১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ একর জমিতে এগিয়ে চলেছে পাইকগাছা কৃষি কলেজ স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ

0
398

শেখ নাদীর শাহ্ ::


সুন্দরবন উপকূলীয় বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষের জীবিকার প্রাণ কৃষির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রতে ১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইকগাছা কৃষি কলেজের নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৭০ থেকে ৩০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

খুলনার কয়রা-পাইকগাছা সড়কের পাইকগাছার শিববাটী ব্রীজ ও আলমতলার মধ্যবর্তী স্থানে ২৫ একর সম্পত্তির উপর স্থাপন করা হচ্ছে পাইকগাছা কৃষি কলেজ। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে নির্মাণ কাজের মধ্যে রয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিকভবন, একাডেমিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রী হোস্টেল, শিক্ষক ডরমেটরী, স্টাফ কোয়ার্টার, ২ তলা বিশিষ্ট প্রিন্সিপাল কোয়ার্টার, সীমানা প্রাচীর, যার ৭০ থেকে ৩০ ভাগ নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রফিক ট্রেডার্স, মোজাফফর এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স রানা ইমন জেভি এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স ইমন এন্টারপ্রাইজ, জাফর উল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স এন্ড মেসার্স ইমন এন্টারপ্রাইজ জেভি ও এমএস বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ সহ কয়েকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রæয়ারি) দুপুরে পাইকগাছা কৃষি কলেজ স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এসময় কর্মকর্তারা নির্মাণ কাজ পরিদর্শন ও বিভিন্ন উপকরণের মান যাচাই-বাছাই করেন।

কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আনিছুজ্জামান, আইএমইডি’র উপ-সচিব আল মামুন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার হাসেম, পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব নাহিদ উল মোস্তাক, পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনার সহকারী প্রকৌশলী নাফিস আক্তার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী আকরাম হুসাইন। এ সময় কর্মকর্তারা নির্মাণ কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের প্রলয়ংকারী আইলা পরবর্তী ২০১০ সালের ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনকালে কয়রার এক জনসভায় সাবেক সাংসদ এড.সোহরাব আলী সানার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাইকগাছা উপজেলায় একটি কৃষি কলেজ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ নজরুল ইসলাম খান ২৯ জুলাই প্রতিশ্রæ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে লিখিত নির্দেশ পাঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রণয়ন করে তা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। ২০১২ সালের ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন পায় প্রকল্পটি।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য এড.সোহরাব আলী সানার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পাইকগাছা উপজেলা সদরে শিববাড়ী ব্রীজের দক্ষিণ পাশে পাইকগাছা-কয়রা সড়ক-সংলগ্ন চকবগুড়া মৌজায় ২৫ একর জায়গা প্রকল্পের জন্য চুড়ান্ত করে শিক্ষা অধিদপ্তর জমি অধিগ্রহনের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। ঐ সময় জমির ক্ষতিপুরণ বাবদ ২ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার চাহিদা পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর জেলা প্রশাসককে একক চেকে তা পরিশোধ করেন। এরপর কোন প্রকার আপত্তি ছাড়াই জেলা প্রশাসক জমির মালিকদের ক্ষতিপুরণের টাকা পরিশোধপূর্বক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ১ শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় এর নির্মাণ কাজ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরবর্তীতে সেখানে নির্মাণ করা হবে মসজিদ, ফার্ম হাউজ, শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, গরু রাখার সেড, গ্যারেজ ও গার্ড সেড।