৮২০ কোটি টাকার মালিক স্মার্টফোন ভিত্তিক পরিবহন অ্যাপ পাঠাও’র সেই তিন তরুণ

0
459

খুলনাটাইমস ডেস্কঃযানজটের শহর হিসেবে ঢাকা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকার গড় ট্রাফিকের গতি ঘন্টায় ৭ কিলোমিটার। আর যানজটের এ নগরীতে স্মার্টফোন ভিত্তিক পরিবহন অ্যাপ ‘পাঠাও’ চালু করে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন যাতায়াত ব্যবস্থায়। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থায় রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়েছে ‘পাঠাও’।আর এ প্রতিষ্ঠানটির উত্থান যেন জিরো থেকে হিরো হওয়ার গল্প। একেবারে শুন্য থেকে শুরু হওয়া পাঠাও এখন ১০০ মিলিয়ন USD বা বাংলাদেশী টাকায় ৮২০ কোটি টাকার মালিক।যেখানে তিন বছরের মধ্যে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ, আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাফ বেজুসও এমন সাফল্য পায়নি।

গল্পের শুরুটা ২০১৫ সালের মার্চ। ‍এই তিন উদ্যোগ তাদের মধ্যে একজন হলেন হুসাইন এম ইলিয়াস যিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে সবে মাত্র এমবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। অপর আরেকজন হলেন সিফাত আদনান তিনি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। চাকরি পেছনে না ছুটে নিজে থেকে কিছু একটা করার কথা ভাবলেন এই দুই তরুণ।দুই বন্ধু মিলে ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে ছোট পরিসরে শুরু করলেন ডেলিভারি এজেন্টের কাজ। দুই চাকার যান বাইসাইকেল, বাসায় গিয়ে ডকুমেন্ট পৌঁছে দিত। বর্তমানে জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং কোম্পানি ‘পাঠাও’- এর সূচনা লগ্নের গল্পটা ঠিক এমন।

এক সময় দুই বন্ধু ভাবলেন, দুই চাকার বাহন মোটরসাইকেল সেবা চালু করার। মোটরবাইক সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিবে যাত্রীদের। এতে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে অন্য দিকে যাত্রীদেরকে গুণতে হবে না বাড়তি টাকা। সেই সময় ‘পাঠাও’ কোম্পানিতে যুক্ত হলেন কানাডায় পড়াশোনা করা কিশোয়ার হাশমী।তিনজন মিলে শুরু করলেন দেশীয় ডেভেলপার দিয়ে অ্যাপস তৈরির কাজ। অ্যাপস তৈরির পর রাজধানীতে প্রথমবারের মতো স্মার্ট ফোনভিত্তিক মোটরবাইক সার্ভিস ‘পাঠাও’ চালু করেন তারা। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে এই সেবা চালু করা হয়।একদম শূন্য অবস্থান থেকে শুরু করা এই তিন তরুণ বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ৮২০ কোটি টাকা! বাংলাদেশের তরুণদের জন্য যা অনন্য রেকর্ড। সম্পদ বলতে কেবল তিনটি বাই সাইকেল নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল তারা।

নিজের সততা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা অল্প সময়েই সফলতা পেতে শুরু করে। তাদের সফলতা দেখে বিভিন্ন বিদেশি ইনভেস্টররা তাদের ব্যবসায় ইনভেস্ট করে। যার ফলাফল স্বরূপ এত কম সময়ে এই তিন তরুণ ১০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক হতে পেরেছেন।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখতে যাচ্ছে পাঠাও। অ্যাপের মাধ্যমে বাইক, কার ও খাবার সেবাদাতা এই প্রতিষ্ঠান এবার নেপালে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। দেশি রাইড শেয়ারিং স্টার্টআপ হিসেবে এটিই কোনো প্রতিষ্ঠানের বিদেশে কার্যক্রম শুরু করার ঘটনা। পাঠাও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিগগিরই বিষয়টির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে তারা।