সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট-এর মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত

0
148

খবর বিজ্ঞপ্তি:
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রণ্ট-এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও দ্বিতীয় জেলা কাউন্সিল উপলক্ষে শুক্রবার বিকেল ৪টায় খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও সমাবেশ করেছে খুলনা জেলা শাখা। খালিশপুরে সংগঠনের জেলা কার্যালয় থেকে র‌্যালী শুরু হয়ে বিআইডিসি রোড প্রদক্ষিণ শেষে পিপলস গোলচত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির সরদার ও বক্তব্য রাখেনÑকেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, খুলনা জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনার্দন দত্ত নাণ্টু, সদস্য কোহিনুর আক্তার কণা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি সনজিত মÐল শ্রমিকনেতা আব্দুল হাই, মোঃ মনির হোসেন, শহীদুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, মাণিক শেখ, আলেয়া খাতুন, লাকী আক্তার, কামরুল ইসলাম, গোবিন্দ বৈদ্য, অজয় মজুমদার, নিতাই বর্মণ, রেশমা আক্তার, ইমাম হোসেন, নাসিমা বেগম, মরিয়ম আক্তার, নূর ইসলাম, একলাছ হোসেন, পুতুল বেগম, লাইলী আক্তার, নূর আলম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষা ছিল, একটা শোষণহীন সমাজ তথা সমাজতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ করা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে ক্ষমতাসীন সকল পুুঁজিবাদী সামরিক-বেসামরিক সরকার সেই চেতনার বিপরীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। ফলে দেশে এখন রাজত্ব করছে মুনাফাখোর, লুটেরা, পুঁিজপতিগোষ্ঠী আমলা। দেশের সিংহভাগ শ্রমজীবী মানুষের শ্রমশক্তি একেবারে ন্যূনতম মজুরীতে নিংড়ে নিয়ে এরা রাতারাতি বিত্তশালী হচ্ছে, দেশের সম্পদ বাইরে পাচার করে দিচ্ছে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাত করছে। আর সরকার এদের সব কর্মকাÐ বৈধতা দিচ্ছে, সহযোগিতা করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সকল কারখানা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে এসব লুটপাটকারীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। জনগণের করের টাকায় ও শ্রমিকদের শোষণ করে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু সেই উন্নয়নের সুবিধা নিচ্ছে লুটপাটকারীরা। আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। করোনা মহামারীকালীন আর্থিক প্রণোদনার সুবিধাও পেয়ে এই লুটেরাগোষ্ঠী। ফলে এ সময়ে প্রায় সোয়া তিন হাজার নতুন কোটিপতি সৃষ্টি হওয়ার বিপরীতে প্রায় ২ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে গেছে। কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে যাচ্ছে, ফলে বেকার বাড়ছে। এই অবস্থায় শ্রমজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের বিকল্প নেই। শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার নির্মাণে তাই সমাতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের হাত শক্তিশালী করার আহŸান জানান নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ত সকল পাটকল ও চিনিকল চালু এবং আধুনিকায়ন করে লাভজনক করতে হবে। বদলী ও দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের এরিয়ারসহ সকল পওনা, বকেয়া ৬ সপ্তাহের বিল, বকেয়া বোনাস-সহ সকল পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। নামের ভুল দ্রæত সংশোধন করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে হবে। ব্যাটারি চালিত বাহনের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আটককৃত সকল রিকসা-ব্যাটারিসহ ফেরত দিতে হবে। সকল সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে। সমাবেশ শেষে শ্রমিকনেতা কমরেড আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা শাখার ২য় কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে কমরেড আব্দুল করিমকে সভাপতি, কমরেড জনার্দন দত্ত নাণ্টুকে সাধারণ সম্পাদক ও কমরেড ইসমাইল হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট দ্বিতীয় জেলা কমিটি গঠন করা হয়।