সাতক্ষীরায় শরিষার ভালো ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা

0
843

মীর খায়রুল আলম:
শীতকালীন ফসল সরিষার হলুদ ফুলে সুভাষিত করে তুলেছে প্রকৃতিকে। সাতক্ষীরায় সরিষা চাষে লক্ষমাত্রা শতভাগ অর্জন না হলেও ভালো ফলনে চাহিদা পেরিয়ে যাবে বলে ধারণা করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। শীতের শুরুর আগে কৃষকরা শত ব্যাস্ততার মধ্য দিয়ে চাষের উপযোগী জমি প্রস্তুত করেন। চাষের জমিকে বার বার চাষ দিয়ে পরিমান মত বীজ বপন করেন। কদিন যেতে রোপনকৃত বীজ হতে চারা গজাতে শুরু করে। গজানো চারা দিন যেতে বাড়তে শুরু করে। সল্প খরচ ও অল্প পরিশ্রমে অধিক ফলন এবং ফসল বিক্রয় করে ভালো দাম পাওয়ায় বলে জানিয়েছেন চাষীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরিষা আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে, কলারোয়ায় ৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর, তালায় ৪১০ হেক্টর, দেবহাটায় ১ হাজার ১২৫ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৪১০ হেক্টর, আশাশুনিতে ২২০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সাতক্ষীরা সদরে ২ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়ায় ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর, তালায় ৫৬০ হেক্টর, দেবহাটায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৩১০ হেক্টর, আশাশুনিতে ২০০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ৪০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বারি-১৫, বারি-১১, বারি-৯, বিনা-৪, তরী-৭ সহ বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ করেছেন ।

দেবহাটার জুইকুড়া বিলের সরিষা চাষি চাঁন্দু, জানন, বীজ বপনের ৩ মাসের মধ্যে সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায় । অন্য ফসলের আবাদে কোন ক্ষতি হয় না, খুববেশী সারের প্রয়োজন হয় না, শুধুমাত্র ইউরিয়র সার ব্যবহার করলে যথেষ্ট, চারা ফোটার পরপরই আগাছাগুলো ভালভাবে একবার পরিস্কার করলেই হয়, বেশি শ্রমের প্রয়োজন হয় না, তাছাড়া অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করে এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে ৩ হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়। কালিগঞ্জ নলতা বাজার সংলগ্ন বিলের চাষী তরিকুল জানান, একখন্ড জমিতে শরিষা বপন করেছি। তবে আবহাওয়ার সমস্যায় এবছর অনেকে চাষ করতে পারেনি।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, অসময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে অনেকেরই ক্ষেতে সরিষা নষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক কৃষকই সরিষার আবাদ করতে পারেননি। ফলে চলতি মৌসুমে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে, যেটুকু হয়েছে তাতে ভালো ফলন হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।