সরানো হলো জিন্নাহর ছবি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ থেকে

0
986

অনলাইন ডেক্স:
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহমোহাম্মদ আলী জিন্নাহবিতর্কের অবসান ঘটাতে ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ হলে টাঙানো মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছবিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ছাত্রসংসদ দাবি করেছে, হল পরিষ্কারের কাজ চলছে—এ কাজ শেষ হলে পুনরায় ছবিটি সেখানে টাঙানো হবে।

জিন্নাহর ছবিকে ঘিরে ‘আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত’ হয়ে ওঠে গতকাল বুধবার। এদিন ছিল ভারতের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদের পক্ষ থেকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার একটি অনুষ্ঠান। হামিদ আনসারি ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিন্তু সকালে উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্য নাথের হিন্দু যুব বাহিনীর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে জিন্নাহর ছবি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গেলে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদের সদস্যরা এগিয়ে আসেন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিপেটাও করে। এতে অন্তত ২০ ছাত্র আহত হন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়। পুলিশ বলেছে, এখন পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। তবে হামিদ আনসারিকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।

উত্তর প্রদেশের আলিগড় জেলা শহরে অবস্থিত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮৭৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ হলে দীর্ঘদিন ধরে টাঙানো রয়েছে পাকিস্তানের স্থপতি ও অবিভক্ত ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর একটি ছবি। ওই ছবিটি কেন এখনো আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম। তিনি গত সোমবার এ নিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তারিক মনসুরকে। চিঠিতে তিনি জানতে চেয়েছেন, কেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে জিন্নাহর ছবি থাকবে? সাংসদ এ-ও দাবি করেছেন, যে লোকটি দেশভাগের জন্য দায়ী, তাঁর ছবি কেন রাখা হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি বিশিষ্ট মানুষের ছবি রাখতে চান, তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা স্যার সৈয়দ আহমেদ এবং জমি দানকারী মহেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের মতো মানুষের ছবি রাখা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদের সাবেক সভাপতি ফাইজাল হাসান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জিন্নাহর ওই ছবিটি ১৯৩৮ সাল থেকে রয়েছে। এখন সরকার যদি ছবিটি সরাতে বলে তবে তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।

এ নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফি কিদওয়াই মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ১৯৩৮ সালে জিন্নাহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। সে সময় তাঁকে সাম্মানিক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তখন থেকে ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল মহাত্মা গান্ধীকে ১৯২০ সালের ১৯ অক্টোবর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোনো জাতীয় নেতা এই ছবি সরানোর দাবি কখনো তোলেননি।