৭ বছরে সর্বোচ্চ উত্থান পুঁজিবাজারে সূচকে

0
267

খুলনাটাইমস অর্থনীতি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা নির্দেশনার পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সূচকে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ২৩২ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৩৮২ পয়েন্ট। সাত বছর আগে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে নতুন এই সূচক চালু হওয়ার পর এত বড় উত্থান দেখা যায়নি। এর আগে ডিএসইর পুরোনো সূচক ডিজিইন থাকার সময় ২০১২ সালে ৭ই ফেব্রুয়ারি সূচক বেড়েছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ; সেদিন ৩২৯ পয়েন্ট বেড়ে ডিজিইএন হয়েছিল ৩ হাজার ৯৪৫। রোববার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক সিএএসপিআই ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বা ৭১৩ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৩১৪ পয়েন্ট। লেনদেনও বেড়েছে দুই পুঁজিবাজারে। ডিএসইতে এদিন লেনদেন ৫৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪১১ কোটি টাকা। সিএসইতে লেনদেন ৪০৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। পুঁজিবাজারে টানা পতন ঠেকাতে বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্টদের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বৈঠক থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থাসহ ছয়টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপই বাজারে দরের ঊর্ধ্বগতির কারণ। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে পুঁজিবাজার নিয়ে ইতিবাচক খবর আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে ভালো কথা বলেছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে পুঁজিবাজার নিয়ে আলোচনার খবর এসেছে। “মানুষের আস্থা বেড়েছে। মানুষ মনে করছে, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন, এবার হয়তো বাজার ঠিক হবে। যে কথাগুলো বলা হয়েছে, সেগুলো সত্যি সত্যি করা গেলে বাজার আসলেই ভালো হবে।” ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, “পুঁজিবাজারে শেয়ারের দর অনেক কমে গিয়েছিল। এই অবস্থায় দুটি সুখবর এসেছে। “একটি হচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এবং আরেকটি হচ্ছে সরকারি ব্যাংকগুলো শেয়ার কিনবে। ফলে আস্থাটা ফিরে এসেছে। আর মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যে বিক্রি করে দিচ্ছিল, সেটাও বন্ধ হয়েছে। এজন্য সূচক বেড়েছে।” বড় ধরনের পতনের ধারাবাহিকতায় থাকা ডিএসইর সূচক বুধ ও বৃহস্পতিবার সামান্য বেড়েছিল। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আসার পর রোববার যে বড় ধরনের উত্থান ঘটবে, সে আশা অনেকেই করেছিলেন। এদিন লেনদেন শুরুর ১৪ মিনিটের মধ্যেই ডিএসইএক্স প্রায় ১৫০ পয়েন্ট বা শতাংশ বেড়ে যায়। এরপর সারাদিনই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ছিল ডিএসইএক্স। লেনদেনে বড় বড় শেয়ার আসে, সঙ্গে বাড়তে থাকে দরও। এতে সূচকে পয়েন্ট আরও বেশি যোগ হয়। এদিন লেনদেন হওয়া ৩৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪৬টির, কমেছে ৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টির দর। ডিএসইতে তিনটি বড় কোম্পানির দর বাড়ার কারণে সূচক বেড়েছে ৮৪ পয়েন্ট। সবচেয়ে বড় কোম্পানি গ্রামীণফোনের শেয়ার কেনার চাপে বিক্রেতা উধাও হয়ে গিয়েছিল। কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে ২১ টাকা ১০ পয়সা বেড়ে ২৬৩ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়। গ্রামীণফোনের শেয়ারের কারণে সূচক বেড়েছে ৪৫ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার সাড়ে সাত শতাংশ বা ৬৭ টাকা ৭০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯৭০ টাকা ৬০ পয়সা। এরফলে সূচক বেড়েছে ১৯ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট। স্কয়ার ফার্মার দর প্রায় ৮ শতাংশের বেশি বা সাড়ে সাড়ে ১৪ টাকা বেড়ে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৯২ টাকা ৮০ পয়সায়। এরফলে সূচক বেড়েছে ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল- স্কয়ার ফার্মা, সিঙ্গার বাংলাদেশ, লাফার্জ হোলসিম, কেপিসিএল ও এসএসস্টিল। দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল- বেক্সিমকো ফার্মা, আইসিবি, স্টাইলক্র্যাফট, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ও দেশ গার্মেন্ট। দর হারানোর শীর্ষে ছিল- এসএসস্টিল, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, স্টান্ডার্ড সিরামিক, ঝুট স্পিনার্স ও এল আর গ্লোবাল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান।