আবারও রাশফোর্ডের শেষ মুহূর্তের গোল, আবারও পিএসজির হার

0
170

টাইমস স্পোর্টস:
মার্কোস রাশফোর্ডে আরো একটি শেষ মুহূর্তের গোলে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শুভ সূচনা করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পার্ক ডি প্রিন্সেসে এই ম্যাচের মাধ্যমে ইউরোপের জায়ান্ট দুই দল এবারের ইউরোপিয়ান সর্বোচ্চ আসর শুরু করলো। ২০১৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র ম্যাচে এই মাঠেই ইংলিশ এই স্ট্রাইকারের শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে দারুন এক জয় নিশ্চিত করেছিল ইউনাইটেড। ৮৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ওলে গানার সুলশারের দল গ্রুপ-এইচ’এ পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। দুই বছর আগে ঐ ম্যাচটির কথা এখনো মনে আছে রাশফোর্ডের। সেই আত্মবিশ^াস থেকেই সম্ভবত এই স্ট্রাইকার ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘এই ম্যাচে উভয় দলেরই জয়ের সুযোগ ছিল। একজন স্ট্রাইকার হিসেবে ম্যাচের শেষে যখন গোল আসে সেটা অনেকটাই নিজস্ব একটা মানসিক শক্তির ব্যপার। ঐ মুহূর্তে সম্ভবত একটাই সুযোগ আসে এবং সেটার থেকেই নিজের সেরাটা দিয়ে সুযোগটি আদায় করে নিতে হবে।’ প্যারিসের দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামে ইউনাইটেড ২৩ মিনিটেই অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেসের পেনাল্টিতে এগিয়ে গিয়েছিল। যদিও তাদের অধিনায়ক প্রথম শটটি মিস করেছিলেন। কিন্ত পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস অফলাইনে থাকায় রেফারী আবারো শটের নির্দেশ দেন। এবার অবশ্য আর কোন ভুল করেননি ফার্নান্দেস। কিন্ত ৫৫ মিনিটে নেইমারের কর্ণার থেকে এ্যাš’নি মার্শালের আত্মঘাতি গোলে পিএসজি ম্যাচে সমতা ফেরায়। ইউনাইটেডের কল্যাণেফেরানো এই সমতা ছাড়া পুরো ম্যাচে নিজেদের মাঠে পিএসজি কার্যত ছিল একেবারেই নিষ্ক্রিয়। ২০১৯ সালের মার্চে ইউনাইটেডের ম্যানেজার হিসেবে স্থায়ী চুক্তির পর দারুন ঐ জয়ের পর কালকের জয়টিও সুলশারের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। একইসাথে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বিরতির ঠিক আগে প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত হবার পর এই জয়ের মাধ্যমে ইউনাইটেড দারুনভাবে জয়ের ধারায় ফিরলো।
সুলশার বলেন, ‘এটা অন্যরকম এক অনুভূতি। গ্রুপ পর্বের শুরুটা ভাল হয়েছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। দারুন একটি দলের বিপক্ষে জয়টা আমাদের আত্মবিশ^াসী করে তুলবে। সর্বশেষ ম্যাচটা ছিল নক আউট পর্বের। তখনকার পরিস্থিতিও ভিন্ন ছিল। এখন এখানে কোন সমর্থক নেই, আমাদের সাথে এই জয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করার মত কেউ নেই। তারপরেও খেলোয়াড়রা আজ অসাধারণ খেলেছে।’ আরো একবার মূল একাদশ থেকে পল পগবাকে বাইরে রেখেছিলেন সুলশার। শনিবার প্রিমিয়ার লিগে নিউক্যাসলের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ের ম্যাচটিতেও বদলী বেঞ্চে ছিলেন এই ফরাসী তারকা। তার পরিবর্তে তিনজন সেন্টার-ব্যাক নিয়েই খেলতে বেশী পছন্দ করেছে সুলশার। হ্যারি ম্যাগুয়েরের অনুপস্থিতিতে ১০ মাস পর প্রথমবারের মত মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন ইংলিশ ডিফেন্ডার এ্যাক্সেল তুয়ানজেবে। অন্যদিকে পোর্তো থেকে আসা ব্রাজিলিয়ান উইং-ব্যাক এ্যালেক্স টেলেসের মঙ্গলবার ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছে। দর্শকবিহীন মাঠে সফরকারীদের যতটা না ম্যাচের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়েছে তার থেকেও বেশী আগোছালো ছিল পিএসজি। ফ্রান্সের রাজধানীতে সম্প্রতি করোনাভাইরাস আবারো নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্ধ্যা থেকে কার্ফিউ চালু করা হয়েছে। যে কারণে স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে শুরু হওয়া ম্যাচটিতে দর্শকশুন্যতা ছাড়াও এই বিষয়টিও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মাত্র দুই মাস আগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ফাইনালে পরাজিত হয়ে শিরোপা হাতে ধরা হয়নি পিএসজি’র। আর সে কারনেই নতুন মৌসুমে প্রথম থেকেই নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে মঙ্গলবার মাঠে নেমেছিল থমাস টাচেলের শিষ্যরা। টাচেল বলেন, ‘ম্যাচে কারো মধ্যে কোন আগ্রাসন ছিল না। সত্যি কথা বলতে কি এমনটা আমি আশা করিনি। আমরা জানি একটি ভিন্ন গ্রুপে আমরা পড়েছি, আর সে কারনেই এখন এটা আমাদের কাছে আরো বেশী কঠিন হয়ে গেল।’ মার্শালকে ফাউলের অপরাধে আবদু ডিয়ালোর বিপক্ষে আদায় করা পেনাল্টি থেকে ২৩ মিনিটে ইউনাইটেড এগিয়ে যায়। নিউক্যাসলে পেনাল্টি মিস করার পর গতকাল আর ভুল করেননি ফার্নান্দেস। যদিও তার প্রথম শটটি রুখে দিয়েছিল নাভাস। তার আগে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া পিএসজিকে এগিয়ে দেবার সুযোগ নষ্ট করেন। বিরতির পর ম্যাচে ফিরে আসার লক্ষ্যে টাচেল কৌশল পরিবর্তন করে মোয়েস কিনকে মাঠে নামান। কিলিয়ান এমবাপ্পের একটি শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন ডেভিড ডি গিয়া। ঐ সময় নেইমারের কর্ণার ক্লিয়ার করতে গিয়ে মার্শাল বল জালে জড়ালে সমতায় ফিরে পিএসজি। ৬৭ মিনিটে টেলাসের পরিবর্তে পগবা মাঠে নামেন। ৮৭ মিনিটে গোলের আগে রাশফোর্ডকে দুইবার হতাশ করেন নাভাস। আগামী সপ্তাহে ঘরের মাঠে পরবর্তী ম্যাচে আরবি লিপজিগকে আতিথ্য দিবে ইউনাইটেড। মঙ্গলবার গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইস্তাম্বুল বেসাকশেহিরকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে লিপজিগ।