শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় বাংলায় ঘোষণা, ১০ জনের ফাঁসি বহাল

0
167

টাইমস ডেস্ক:
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দুই দশক আগে বোমা পুঁতে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায়ে ১০ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৭ ফেব্রæয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ভাষার মাসে বাংলা ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় বাংলায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এর আগে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছিল। গত ১ ফেব্রæয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈতবেঞ্চে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার (১৭ ফেব্রæয়ারি) আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
সোমবার যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত ৯ আসামির সাজা বহাল চেয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদÐ দিয়ে রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদÐ দেয়া হয়। এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেয়া হয়।
মৃত্যুদÐপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদÐ ও ১০ হাজার টাকা অর্থদÐ দেয়া হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদÐ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের দÐ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা করেন।
২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। সেখানে এই মামলার বিচার সম্পন্ন হয়।