খুলনার ৫ থানায় একরাতে বিএনপি’র পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা

0
452

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনায় একরাতে ৫ থানায় ৫ মামলায় প্রায় পাঁচ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, পুলিশের কাজে বাধা ও হামলা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার ষড়যন্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা করেছে।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে মহানগরীর সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এসব মামলায় মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নেতাকর্মীদের হয়রানি করার লক্ষ্যে মিথ্যা, গায়েবি ও ভৌতিক মামলা দেওয়া হয়েছে।
মহানগরীর ৫টি থানা ও এজাহার থেকে জানা গেছে, মহানগরীর সদর থানায় দায়ের করা মামলার বাদী এসআই দেলোয়ার হোসেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ৪ অক্টোবর বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে পিকচার প্যালেস মোড়ে আসামিরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ, ইজিবাইক ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলা করেন।
এই মামলায় মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু, ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজির উদ্দিন আহমেদ নান্নু, সাধারণ সম্পাদক মোল্লা ফরিদ আহমেদ, মহানগর বিএনপির সহ-প্রকাশনা সম্পাদক হাসানুর রশিদ মিরাজ, সদর থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি যুবদল সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু বলেন, বৃহস্পতিবার শহরের কোথাও কোন মিছিল হয়নি, ভাঙচুর হয়নি। সম্পূর্ণ কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে এই মামলা করা হয়েছে। পিকচার প্যালেস মোড়ে পুলিশের একাধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যামেরা আছে। সেগুলো দেখলেই পুলিশের মিথ্যা গল্প ফাঁস হয়ে যাবে। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীরের দাবি, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলেই মামলা হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, গত ৩ অক্টোবর রাত ৯টা ৪০ মিনিটের সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার একটি কেপিআই ধ্বংসের চেষ্টা ও সহায়তায় অভিযোগে ১৬ জনের রিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী সোনাডাঙ্গা থানার এসআই রণজিত কুমার বিশ্বাস।
এই মামলায় মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম তুহিন, বর্তমান সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু, ছাত্রদলের মহানগর সভাপতি শরিফুল ইসলাম বাবু, সোনাডাঙ্গা থানার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদসহ ১৬ জনের নাম রয়েছে। অজ্ঞাত আসামি আরও ১৫০ জন।
দৌলতপুর থানায় দায়ের করা মামলার বাদী আসাদুজ্জামান নূর। এই মামলায় মহানগর বিএনপির ১ম যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, দৌলতপুর থানা সভাপতি শেখ মুশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক নান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ আহসান তোতন, বিএল কলেজ ছাত্রদল সভাপতি রিয়াজ শাহেদসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ১৪০/১৫০ জনকে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৫টায় দৌলতপুর শশীভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মারামারি, যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা এবং বাধা দিতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা করেছেন আসামিরা। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির ১ম যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন ও আন্দোলনকে সামনে রেখেই এসব গায়েবি মামলা করছে পুলিশ। এর সঙ্গে বিএনপির কোন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। কেবল নেতা-কর্মীদের হয়রানি করার লক্ষ্যে এসব মামলা করা হয়েছে। দলের নেতা-কর্মীদের নামে গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
খানজাহান আলী থানায় দায়ের করা মামলার বাদী এসআই বিধান চন্দ্র্র সানা। এই মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ৬০/৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৪ অক্টোবর বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে ফুলবাড়িগেট সোহাগ কাউন্টারের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল করে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
খালিশপুর থানায় দায়ের করা মামলার বাদী এসআই হাতিম আলী। খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৮/৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০/৫০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।