কড়া সুদের ঋন থেকে বাঁচতে সরকারের সহায়তা চান মোরেলগঞ্জের মৎসজীবিরা

0
119
মোরেলগঞ্জের জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির মহাকর্মযজ্ঞ

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি, মোরেলগঞ্জের জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির মহাকর্মযজ্ঞ

মেজবাহ ফাহাদ-মোরেলগঞ্জ থেকে:
শীত মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের জেলে পল্লিগুলোতে নতুন ট্রলার তৈরি ও মেরামতের ধুম পড়েছে। দিনরাত কাজ আর ব্যস্ততায় মৎসপাড়ায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার সোনাখালী, বহরবুনিয়া, বলইবুনিয়া, বারইখালী খাওলিয়া,হোগলাবুনিয়া সহ কয়েকটি ইউনিয়নের জেলে পল্লিতে নতুন ও পুরোনো ট্রলার তৈরির কাজে ধুম পড়েছে। নৌকা তৈরিতে কাঠমিস্ত্রি ব্যস্ত সময় পার করছেন।
দিনরাত কাঠ বানানো, তক্তা ও গুঁড়া বানানো, কাঠ মসৃণ করা, তক্তা জোড়া লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠ মিস্ত্রিরা। মিস্ত্রিদের হাতুড় বাটালের আওয়াজে মুখরিত হচ্ছে মালোপাড়া।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) উপজেলার বারইখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নতুন ট্রলার তৈরির কাজ চলছে ও পুরোনো ট্রলারগুলো মেরামত করার কাজ চলছে পুরোদমে। মিস্ত্রীরা দিনরাত ট্রলার তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ট্রলার তৈরি করতে বিভিন্ন স্থান থেকে মিস্ত্রী আনতে হয়। ট্রলার তৈরিতে মিস্ত্রীদের থাকা-খাওয়া বাদে প্রতিটি নতুন ট্রলার তৈরি বাবদ মজুরি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

মোরেলগঞ্জের জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির মহাকর্মযজ্ঞ

৫০-৬০ ফুট লম্বা ১৭ ফুট চওড়া একটি ট্রলার তৈরি করতে প্রায় ৫শ সেফটি কাঠ লাগছে। সব কাট দিয়ে ট্রলার তৈরি হয় না। এলাকায় পাওয়া যায় এমন চম্বল, মেহগনি, কাঠ দিয়ে তারা ট্রলার তৈরি করছে। নতুন ট্রলার তৈরির পর তাতে রং করতে প্রায় ২শ কেজি আলকাতরা লাগে। পুরোনো ট্রলার মেরামত করতে ৩০-৭০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। একটি নতুন ট্রলারে প্রায় ৩ মণ পেরেক, ১শ কেজি পাতাম সুতা প্রয়োজন হয়। ট্রলার তৈরি পর ইঞ্জিন বসাতে প্রায় লাখ টাকা খরচ হচ্ছে।পানগুছি নদের দুই পাশে এই ট্রলার তৈরি ও মেরামতের কাজ চলছে।
বারইখালী ইউনিয়নের একজন মৎসজীবি বলেন সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে ১টি ট্রলার তৈরি করছে। নতুন ট্রলার তৈরি করতে সর্বমোট খরচ পড়ছে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। মহাজনের কাছ থেকে কড়া সুদে টাকা নিয়েছে, সাগরে মাছ ধরে তা বিক্রি করে টাকা শোধ করবে বলে তিনি জানান।
মোরেলগঞ্জের প্রান্তিক জেলেরা মাছ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে ভয়ংকর, বিক্ষুব্ধ উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে জাল ফেলে মাছ ধরতে হয়। এই উপজেলার কয়েকশত পরিবারের আয়ের উৎস্য সমুদ্রে মাছ ধরা। এত বিপদের সঙ্গে লড়াই করে তাদের জীবিকা অর্জন করতে হয়।এই নিয়ে এখানকার মৎসজীবিদের সাগরযাত্রার মহাকর্মযজ্ঞের প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মৎসজীবিদের মুল আয়ের উৎস গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া,সে লক্ষে তারা প্রতি বছর জীবনের ঝুকি নিয়ে গভীর সমুদ্রে শুটকি আহরণ করতে যায়, সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া এসব জেলেরা যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোন সুবিধা নিতে চায় তাহলে তারা লিখিত অবেদন করলে আমি সেটা উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সহ আর্থিক সহায়তা দেয়ার চেস্টা করবো।