বঙ্গবন্ধু কখনো লোভের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি : কেসিসি মেয়র

0
399

খবর বিজ্ঞপ্তি:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষির্কী পালন উপলক্ষে শুক্রবার বিকেল ৪ টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগে এক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলেন পৃথিবীতে অনেক রাষ্ট্র নায়ক আছেন, অনেক রাজনীতিক আছেন। কিš‘ ব্যতিক্রম শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি বোঝার বয়স হওয়ার পর থেকে আমৃত্যু এই বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি তাঁর মননে লালিত বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়েই ধীরে ধীরে এগিয়েছেন। জেল, জুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছেন। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের পর থেকে পরবর্তী সকল আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন তিনি। ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমেই তিনি তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাস্তবতার দিকে দেশ ও জাতির মননকে এগিয়ে নিয়ে যান। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারণেই দেশ ও জাতি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব লাভ করে। তিনি যদি কোনো কিছুর সাথে আপোস করতেন বা লোভের কাছে আত্মসমর্পন করতেন তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারতো না। তিনি কখনো লোভের কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। পনেরই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে ফেলার জন্য, খুনিদের বিচার যাতে না হয় এমন বহু প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি তাঁর উত্তরসুরী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা-কর্মীদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়। কিš‘ সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তিনি বলেন জিয়াউর রহমানই পনেরই আগস্টের ঘটনার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী, অন্যতম নেপথ্য নায়ক। তিনিই এর সাথে ওৎপ্রতভাবে জড়িত। তা না হলে একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে কীভাবে তিনি পনেরই আগস্টের খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন। খুনিদের কীভাবে দেশ-বিদেশে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেন, প্রতিষ্ঠিত করেন? তিনি আরও বলেন ইতিহাসের সত্য একের পর এক বের হয়ে আসছে। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজসহ সবাইকে আহবান জানান।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। তিনি বলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পটভ‚মি তৈরির দীর্ঘ প্রেক্ষাপট ও প্রক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং বাঙালি জাতি ও বাংলার প্রতি তাঁর অবদান আমরা দেখতে পাই। এই প্রেক্ষাপট একদিনে সৃষ্টি হয়নি। বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন নিভৃত পল্লী গ্রামে। প্রকৃতির সাথে, সাধারণ মানুষের সাথে তিনি বেড়ে উঠেছেন। সাধারণ মানুষের দুর্দশা, কষ্ট তাঁকে স্পর্শ করেছে। বাঙালি জাতির মুক্তি এবং একটি স্বাধীন দেশই ছিলো তাঁর জীবনের আরধ্য। অবিভক্ত ভারতের ইতিহাসে, বিশ্বের ইতিহাসে আমরা অনেক রাজনৈতিক নেতার নাম জানি, শুনি। কিš‘ বঙ্গবন্ধুর মতো সাধারণ মানুয়ের সাথে সম্পৃক্ততা আর করো ছিলো না। তাঁকে নিয়ে রচিত হয়েছে হাজার হাজার কবিতা, গান, লেখনি। তিনি মানুষের মনিকোঠায় ¯’ান করে নিয়ে ছিলেন। আজও তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন, নিঃস্বার্থ নেতা কর্মীদের হৃদয় জুড়ে রয়েছেন। সারা পৃথিবীতে তাঁর নাম সম্মানে সাথে, শ্রদ্ধার সাথে উ”চারিত হয়। তাই বঙ্গবন্ধুকে এই দেশ ও জাতির মনন থেকে মুছে ফেলা যাবে না। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. আশীষ কুমার দাস। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপ¯ি’ত ছিলেন।