সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে গত ১০ বছরে ডায়রিয়া চিকিৎসায় রেকর্ড : দুইজনের মৃত্যু

0
374

কামরুল হোসেন মনি:
নগরীর মীরেরডাঙ্গা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে দিনে রাতে প্রায় পাল্লা দিয়ে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাপদাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই হাসপাতালে বেড়েই চলেছে পেটের পীড়াজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত মে মাস থেকে চলতি জুনে এ ক’দিনে ১৬শ এর ওপরে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। বেড স্বল্পতার কারণে অনেক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন। যা গত ১০ বছরের রেকর্ড বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। মঙ্গলবার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে গেলে সরেজমিনে এ তথ্য পাওয়া যায়।
সূত্র মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ২ হাজার ৬৫৯ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২ জন। ওই সময়ের মধ্যে মার্চ মাসে ৪১৩ জন ডায়রিয়া রোগীর মধ্যে ১ জন এবং মে মাসে ১ হাজার ৮৯ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ সময় মারা যান ১ জন। এছাড়া চলতি জুন মাসে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন ডায়রিয়া রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে বেড স্বল্পতার কারণে ডায়রিয়া রোগীকে ভর্তি করা সম্ভব না হওয়ায় তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (এমও) ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর ভর্তি রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গত ১০ বছরের রেকর্ড এ বছরের মে মাসে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা। কোনো বছর মে মাসে সাড়ে ৬শ এর ওপরে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হননি। এবার শুধু মে মাসে ১ হাজার ৮৯ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি করা হয়েছে। বেড স্বল্পতা থাকায় অনেক ডায়রিয়া রোগীকে আউটডোরে চিকিৎসা প্রদান করে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। অনেক রোগীকে ১৭-২০টি স্যালাইন পর্যন্ত দেওয়া লাগছে। এ পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় কলেরা স্যালাইনের সরবরাহ তুলনামূলক কম রয়েছে।।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত ৫৮৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এ বছর শুধুমাত্র মে মাসে ১ হাজার ৮৯ জনকে ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ওই হাসপাতালে ঘন্টাখানেক এর মধ্যে ১০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দিনে রাতে ডায়রিয়া রোগীরা আসতেই আছে।
ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে আসা বাদল মোড়ল (৫৮) বলেন, পরশু দুপুরে কয়েকবার বমি করেন। এর কিছুক্ষণের পর ডায়রিয়া শুরু হয়। একাধিকবার টয়লেটে যাওয়া লাগছে। এক পর্যায়ে শরীরের আর শক্তি না পাচ্ছিলাম না। পরে দ্রুত এখানে নিয়ে আসা হয়।
গৃহবধূ শাকিলা বেগম (২৩) জানান, সোমবার দুপুর থেকে একাধিকবার বমি হয়। ওই দিন রাত আড়াইটা থেকে ডায়রিয়ার পাশাপাশি পেটে প্রচ- আকারে ব্যথা হচ্ছিলো। দিঘলিয়ার বারাকপুর এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় ওই রাতে হাসপাতালে আসতে পারিনি। ভোরে এখানে নিয়ে আসেন। এখন বমি কমলেও ডায়রিয়া রয়েছে।