ট খুলে নেয়, লিভার খুলে নেয়, তাতে মৃত ব্যক্তির কী পরিমাণ কষ্ট হবে, তার বলার অপেক্ষা রাখেনা। উন্নত বিশ্বে এখন শরীরের ভেতর বাহিরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গই ব্যবহার যোগ্য।
এমতাবস্থায় শরীরের সব অঙ্গ খুলে নিয়ে গেলে দাফন করা হবে কাকে? এ অবস্থাটি মৃত ব্যক্তির জন্য কী পরিমাণ কষ্টের হবে? আর তার স্ত্রী ছেলে কন্যা ও সকল আত্মীয়ের জন্য কতটুকু বেদনার হবে তা ভেবে দেখা দরকার। এ জন্যই শরিয়ত এসব দান সমর্থন করে না। একান্ত ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো মাসআলা যদি সামনে আসে তা হলে সবদিক বিবেচনা করে মুফতিগণ সুনির্দিষ্ট ফতুয়া দিতে পারেন।
সূত্র: সূরা বাকারাহ ২৬০ আয়াত, সূরা বনী ইসরাইল ৪৯,৯৮। জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামি ফিকহ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।