ঘুষ লেনদেনের ঝুঁকি সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ বাংলাদেশ

0
326

খুলনাটাইমস: ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঘুষবিরোধী একটি বৈশ্বিক সংগঠনের তৈরি ‘ট্রেস ব্রাইবারি রিস্ক ম্যাট্রিক্স’ শিরোনামে হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রধানত চারটি ক্ষেত্রে ভাল-মন্দ বিবেচনায় ১-১০০ এর মধ্যে স্কোরের ভিত্তিতে ঘুষের ঝুঁকি পরিমাপের এই সূচকে ২০০টি দেশের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত এই সূচকের ২০১৯ সালের সংস্করণে ঘুষের ঝুঁকির ক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে দুই পয়েন্ট বেড়ে ৭২ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ ১৭৮তম অবস্থানে আছে। এর অর্থ হলো- এদেশে ঘুষের ঝুঁকি আগের চেয়ে বেড়েছে। বাংলাদেশের এই স্কোর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, যেখানে ভারত ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে ৭৮তম এবং পাকিস্তান ৬২ পয়েন্ট নিয়ে ১৫৩তম অবস্থানে আছে। ঘুষের ঝুঁকির সূচকে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচটি দেশ হলো- নিউ জিল্যান্ড, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। আর সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ হলো- ভেনেজুয়েলা, ইয়েমেন, নর্থ কোরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সোমালিয়া। বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ঘুষের ঝুঁকির বিষয়ে ব্যবসায়ী মহলে আরও বেশি নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রয়োজন মেটাতে ২০১৪ সালে প্রথম এই সূচক প্রকাশ করা হয়। কোনো বিশেষ দেশে কোম্পানির কাছে ঘুষ চাওয়া হবে কিনা বা ঘুষের সম্মুখীন হতে হবে কিনা তার পরিমাপ করে এই সূচক। বিনামূলে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এই সূচক বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ঘুষের প্রসার ঘটায় এমন কতগুলো পরিস্থিতি বুঝতে কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করে। এগুলো হলো- বেসরকারি খাতের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগের ধরণ ও বিস্তৃতি; ঘুষের প্রতি সামাজিক মনোভাব ও তা নিষিদ্ধে সরকারের ক্ষমতা; সরকারের স্বচ্ছতা; এবং দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ ও প্রকাশে সুশীল সমাজের সক্ষমতা।
দানশীলতায় বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ভারত: দানশীলতায় ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দশম ওয়ার্ল্ড গিভিং ইনডেক্স অনুসারে, ১২৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮১তম। এই তালিকায় প্রতিবেশী ভারত রয়েছে ৮২তম স্থানে। অক্টোবরে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন তৈরির জন্য গত ৯ বছর ধরে ১২৮টি দেশের ১৩ লাখ মানুষের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। গ্যালাপ ওয়ার্ল্ড পুলের সহযোগিতায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক চ্যারিটিজ এইড ফাউন্ডেশন (সিএএফ)। এতে উত্তরদাতাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, গত এক মাসের মধ্যে কোনও অপরিচিতকে সহযোগিতা করা, দাতব্য কাজে অর্থ দান বা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন কিনা। সূচকের স্কোর অনুসারে, বাংলাদেশে অর্ধেক মানুষ অপরিচিতকে সহযোগিতা করেছেন, ১৬ শতাংশ দাতব্য কাজে অর্থ দিয়েছেন এবং স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন ১১ শতাংশ মানুষ। সূচকে বাংলাদেশের সামগ্রিক স্কোর ২৬ শতাংশ। এই স্কোর তালিকার শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের (৫৮ শতাংশ) অর্ধেক। মাত্র ১৬ শতাংশ স্কোর নিয়ে তালিকার তলানিতে রয়েছে চীন। তালিকায় উন্নতি করা দশটি দেশের মধ্যে এশিয়ার ৫টি দেশ রয়েছে। তবে এর আগে তালিকার শীর্ষে থাকা মিয়ানমারের একধাপ অবনতি হয়েছে। তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ। বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান থেকে পিছিয়ে আছে। তালিকার শীর্ষ ৫টি দানশীল দেশ হলো−যুক্তরাষ্ট্র, মিয়ানমার, নিউ জিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ড। আর দানশীলতায় পিছিয়ে থাকা ৫টি দেশ হলো−ফিলিস্তিন, সার্বিয়া, ইয়েমেন, গ্রিস ও চীন।