শিরোপার পথে লিভারপুলের আরো একটি জয়

0
238

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : ব্রাজিলিয়ান তারকা রবার্তো ফিরমিনোর গোলে বৃহস্পতিবার উল্ফসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শিরোপার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছে লিভারপুল। এই জয়ে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটির সাথে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্টের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬-এ। লিগে এই নিয়ে টানা ১৪ ম্যাচে জয়ের ধারা ধরে রাখলো ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা। ৮ মিনিটে জর্ডান হেন্ডারসনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রেডসরা। কিন্তু রাওল জিমিনেজের গোলে ৫১ মিনিটে সমতা ফেরায় স্বাগতিক উল্ফস। দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুলকে বেশ কয়েকবার অসাধারণ দক্ষতায় রক্ষা করেছেন গোলরক্ষক এ্যালিসন। এবারের মৌসুমে এর আগেও শেষ মুহূর্তের জয়ে লিভারপুল নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে লিস্টার, এ্যাস্টন ভিলা, ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ম্যাচগুলো অন্যতম। গতকালও ম্যাচ শেষের ৬ মিনিট আগে ফিরমিনোর গোলে লিভারপুলের জয় নিশ্চিত হবার সাথে সাথে ৩০ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা খরা কাটানোর পথে আরো তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। ম্যাচ শেষে লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ বলেছেন, ‘প্রত্যেককেই জয়ের পথ খুঁজে নিতে হয়। আর এই জয়ের পথে যেকোন একজনকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আজ আরো একবার সেই কাজটি আমাদের জন্য করে দেখিয়েছে ফিরমিনো। অসাধারন একটি গোলে সে আমাদের জয় উপহার দিয়েছে।’ এবারের মৌসুমে এই নিয়ে ২৩ লিগ ম্যাচে ২২ জয় তুলে নিল লিভারপুল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির তুলনায় এক ম্যাচও কম খেলেছে ক্লপ শিষ্যরা। যদিও এই জয় কিছুটা হলেও দলের অন্যতম সেরা তারকা সাদিও মানের ইনজুরিতে ম্লান হয়ে গেছে। প্রথমার্ধের ৩৩ মিনিটে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয় সেনেগালের এই ফরোয়ার্ড। ক্লপ অবশ্য জানিয়েছেন এখনো ইনজুরির বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। লিভারপুলের কাছে হেরে শীর্ষ চারের থেকে ছয় পয়েন্ট পিছিয়ে সপ্তম স্থানেই রয়েছে উল্ফস। তবে নুনো এসপিরিতোর দল একটি বিষয় অন্তত প্রমাণ করেছে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার জন্য কেন চতুর্থ স্থানে থাকা চেলসির সাথে সবচেয়ে বেশী চ্যালেঞ্জিং দল হিসেবে তাদেরকেই বিবেচনা করা হচ্ছে। এস্পিরিতো বলেন, ‘এটা একটি চমৎকার ম্যাচ ছিল। এই ম্যাচের পরে আমাদের এই ধারা বজায় রাখতে হবে। আরো বেশী শক্তিশালী হয়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ কালকের ম্যাচে সেট পিস আক্রমনগুলোই ছিল লিভারপুলের সাফল্যের মূল মন্ত্র। ৮ মিনিটে হেন্ডারসনের দেয়া গোলটিও ছিল সেট পিস থেকেই। এই গোলের পরপরই ম্যাট দোহার্তি উল্ফসের হয়ে সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হন। মানেকে যদি আগামী কয়েকদিন অনুপস্থিতও থাকতে হয় তবে সেটা লিভারপুলের শিরোপা জয়ের মিশনে কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। তবে আগামী মাসে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’তে তার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মাসে নাটকীয় ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটিকে ৩-২ গোলের হারানোর পর দুইদিন পরই লিভারপুলের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল উল্ফস। ঐ ম্যাচে দলের সবচেয়ে বিপদজনক দুই ফরোয়ার্ড জিমিনেজ ও এ্যাডামা ট্রায়োরে বদলী বেঞ্চে ছিলেন। কিন্তু কাল আর সেই ভুল করেননি এস্পিরিতো। ট্রায়োরের মত একজন ফরোয়ার্ডকে দলে পেয়ে উল্ফস যে ধরনের ফর্মে আছে তা সত্যিই তাদের জন্য সৌভাগ্য বলে ক্লপও স্বীকার করেছেন। প্রিমিয়ার লিগে টানা ছয় ম্যাচে কোন গোল হজম না করা লিভারপুলকে এই ধারা ধরে রাখতে ব্যর্থ করেছেন জিমিনেজ ও ট্রায়োরে। ৫১ মিনিটে ডানদিক থেকে ট্রায়োরের নিখুঁত ক্রসে জিমিনেজ মৌসুমের ২০তম গোল করে দলকে সমতায় ফেরান। গত দুই মাসে এই নিয়ে লিগে প্রথম গোল হজম করেছেন এ্যালিসন। এরপরপরই ট্রায়োরে ও জিমিনেজের আরো দু’টি শট রুখে দিয়ে লিভারপুলকে রক্ষা করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ৮৪ মিনিটে হেন্ডারসনের পাস থেকে শেষ পর্যন্ত রেডসদের গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট উপহার দেন আরেক ব্রাজিলিয়ান ফিরমিনো।