শিরোমণি কেবল শিল্পে শ্রমিক নিয়োগে অনিয়ম : শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই অদক্ষদের নিয়োগ

0
250

ফুলবাড়ীগেট প্রতিনিধি:
খুলনার শিরোমণি শিল্পাঞ্চলের বাংলাদেশ কেবল শিল্প লিমিটেডে দৈনিক মজুরী ভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগে ব্যাপোক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোন প্রক্রিয়া ছাড়াই ১০টি শ্রমিক পদের ৬ টি’তে সিবিএ নেতাদের ছেলে এবং তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই বিজ্ঞপ্তি মতে আবেদন করার মত শিক্ষাগত যোগ্যতা নাই। বিষয়টি জানাজানি হলে ফ্যাক্টরীর অভ্যান্তরে এবং এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, শিরোমণি কেবল শিল্প লিমিটেড ‘‘কাজ আছে মজুরী আছে, কাজ নাই মজুরী নাই’’ পদ্ধতিতে উৎপাদন বিভাগে মেশিন চালনার কাজের জন্য দৈনিক মজুরী ভিত্তিক দশজন শ্রমিক নিয়োগের জন্য গত ২৬ অক্টোবর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কমপক্ষে এসএসসি ভোকেশনাল/সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন যাদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করেন। গত ২ সেপ্টেম্বর আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। দশটি পদের জন্য ২৫৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর শুক্র ও শনিবার অত্যান্ত গোপনে সিবিএ নেতার ছেলে, তাদের আত্মিয় স্বজনসহ ৬জনকে কাজে নিয়োগ দেন। যাদেরকে কাজে নেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেরই আবেদন করার মত যোগ্যতা না থাকায় তারা আবেদন পর্যন্ত করতে পারিনি।
কেবল শিল্প লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক(উৎপাদন) স্বাক্ষরিত ডিউটি শীটে দেখা যায় গত ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ফ্যাক্টরীর ডাকট মেশিনে (ডিএল ক শিফটে) মুরাদ নামের এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জিনি সিবিএ নেতা বিল্লালের ভগ্নিপতি। এছাড়া সিবিএ নেতা শাহ নেওয়াজের আত্মিয় সালাম(ডিএল-খ শিফট), সিবিএ সভাপতির আর্শিবাদপুষ্ট উৎপাদন বিভাগের কর্মচারী মিজানুর রহমানের ছেলে আজিজুল(ডিএল-গ শিফট)কে কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার এক্রাাট্রডার মেশিনে (ডিএল-গ- শিফটে সিবিএ নেতা খলিলুর রহমানের ছেলে আমিনুল,(ডিএল- খ – শিফটে) সিবিএ নেতা মিজানুর রহমান মিলনের ভায়রার ছেলে হাফিজুর এবং সিবিএ’র এক নেতার সুপারিশে তানভীর (ডিএল-ক-শিফটে)কে কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১০টি পদে শ্রমিক নিয়োগের কথা থাকলেও কোন প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই নিয়ম বহিভূতভাবে সিবিএ নেতাদের ছয় জনকে কাজে নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাদের অনেকের আবেদন করার মত শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা না থাকায় আবেদন পর্যন্ত করতে পারেনি।
অথচ ফ্যাক্টরীর একজন কর্মচারী বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন কর্মস্থলে অসুস্থ হয়ে পরে চিকিৎধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। তার একমাত্র সন্তান ডিপ্লোমা পাশ করে ফ্যাক্টরীর সিবিএ এবং কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চাকুরীর জন্য হাটতে হাটতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে তবু তাকে কোন কাজ দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে কেবল শিল্প লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক(প্রশাসন অঃদঃ) মোঃ মোসলেম উদ্দীন বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন শুরু হয়নি কাজ প্রসেসিং এ আছে। গত কয়েক মাস আগে কয়েকজনকে ড্রাম শপে ডেইলি লেবার হিসাবে নেওয়া হয়েছিল । তাদের কয়েকজনকে আপাতত ডাকট মেশিনের হেলপার হিসাবে কাজ করানো হচ্ছে। মেশিন চালনার কাজে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে সেই নিয়োগের সাথে এদের কোন সম্পর্ক নেই।
ফ্যাক্টরীর এম.ডি জগদিস চন্দ্র মন্ডল বলেন, অনেকে আবেদন করেছে বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছেনা। তিনি বলেণ বিজ্ঞপ্তির এগেনেস্টে আমরা কাউকে নিয়োগ দেইনি। তবে চার মাস আগে ৮জন ড্রাম শপে লেবার হিসাবে নেওয়া হয়েছিল। কয়েক মাস তাদেরকে ডাকা হয়নি এখন প্রয়োজনে আমরা আমাদের কাজে লাগাচ্ছি। তিনি বলেন বিজ্ঞপ্তির ১০জন নিয়োগের সাথে এদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। যারা আবেদন করেছে তাদের নিয়ে লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইভা এই মুহুর্তে শোভনীয় না আবেদন গুলো রেখে দিয়েছি পরবর্তিতে দেখা যাক। সিবিএ নেতাদের আত্মিয় করনের বিষয়ে তিনি বলেন এটা অনেক আগের বিষয় এটা এখন বল্লে হবে না।