হেভিওয়েটদের পেছনে ফেলে খুলনা-৬ আসনে আ’লীগের প্রার্থী আক্তারুজ্জামান বাবু

0
667

শেখ নাদীর শাহ্, কপিলমুনি থেকে :

অবশেষে বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যসহ হেভিওয়েটদের পেছনে ফেলে সুন্দরবন উপক‚লীয় খুলনা-৬ ও সংসদীয় আসন-১০৪’র আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন টিকিট জয় করে নিলেন তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশী ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আক্তারুজ্জামান বাবু। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ মার্চ ১ম সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী ১০ম সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত একই প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন বন্টন বলয় থেকে বের হয়ে এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামীলীগের অন্য রকম চমকে নির্বাচনী এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দলীয় টিকিট নিশ্চিত হওয়ার খবরে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় দলীয় চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী ও মনোনয়ন বোর্ডকে সাধুবাদ ও শেখ আক্তারুজ্জামান বাবুকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল হয়েছে।

নতুন নেতৃত্বে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশ্যায় সকল গ্রæপিং ভ‚লে সবাই যেন মিসেছে এক কাতারে। সবার প্রত্যাশা, নতুন নেতৃত্বে আসন্ন নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার পাশাপাশি আওয়ামীলীগ ফিরে পাবে তার সোনালী অতীত। আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ মূহুর্তে আসনটিতে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকতে কেন্দ্রমূখী থাকায় নির্বাচনী এলাকায় এক প্রকার নিরবতা বিরাজ করছিল। মনোনয়ন প্রত্যাশী স্ব স্ব প্রার্থীদের এগিয়ে রেখে মাঠ গরম করে রেখেছিলেন তাদের অনুসারীরা। সর্বশেষ শেখ আক্তারুজ্জামান বাবুর মনোনয়ন প্রাপ্তির খবরে যেন দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছে বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ ১ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি থেকে আওয়ামীলীগের এড.স.ম বাবর আলী,১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারী ২য় নির্বাচনে সাবেক স্পীকার এড.শেখ রাজ্জাক আলী,১৯৮৬ সালের ৭ মে’র ৩য় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মোমি উদ্দীন আহম্মেদ,১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ ৪ র্থ নির্বাচনে একই দলের জহুরুল হক, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারী ৫ম নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অধ্যক্ষ শাহ্ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস,১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারীর ৬ষ্ট নির্বাচনে বিএনপি’র শেখ রাজ্জাক আলী,একই বছর ১২ জুনের ৭ম নির্বাচনে আওয়ামীলীগের এড.শেখ মোঃ নূরুল হক,২০০১ সালের ১ অক্টোবর ৮ম নির্বাচনে জামায়াতের অধ্যক্ষ শাহ্ মুহাম্মদ রহুহুল কুদ্দুস,২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম নির্বাচনে আ’লীগ থেকে সোহরাব আলী সানা ও সর্বশেষ গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর ১০ ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই দলের এড.শেখ মোঃ নূরুল হক বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন।

গত ১০ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি থেকে ক্ষমতাসীন আ’লীগ ৪ বার, বিএনপি ২ বার, জাতীয় পার্টি ২ বার ও জামায়াতে ইসলামী ২ বার করে নির্বাচিত হলেও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে কোন দল বিজয়ী হবে সেটা অনেকটা নির্ভর করছিল দলীয় মনোনয়নের উপর। এর আগে দেশের ৪ টি বড় রাজনৈতিক শক্তি মোর্চা ও আলাদা আলাদা ভাবে নির্বাচিত হলেও এবার নির্বাচনে দলগুলো মূলত ২টি জোট ভূক্ত হয়ে নির্বাচন করছে। সেক্ষেত্রে সাধারণ ভোটারদের প্রশ্ন বিএনপি কি পারবে হারানো আসনটি পুনরুদ্ধার করতে? নাকি ৫ম বারের মত আসনটি ধরে রাখবে আ’লীগ? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেও প্রাধান্য পাচ্ছিল দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি। এলাকাবাসীর অভিমত আগামীর সুষ্ঠু নির্বাচনে রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি বিশেষ ভাবে প্রাধান্য পাবে ব্যক্তি ইমেজের বিষয়টি। মূলত বরাবরই আসনটিতে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয় আ’লীগের প্রার্থীর সাথে জামায়াত প্রার্থীর। সেক্ষেত্রে আসন্ন নির্বাচনে আ’লীগ মনোনয়ন দিলেও ২০ দলীয় জোট এখনো প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত করতে পারেনি।

নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে শেখ আক্তারজ্জামান বাবুর পাশাপাশি এবার মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বর্তমান সংসদ সদস্য ও আ’লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আলহাজ্ব এড. শেখ মোঃ নূরল হক, সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এড. সোহরাব আলী সানা, উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী, জেলা আ’লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদ উল্লাহ, মোঃ রশীদুজ্জামান, শেখ মনিরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মাওলা, আলমগীর হোসেন, জিএম কামরুল ইসলাম, বাহারুল ইসলাম। তবে সর্বশেষ সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তরুণ উদীয়মান নেতা খুলনা জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আক্তারুজ্জামান বাবুর মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি জনপদে ভোটারদের মধ্যেও নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

মনোনয়ন পাওয়ার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রবিবার বিকেলে উপজেলার কপিলমুনিতে আনন্দ মিছিল করেছে কপিলমুনি,হরিঢালী আওয়ামীলীগ,যুবলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন,কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা কওছার আলী জোয়াদ্দার,কপিলমুনি আ’লীগের সভাপতি যুগোল কিশোর দে,আনন্দ মোহন বিশ্বাস,শেখ ইকবাল হোসেন খোকন,হেদায়েত আলী টুকু,কাজল কান্তি বিশ্বাস,ইজাহার আলী গাজী,গাজী মিজানুর রহমান,ওয়াহিদুজ্জামান মোড়ল,রাজিব গোলদার,মুস্তাফিজুর রহমান মিন্টু,রফিকুল ইসলাম খান,মুজাহিদ হাজরা,ইউনুস আলী মোড়ল,সালাম মোড়ল,হাসানুর রহমান মোড়ল,জাহাঙ্গীর বিশ্বাস,প্রভাষক কামাল হোসেন,শুভংকর রায়,কবির ফকির,জি,এম হারন-অর-রশীদ,ইকবাল গাজী,জগদীশ,সুকুমার ঢালী,শাহীন কাগজী,উত্তম চক্রবর্তী,খালেক খাঁ,সামাদ গাজী,রাসেল মোড়ল,শংকর মন্ডল প্রমূখ।