সুন্দরবনে পর্যটকে ঠাসাঠাসি

0
1056

মংলা প্রতিনিধি : থার্টিফার্স্ট ইট উদযাপন ও নতুন ইংরেজি বছরকে স্বাগত জানাতে সুন্দরবনের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। রোববার ও সোমবার সকাল থেকে পর্যটকবাহী লঞ্চে করে দর্শনার্থীরা বনের গহিনে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন। হোটেল-মোটেলগুলো পরিপূর্ণ। থার্টিফার্স্ট নাইট ও নতুন বছরকে বরণ করতে সুন্দরবনের করমজল, হাড়বাড়িয়া, হিরণপয়েন্ট, কটকা, কচিখালী ও দুবলার চরে পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ করছেন।

এদিকে এক সঙ্গে অনেক পর্যটকের ভিড় বাড়ায় রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ী ও বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। পর্যটকদের নিরাপত্তায় বন বিভাগ ও পুলিশ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা সাধারণত মোংলা হয়েই বনে প্রবেশ করে থাকে। আর মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান হলো সুন্দরবনের করমজল ও হাড়বাড়িয়া। যারা অধিক ব্যয়ে বনের গহিনে যেতে পারেন না তারা স্বল্প খরচেই করমজল ও হাড়বাড়িয়া ঘুরে দেখে। করমজলে রয়েছে দেশের একমাত্র লবণ পানির কুমিরের প্রজননকেন্দ্র। সেখানে গড়ে উঠেছে কচ্ছপের প্রজননকেন্দ্র। এ ছাড়া আছে কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি হরিণ ও বানরের আবাসস্থল, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, ফুট টেইলারসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থাপনা। এখানে অবস্থিত বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পশু-পাখি, বন্যপ্রাণী দেখে দর্শনার্থীরা তৃপ্তি মিটিয়ে থাকে। করমজল ও হাড়বাড়িয়া যাওয়ার পথিমধ্যে পশুর চ্যানেলে অবস্থানরত বড় বড় বিদেশি জাহাজের অবস্থান পর্যটকদের বাড়তি তৃপ্তি দেয়।

অন্যদিকে সুন্দরবনের গহিনে হিরণ পয়েন্ট, কটকা, কচিখালী, দুবলার চরে রয়েছে সরাসরি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অপার সুযোগ। সাগর পাড়ে বনের অভ্যন্তরে হেঁটে বেড়ানো হরিণ, বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী দেখে সবাই মুগ্ধ হয়।

বন বিভাগ ও বিভিন্ন ট্যুরিস্ট কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, বন বিভাগের ঢাংমারী ও চাঁদপাই স্টেশন থেকে পাস (অনুমোদন) নিয়ে দর্শনার্থীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করছে। পর্যটকরা রোববার সকাল থেকে লঞ্চ, ট্রলার ও জালিবোটে করে বনের আকর্ষণীয় স্পট করমজল, হাড়বাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, কটকা, কচিখালীতে গিয়ে অবস্থান নিয়ে বর্ষবরণ উৎসবে মেতে উঠেছে। কেউ বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে, আবার কেউ কেউ সপরিবারে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে সুন্দরবনে ছুটে এসেছে।

সোমবারও পর্যটকবাহী বিভিন্ন নৌযান সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। ট্যুরিস্ট ব্যবসায়ী সুন্দরবন লাইভ ট্যুর’স মালিক গোলাম রহমান বিটু বলেন, থার্টিফাস্র্দ্ব নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে দেশ-বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের আনাগোনায় হিরণ পয়েন্ট, কটকা ও কচিখালী উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। তার কোম্পানির কয়েকটি লঞ্চ সুন্দরবনের গহিনে পর্যটকদের নিয়ে অবস্থান করছে।

সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে থার্টিফাস্র্দ্ব নাইট ও নববর্ষ উদযাপনে পর্যটকরা বড় বড় লঞ্চ নিয়ে সুন্দরবনে অবস্থান করছে। তিনি জানান, এবার আবহাওয়া ও রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো থাকায় এ মৌসুমে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।