খুলনার প্রতারক নারী মনি’র বিরুদ্ধে ২য় স্বামীর লোমহর্ষক অভিযোগ

0
511

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফরিদা ইয়াসমিন মনি (৪৩)। খুলনার করিমনগর মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মৃতঃ আব্দুল ওহাব খাঁনের মেয়ে। এছাড়াও তিনি খুলনার বসুপাড়া কবর খানা রোড, টাওয়ার ওয়ালা গলির ৫ম তলা বাড়ির ভাড়াটিয়া, দেবেনবাবু রোড এলাকা, ঢাকার রমনা থানাধিন মধুবাগ গলির বাড়ী নং ৪৫৯ (স্টার লজ), ঢাকার মুগদা থানার সবুজবাগ দক্ষিণ মান্ডা, চাঁন মিয়া গলির কাওসার আহম্মেদের ভাড়া বাসাসহ আরও একাধিক ঠিকানা ব্যবহার করেন। ২২বছর আগে খুলনার ময়লাপোতা মোড় এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী জনৈক হায়দার আলীর সাথে বিয়ে হয়। ওই ঘরে মীম নামের তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। প্রবাসী স্বামীর পাঠানো লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত ৬বছর আগে খুলনার দাকোপ উপজেলার পান খালী পদ্দেরগঞ্জ সাহেবের আবাদ এলাকার বিনয় কৃষ্ণ গাইন’র পুত্র নিউটন গাইনকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। ২০১৭ সাল নাগাদ নিউটন গাইনের কাছে থাকা ৪৫লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকেও ঢাকার বাসা থেকে বের করে দেন ফরিদা ইয়াসমিন। এরপরেও ক্ষ্যান্ত হয়নি তিনি ওই পরিবারের সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে ৮/৯টি মামলা দায়ের করেন। সংখ্যালঘু ওই পরিবারের সদস্যরা ফরিদা ইয়াসমিন মনি’র নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভারতের কোলকাতায় চলে যান। ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর নিউটন গাইন খুলনার জেলা প্রশাসক বরাবর ফরিদা ইয়াসমিন মনি’র বিরুদ্ধে লোমহর্ষক একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের ওই কপির অনুলিপি
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, মহা-পুলিশ পরিদর্শক, অতি: মহা পুলিশ পরিদর্শক, (সিআইডি),
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার, র‌্যাব-৬’র অধিনায়ক (সিইও), পুলিশ সুপার, খুলনা জেলা, সিআইডি, খুলনা জেলা ও মেট্রো কার্যালয়, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয় খুলনা জেলা ও মহানগর এবং সভাপতি/সম্পাদক খুলনা প্রেস ক্লাব বরাবর দাখিল করেন।
নিউটন গাইনের অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের বিচার বিভাগ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টিকারী প্রতারক চক্রের হোতা, ভারত থেকে খুলনা ও ঢাকায় মাদকদ্রব্য, অবৈধ ওষুধ বাণিজ্যের ডিলার ফরিদা ইয়াসমিন মনি তাদেও পরিবারটিকে মামলায় জর্জরিত করে রেখেছেন। ২০১৪ সাল থেকে খুলনার শহরে ব্যবসা বানিজ্য করতো নিউটন। ২০১৫ সালের প্রথম দিকে ফরিদা ইয়াসমিন মনির সাথে তার পরিচয় হয়। তার পুর্বের স্বামীর সাথে ডিভোর্স হওয়ায় তার মেয়ে মীম (১৫) কে নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন।
নিউটনের অভিযোগে আরও বলেন, আমাকে কৌশলে তার বাসায় নিয়ে ফাঁদে ফেলে তার অন্যান্য সহযোগিদের সাহায্যে তার সাথে আমার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারন করেন। ফরিদা ইয়াসমিন মনি আমাকে প্রতিনিয়ত বøাক মেইল করতে শুরু করেন। তাকে বিয়ে করতে হবে বলেও চাঁপ দিতে থাকেন। সামাজিক অবস্তান মানসম্মানের কথা বিবেচনা করে আমার বয়সের থেকে ১০/১২ বছরের বড় ফরিদা ইয়াসমিন মনিকে বিয়ে করতে বাধ্য হই। এরপর খুলনা থেকে ঢাকায় গিয়ে মুগদা থানার সবুজবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করি। আমার ব্যবসা বানিজ্যের সকল টাকা পয়সা আনুমানিক ৪৫,০০০,০০(পয়তাল্লিশ লাখ) টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমাকে বাসায় রেখে ২/৩দিন ধরে বন্ধু বান্ধবের