আদালত থেকে ফেরার পথে শতাধিক গাড়ি ভাঙলো বিএনপিকর্মীরা

0
565

টাইমস ডেস্ক :
রাজধানীর সচিবালয়ের পাশের আবদুল গণি সড়ক ও বঙ্গবাজারের সামনে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় এক ট্রাফিক সার্জেন্টের একটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয় তারা। ঘটনাটি মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) পৌনে ৩টার। এ সময় কমপক্ষে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (রমনা) মারুফ হোসেন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আজ দুপুরে সচিবালয়ের সামনে দুর্বৃত্তরা কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।’
জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আত্মসমর্পণের জন্য মঙ্গলবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে যান। এ সময় আদালত চত্বরে বিপুলসংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন আদালত থেকে ফেরার পর নেতাকর্মীরাও ফিরতে থাকে। তাদের একটি দল জিরো পয়েন্ট ধরে আবদুল গণি সড়কে আসার সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। এরপরেই গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সচিবালয়ের সামন দিয়ে বিএনপি কর্মীরা শিক্ষা ভবনের দিকের রাস্তায় আসার পথে হঠাৎ পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়। একদল বঙ্গবাজারের দিকে ও আরেক দল উল্টো ঘুরে জিরো পয়েন্টের দিকে পালিয়ে যায়। যাওয়ার পথে তারা ‘ভাঙ গাড়ি’ বলে চিৎকার করতে করতে চলমান ও রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা সরকারি-বেসরকারি শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে। এসব গাড়ির সামনের ও পেছনের কাচগুলো ভাঙচুর করেছে তারা।

ঘটনাস্থল ঘুরে জানা গেছে, গাড়ি ভাঙচুর ছাড়াও বঙ্গবাজার এলাকায় একটি সরকারি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি পুলিশ সার্জেন্ট মেহেদির। তিনি বলেন, “বঙ্গবাজার মোড়ে দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলাম। হঠাৎ দেখি হাইকোর্ট মোড় থেকে কয়েকশ’ লোক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে এদিকে আসছে। তারা রাস্তায় চলন্ত গাড়ি ভাঙচুর করছিল।”

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশলী আনিস খানের গাড়িচালক আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, “আমি ড্রাইভিং সিটে ছিলাম। হঠাৎ কয়েকশ’ লোক রাস্তা দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছিল আর ‘গাড়ি ভাঙ, ভাঙ গাড়ি’ বলে চিৎকার করছিল। একইসঙ্গে তারা ইট-পাটকেল দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করতে করতে যাচ্ছিল। এক তরুণ আমার গাড়ির দরজায়ও লাথি দেয়।”

মৌলভীবাজার পৌরসভা মেয়রের গাড়িচালক মো. সালাম বলেন, ‘মেয়র সাহেব সচিবালয়ে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। আমি খাদ্য ভবনের সামনের রাস্তায় গাড়ি পার্ক করেছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই একদল লোক এসে গাড়ির কাচগুলো ভেঙে দিয়ে গেলো।’

দুর্বৃত্তরা সামনে যেসব গাড়ি পেয়েছে প্রায় প্রতিটিরই কাচ ভেঙে দিয়ে গেছে বলে জানান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত পরিচালক নাসিরুল আহম্মেদের গাড়িচালক সালাম। তার কথায়, ‘রাস্তায় চলন্ত গাড়ির পেছনেও ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মেরেছে। এ সময় অন্তত শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।’

পল্লী বিদ্যুতের প্রকৌশলী সরকার আজমের গাড়িচালক আমির হোসেন বলেন, ‘গাড়ি পার্ক করে খেতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ শুনি আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। দৌড়ে গাড়ির কাছে এসে দেখি, দুর্বৃত্তরা গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে দিয়ে গেছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষাভবন থেকে সচিবালয় পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের গাড়ি পার্কিং করা থাকে। দুর্বৃত্তরা সেগুলোই বেশি ভেঙেছে।