শ্যামনগরে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে বাড়িতে ফিরেছে চার জেলে

0
329

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: পশ্চিম সুন্দরবনের বনদস্যুদের দাবিকৃত মুক্তিপনের ৮ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে বাড়িতে ফিরেছে ৪ জেলে। রোববার (১৯ জানুয়ারী) বাড়িতে ফিরেছে সুন্দরবনে মাছ শিকারে যেয়ে অপহৃত মিয়ারাজ হোসেন (৩৫) ও রবিউল ইসলাম(২৬), কবির (২৬) ও রিপন হাওলাদার (২৬) নামের চার জেলে। তারা যথাক্রমে শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের কালিঞ্চি খাসখামার গ্রামের আব্দুল্লাহ খোকন, সাদেক গাজী এবং গাবুরা নাপিতখালী গ্রামের মোমিন হাওলাদার ও সিরাজুল হালদারের ছেলে। মুক্তিপনের টাকা দিতে বিলম্ব ঘটায় জিম্মি অবস্থায় ব্যাপক শাররীক নির্যাতনের শিকার চার জেলেকে রোববার দুপুরে পরিবারের পক্ষ থেকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ৮ সদস্যের সশস্ত্র একটি গ্রুপ গত ১৬ জানুয়ারী সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবনের রায়মঙ্গল নদী সংলগ্ন কচুখালী খাল এলাকা থেকে ঐ চার জেলেকে অপহরন করে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। তারা আবু সালেহ কোম্পানী নামীয় একটি প্রতিষ্ঠানের জেলে শ্রমিক হিসেবে কোবাতক ও কৈখালী ষ্টেশন থেকে পাশ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশের পর অপহরনের শিকার হয়। ফিরে আসা জেলে মিয়ারাজসহ অন্যরা জানিয়েছে জনৈক আবু সালেহ কোম্পানীর শ্রমিক হয়ে তারা পশ্চিম সুন্দরবনে মাছ শিকারে যায়। ১৬ জানুয়ারী মঙ্গলবার বনদস্যুরা নিজেদের ‘জিয়া বাহিনী’র সদস্য পরিচয়ে ছয়টি নৌকার ১২ জেলের মধ্য হতে তাদের চারজনকে উঠিয়ে নিয়ে তিন দিনের মধ্যে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। জিম্মি অবস্থায় তাদের হাত পা বেঁধে গরানের লাঠি দিয়ে পায়ের তালুসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে নির্যাতনের বর্ননা দেয় ফিরে আসা চার জেলেরা। মুক্তিপনের ৮ লাখ টাকার মধ্যে কালিঞ্চি গ্রামের রবিউল ও মিয়ারাজকে দিতে হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং গাবুরা নাপিতখালী গ্রামের রিপন ও কবীল হাওলাদারকে দিতে হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সব টাকাই বিকাশের মাধ্যমে বনদস্যুদের কাছে পৌছানো হয়। রমজাননগর ও গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন ও মাসুদুল আলম জানায়, ফিরে আসা জেলেরা স্বাভাবিক হাটা চলার সক্ষমতা হারিয়েছে। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে বাড়িতে ফেরার পরপরই শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। মুক্তিপন দিয়ে ফিরে আসা জেলে কবীর হোসেন জানায়, তার অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সুন্দরবনে নিখোজ হওয়ার বিষয়টি শ্যামনগর থানায় ১৮ তারিখ সকালে জিডি করা হয়। যার নং-৮০৪/২০২০। মুক্তিপন দিয়ে ফিরেআসা জেলেরা আরও জানায় বনদস্যু জিয়া বাহিনী তাদের ব্যবহৃত ৪ টি বন্দুক জেলেদের হাতে দিয়ে বনদস্যুদের সাথে ছবি উঠিয়ে নেয় এবং বলে যে “প্রতি গোনে মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে বিকাশ করে পাঠাবি, অন্যথায় এই ছবি র‌্যাব-৬ এর কাছে পাঠিয়ে দেব তাতে প্রমান হবে তোরা সুন্দরবনে ডাকাতি করিস” বর্তমানে তারা শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।