অথচ তাঁর ফ্রান্স দলেই থাকার কথা ছিল না

0
488

স্পোর্টস ডেস্কঃ

অনেকের কাছেই ফ্রান্সের বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা নাকি খুব বড় কোনো চমক নয়। দিদিয়ের দেশমের দল এবার প্রথম থেকেই ছিল ফেবারিটের তালিকায়। আতোয়াঁন গ্রিজমান, পল পগবা, কিলিয়ান এমবাপ্পে, হুগো লরিসদের দল অনেক দূর যাবে—এমনটাই ভেবেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু এই ফ্রান্স দলেরই বিস্ময় হিসেবে নিজেকে এবার চিনিয়েছেন বেনজামিন পাভার। ২২ বছর বয়সী এই ফরাসি ফুটবলার আলো ছড়িয়েছেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে। দুর্দান্ত খেলে তিনি এখন অপেক্ষায় বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার। অথচ, এই পাভারের নাকি বিশ্বকাপে আসারই কথা ছিল না। ফ্রান্স দলে জায়গা পাওয়াই নাকি তাঁর কাছে ছিল বড় বিস্ময়!

শেষ ষোলোর ম্যাচটিই তাঁকে চিনিয়েছে আলাদা করে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলার একপর্যায়ে ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল ফ্রান্স। ঠিক সেই সময়ই চকিত শটে দর্শনীয় এক গোল করে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন এই ফুলব্যাক। বক্সের বাইরে দূর থেকে দৌড়ে এসে বাঁকানো শটে করা সেই গোলটি এবারের বিশ্বকাপেরই অন্যতম সেরা গোল হয়ে আছে। বিশ্বকাপের আগে মাত্র ৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলা পাভারের কাছে বিশ্বকাপ খেলাটাই এক ধরনের বিস্ময়, ‘এক বছর আগেও কেউ আমাকে চিনত না। দুই বছর আগে স্টুটগার্টের দ্বিতীয় বিভাগে যখন যোগ দিলাম হয়তো সেটি ছিল বাজে এক সিদ্ধান্ত। তবে আমি খেলার জন্য সময় পেয়েছি, নিজেকে তৈরি করেছি আর এখন তো স্বপ্নের ভেতরে আছি। ২০০৬ সালে ফ্রান্সের খেলা টিভিতে দেখতাম জিনেদিন জিদানের জার্সি পড়ে। আজও সেটি আমার কাছে আছে।’

বিশ্বকাপে হঠাৎ পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি পাভার। ৫ ম্যাচে ৪৮ দশমিক ১ কিলোমিটার দৌড়েছেন তিনি। ২৪৩ পাস দিয়ে সফল হয়েছেন ২১০টিতে। ২২ বার বল ক্লিয়ার করেছেন, প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের পা থেকে বল কেড়ে নিয়েছেন ২৩ বার। আর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে অনেক দিন মনে রাখার মতো এক গোলটা তো আছেই!

নিজের লক্ষ্যটা আকাশের মতোই বড় পাভারের। আরও একটা লক্ষ্য আছে তাঁর বাবা-মা যেন তাঁকে নিয়ে গর্ব করতে পারেন, ‘আমার প্রধান লক্ষ্য আমার বাবা-মা যাতে আমাকে নিয়ে গর্ব করতে পারেন তেমন কিছু করা। দশ বছর বয়সে বাসা ছেড়েছিলাম ফুটবলের একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য। সময়টা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল, আমার অভিভাবকদের জন্যও। কারণ আমি তাদের একমাত্র সন্তান। আমাকে সব সময়ই উৎসাহিত করেন তাঁরা। তাঁরা কষ্ট করেছেন বলেই আমি আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছি।’
বিশ্বকাপ জেতা থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে ফ্রান্স। দেশমের দল শেষ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে দিতে পারলে পাভারের গল্পটা হবে অনেক দিন মনে রাখার মতো। যেমনটি গল্প কিংবা উপন্যাসে হয়।