৩ জন চিকিৎসক দিয়ে জোড়াতালীর মাধ্যমে চলছে চিকিৎসা সেবা!

0
343

মইনুল ইসলাম, আশাশুনি:
আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপূর্ণতা, দুরাবস্থার কারণে স্বাস্থ্য সেবা না পেয়ে এক প্রকার বাঁধ্য হয়ে রোগীরা উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এ হাসপাতালে ২১ জন এমবিবিএস চিকিৎসকের পদ থাকলেও মাত্র ৩জন চিকিৎসক দিয়ে দায়সারা ভাবে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে একেক জনকে বাঁধ্য হয়ে একটানা ২দিন করে ডিউটি করতে হয়। জানাগেছে, এ হাসপাতালে একজন আয়ুবের্দিক, হোমিওপ্যাথিক ও একজন ডেন্টাল সার্জন পদ থাকলেও সে পদে নেই কোন চিকিৎসক। প্যাথলজি আছে কিন্তু নেই ক্যামিক্যাল ও প্যাথলজিষ্ট। এ্যানাস্থেসিয়া নেই, নেই গাইনি চিকিৎসকও। এছাড়া, আইপিএস বিকল হওয়ায় রাতে লোডশেডিং এ হাসপাতাল কক্ষে হারিকেন জ¦ালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। জেনারেটর থাকলেও ব্যবহার করা হয় না বলে জানান রোগীরা। নেই প্রয়োজনীয় বেডশীড ও বালিশ কভার। দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে হাসপাতালের জরুরী এ্যাম্বুলেন্সটি। এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। নষ্ট হয়ে পড়ে আছে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিও। দৃষ্টি নন্দন বহুতল ভবন থাকলেও নেই হাসপাতালের প্রাণ ভোমরা ডাক্তার। এ হাসপাতালে হাতে গুনা যে কয়জন রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিতে গেলেও তাদের ভোগান্তির অন্ত্য থাকে না। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঔষুধ ও চিকিৎসকের অভাবে ঠিকমত চিকিৎসা সেবা না পাওয়াসহ রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। আশাশুনি উপজেলাটি ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে প্রধান প্রধান সড়ক নির্মিত হলেও অভ্যন্তরিন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যথেষ্ট অনুন্নত। এলাকার মানুষ সাধারণ অসুখ-বিসুখে হাসপাতাল মুখো হতে চায়না। রোগ একটু বড় হয়ে দেখা দিলে পল্লী চিকিৎসকদের কাছেই যাতায়াত করে থাকে। অনেকে হাসপাতালে আসতে চাইলেও ডাক্তার না থাকা, ঔষুধ না থাকা এবং সর্বোপরি অন্যান্য ব্যবস্থা না থাকায় একবার গেলে দ্বিতীয়বার না যাওয়ার চেষ্টা করে থাকে রোগীরা। আর এ কারণেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে বৈধ-অবৈধ প্রাইভেট ক্লিনিক। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অরুন কুমার ব্যানার্জী জানান, চিকিৎসক সংকট বরাবর হাসপাতালে রয়েছে। এ্যানাস্থাসিয়া না থাকায় চাহিদা থাকলেও ডেলিভারী করানো সম্ভব হচ্ছেনা। এছাড়া অনেক সমস্যা আছে। অসুবিধা ও সমস্যার কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আশা রোগীরা জানান, বর্তমান সরকার যেখানে স্বাস্থ্য খাতকে উন্নত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আশাশুনি সরকারি হাসপাতালে এই বেহাল দশার কারণে সরকারের ভাবমুর্তি মারাত্বক ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এমতাবস্থায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও সরঞ্জামাদী দিয়ে কষ্ট লাঘব করবে এমনটা দাবী উপজেলারবাসীর।