শরণখোলায় কোটি টাকার সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ

0
673

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :
বাগেরহাটের শরণখোলায় এক প্রভাবশালীর নেতৃত্বে একাধিক কৃষকের চাষাবাদকৃত কোটি টাকার সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পক্ষে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের জানেরপাড় গ্রামের বাসিন্দা মৃত: নুরুল ইসলাম খানের ছেলে ফরিদ আহম্মেদ খান বাদী হয়ে দখলবাজদের হোতা একই এলাকার বাসিন্দা মৃত: আঃ রশিদ হাওলাদারের ছেলে প্রভাবশালী  মোঃ মহারাজ হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ থানা পুলিশের কাছে জমি উদ্ধারের জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে নোটিশ জারি করে দখল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও  দখলবাজরা তা উপেক্ষা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের অভিযোগ ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ওই গ্রামের কৃষক ফরিদ আহম্মদ খান, আঃ খালেক আকন, আবুল বাশার আকন, মাষ্টার রুস্তুম আলী, ইউসুফ আলী হাওলাদার ও আঃ হালিম ফিরোজ সহ ৬/৭জন কৃষক উত্তরাধিকার সুত্রে ৪নং বানিয়াখালী মৌজার এস.এ ৬১০, ৬১১ নং খতিয়ানের ১০৩১, ১০৩২, ১০৩৬, ১০৪০, ২৩০৯, ১০২০, ১০২৩, ১০২৫, ১০২৭, ১০২৮ ও ১০২১ নং দাগের ১৭.৮৫ একর জমির মালিক হয়ে অর্ধশত বছর ধরে তাদের পূর্ব পুরুষক্রমে শান্তি পূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছিল। উক্ত জমি ভিপি তালিকাভূক্ত হওয়ায় অবমুক্তির জন্য অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাবর্তন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা চলমান আছে। কিন্তু  ক্ষমতার অপব্যহার করে মহারাজ উপজেলার ধানসাগর, খোন্তাকাটা ও রায়েন্দা ইউনিয়নের  দক্ষিণ বাধাল, পূর্ব আমড়াগাছিয়া, বানিয়াখালী, রায়েন্দা বাজার (পাঁচ রাস্তা), পশ্চিম খোন্তাকাটা ও আমড়াগাছিয়া গ্রামের সুলতান হাওলাদার, হেমায়েত হাওলাদার, জামাল হাওলাদার, রফিক হাওলাদার, রফিক হাওলাদার, কাইউম হাওলাদার, ফারুক হাওলাদার, আল-আমিন হাওলাদার, অলিয়ার হাওলাদার, নুরুজ্জামান শিকদার, খলিল হাওলাদার, জলিল হাওলাদার, দেলোয়ার হাওলাদার, সোবাহান হাওলাদার, সোহেল ফকির, দুলাল ফকির, শাহজাহান ফকির সহ প্রায় ৩০ পরিবারের কাছ থেকে জন প্রতি ৩০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে জমি দেয়ার প্রলোভন দেখান। ফলে গত ২১ ফেব্রæয়ারী প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শতাধিক লোক ভাড়া করে প্রকাশ্যে দিবালোকে ওই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে উক্ত সম্পত্তিতে ২২ পরিবারকে বসতি স্থাপন করান। এ ঘটনায় ফরিদ আহম্মদ খান বাদী হয়ে একই দিন রাতে দখলবাজদের মুল হোতা মহারাজ সহ ১১জনকে আসামী করে শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তার কাছে আবেদনের ফলে গত ৫ মার্চ উভয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ  তাঁর কার্যালয়ে হাজির হওয়া নির্দেশ দিলে বিবাদীরা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। অপরদিকে, জবর দখলকারীদের পক্ষে সুলতান হাওলাদার বলেন, আমরা ভূমিহীন তাই এ জমিতে বসত ঘর নির্মাণ করেছি। তবে, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে ঘর নির্মাণ করা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে  মহারাজ হাওলাদার বলেন, বর্তমানে তিনি এলাকার বাহিরে রয়েছেন এবং জমি দখলের বিষয়ে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে স্থানীয় একজন মুক্তিযোদ্ধা ডিসিআর এর মাধ্যমে উক্ত জমিতে পল্লী স্থাপন করেছেন বলে তিনি অবগত আছেন।সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মোঃ রাকিব হোসেন বলেন, ওই কৃষকদের জমি যদি কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করে বে-আইনীভাবে জবর দখল করে থাকলে তা দুঃখজনক।  বিষয়টি প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিৎ। এছাড়া খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান মোঃ জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন জানান, জমি দখলের ঘটনা সঠিক। তবে এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা উপজেলা নির্বাহীর কর্মকর্তার নিকট দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনিই বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যেমে পূনঃরায় হাজির করা হবে। এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। ####