সাথে বেড়াতে চলে যেতেন। তাছাড়া বাসায় বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য ও অবৈধ কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। ব্যবসার টাকা পয়সা হারিয়ে ঢাকায় একটি ছোট চাকুরী করে জীবীকা নির্বাহ করতে হয়েছে। আমি তার এসকল বিষয়ে প্রতিবাদ ও আমার টাকা ফেরত চাইলে তিনি প্রথমে আমাকে বিভিন্ন মানুষ দিয়ে ভয়ভীতি দিতে শুরু করেন। আমি হিন্দু পরিবারের সন্তান, ওই সকল মানুষের হুমকিতে ভয় পেয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আমি খুলনায় বাবা-মায়ের কাছে চলে আসি। আমার ব্যবসায়িক টাকা পয়সা উদ্ধারের চেষ্টা করতে আত্বীয় স্বনদের সাথে আলোচনা করি। ফরিদা ইয়াসমিন মনি এবিষয় জানতে পেরে খুলনায় এসে ১২/১০/২০১৭ তারিখে আমিসহ আমার পরিবারের বাকী সদস্যদের নামে মেট্রোপলিটন আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন, মামলাটি সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে রেকর্ড হয় (নং-১৪) তারিখ ১২/১০/২০১৭। মামলায় বাদি ফরিদা ইয়াসমিন মনি ওই মামলায় উল্লেখ করেছেন তার এবং আমার বিয়ের পর একটি পুত্র সন্তান হয়েছে যার নাম (মৌসুম গাইন নীল) ওই শিশুপুত্রকে আমার অপহরণ করে নিয়ে এসেছি মর্মে তিনি মামলা করেছেন। কিন্তু তার সাথে থাকাকালীন সময়ে তিনি গর্ভবতি বা এধরনের কোন সন্তান আমার জানা মতে জন্ম গ্রহন করেনি। তিনি ৮/৯ মাসের একটি শিশুর ছবি ও তার নাম (মৌসুম গাইন নীল) বলে সব যায়গায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর তিনি মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলে আমার বাবার কাছ থেকে ৩,০০০,০০ (তিন লাখ টাকা) নিয়েছেন। সে আমাদের কাছে আরও টাকা চেয়ে না পেয়ে ঢাকা ও খুলনার বিভিন্ন থানা, আদালতে মামলা, অভিযোগ, জিডি করতে শুরু করেন। তার মধ্যে, ঢাকার ডেমরা থানার জিডি নং ১২৪৯, তারিখ ২৪/০৪/২০১৭, ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা নং ১২৩/২০১৭, কেএমপি খুলনা সদর থানার জিডি নং ১৩৪, তারিখ ০২/০৮/২০১৭, কেএমপি সোনাডাঙ্গা মডেল থানার জিডি নং ৭০, তারিখ ০২/১২/২০১৭, ঢাকার নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ মামলা নং ২৫৯/২০১৭, ঢাকার ডেমরা থানার মামলা নং ৩৭, তারিখ ২৪/০২/২০১৮, তার দেওয়া মিথ্যা মামলায় আমার ছোট ভাই রিপন গাইন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাবাসে থাকেন। আমরা পুরো পরিবার পৈত্রিক বাড়ি ঘর ফেলে তার ভয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে চলে আসি। তিনি ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে একাধিকবার ভারতে এসে আমার সাথে দেখা ও কথা বলেছেন। আমরা একই সাথে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে আবাসিক হোটেলে, আমার কোলকাতার আত্বীয় বাড়িতে ছিলাম। মিথ্যা মামলা তুলে নেয়ার বিষয়ে তাকে অনুরোধ করলে ফরিদা ইয়াসমিন মনি বলেন ” তোমরা তো আর দেশে যাচ্ছো না, পুলিশ আর জজ রা একটু কষ্ট করে খুজে বেড়াক”। ইতো মধ্যে মামলাবাজ ফরিদা ইয়াসমিন মনির অভিযোগ গুলো মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা (পুলিশ পরিদর্শক) আবু মুছা খন্দকার ও (পুলিশ পরিদর্শক) মোঃ হানিফ পৃথকভাবে ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছেন। মামলা গুলোর ভিকটিম (মৌসুম গাইন নীল) নামে কোন সন্তান জন্ম গ্রহন করেনি, কিন্তু সন্তানের নাম ব্যবহার ও অন্য একটি শিশুর ছবিকে সেই নামের সাথে মিলিয়ে সুচতুরতার সাথে মামলা করে বাংলাদেশ সরকারের বিচার বিভাগ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে বিভ্রান্তীর মধ্যে রাখা ফরিদা ইয়াসমিন মনি’র বিরুদ্ধে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করছি। যাতে করে আমরা পরিবারসহ জন্মস্থান বাংলাদেশের খুলনার দাকোপে ফিরে আসতে পারি।