হিট স্ট্রোকের তোয়াক্কা না করা সৈনিক

0
35

নিজস্ব প্রতিবেদক
গ্রীষ্মের তীব্র খরতাপে পুড়ছে দেশ। তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্থ, অসহনীয় গরমে কষ্ট পাচ্ছে মানুষ, পশু—পাখি ও প্রাণীকূল। দেশের দক্ষিণ বঙ্গের এলাকাগুলোতে বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা, যশোর, সাতক্ষীরা ও খুলনার উপরে দাবদাহের প্রভাব ব্যাপক আকারে পড়েছে। গভীর নলকূপে পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে, প্রখর সূর্য তাপে রাস্তার পিচ পর্যন্ত গলে যাচ্ছে। খুলনায় বিগত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে। শিশু ও শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সরকার স্কুল—কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক জারি করা হয়েছে “হিট এ্যালার্ট”। সরকারি—বেসরকারি অফিসগুলোতে দাবদাহ মোকাবেলা করে সেবা প্রত্যাশীদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ তীব্র পিচ গলা গরম উপেক্ষা করে রাস্তার যানজট নিরসন করে ট্রাফিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি নিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক সদস্যরা পানি শূন্যতা, মাথাব্যথা শারীরিক দুর্বলতা ভোগেন ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকেন। এজন্য বাংলাদেশ পুলিশের অভিভাবক আইজিপি নির্দেশনা অনুযায়ী কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম—সেবা উদ্যোগে প্রতিদিনই খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সকল পুলিশ সদস্যদের জন্য ছাতা এবং বিশুদ্ধ সুপেয় পানি, জুস ও খাবার স্যালাইন সরবরাহ হচ্ছে। যতদিন এই তীব্র দাবদাহ বলবৎ থাকবে ততদিন পর্যন্ত এগুলো সরবরাহ অব্যাহত রাখা হবে।
এই প্রচন্ড দাবদাহেও একমাত্র বাংলাদেশ পুলিশেরই ঘরে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। সমস্ত প্রতিকূলতা এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় মৃত্যু ঝুঁকি উপেক্ষা করে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নগরবাসীর সেবায় রাস্তার যানজট নিরসন করে ট্রাফিক শৃঙ্খলা বজায় রাখছে এবং থানা পুলিশ বিভিন্ন রকমের অভিযান পরিচালনা করে অপরাধ দমন করে আইন—শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশের ঘর্মাক্ত দেহে পরিহিত ইউনিফর্ম ভিজে সাদা লবণ ফুটে বের হয়ে যাচ্ছে, ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে তনু, তবুও দায়িত্বে ছেদ পড়েনি একচুলও। ইতোমধ্যে তীব্র দাবদাহে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে পুলিশের কতিপয় সদস্য। পহেলা মে আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও অবদানের কথা স্বীকার করে শ্রমিক দিবস পালিত হলেও পুলিশের নেই কোন কর্মবিরতি। যথানিয়মে প্রতিদিনের ন্যায় পহেলা মে ও দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য।
আমরা বাংলাদেশ পুলিশ তথা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এই ত্যাগকে শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। একটি সুন্দর দেশ গড়ার জন্য এবং খুলনা মহানগরী এলাকাকে অপরাধ এবং যানজট মুক্ত স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে জনগণের পাশে থাকতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদা বদ্ধপরিকর।