লিগ কাপ : ১০ গোলের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত আর্সেনালকে টপকে গেল লিভারপুল

0
255

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : নির্ধারিত সময়ের ৫-৫ গোলে ড্র হবার পর শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শ্যুট আউটে আর্সেনালকে ৫-৪ গোলে পরাজিত করে লিগ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে লিভারপুল। অপর ম্যাচে চেলসির বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চতুর্থ রাউন্ডের এই ম্যাচটিকে সামনে রেখে লিভারপুল ও আর্সেনালের ম্যানেজার জার্গেন ক্লপ ও উনাই এমেরি ১১টি পরিবর্তন নিয়ে দল সাজিয়েছিলেন। কিন্তু এনফিল্ডে দুর্দান্ত এক ম্যাচে নিয়মিত দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়রা প্রমান করেছেন যোগ্যতার দিক থেকে তারাও কোন অংশে কম নয়। যদিও বারবার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত গানার্সদের হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে। টাইব্রেকারে ডানি সেবালোসের পেনাল্টি রুখে দেন লিভারপুলের ২০ বছর বয়সী আইরিশ গোলরক্ষক কাওমহিন কেলেহার। এরপর রেডসদের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন ১৮ বছর বয়সী কার্টিস জোনস। রেকর্ড আটবার লিগ কাপ জয়ের ইতিহাস রয়েছে লিভারপুলের। ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মত আবারো এই শিরোপা জয়ে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে অল রেডসরা। ম্যাচ শেষে বিজয়ী কোচ ক্লপ বলেছেন, ‘আমরা আজ বেশ খোলামেলা ছিলাম। বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা হলেও এই ধরনের ম্যাচে কেউ কারো কথা শোনে না। এমন একটি ম্যাচ উপহার দেবার জন্য আমি খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা আজ অনেক কিছুই প্রমাণ করেছে যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এনফিল্ডে প্রথমবারের মত খেলতে নামাটা তাদের কাছে স্বপ্নে মতই। ম্যাচের সবগুলো গোলই ছিল দুর্দান্ত। ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে রোববার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে হতাশাজনক ড্রয়ের পর গ্রানিট জাকার আর্সেনালের সমর্থকদের উদ্দেশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করায় এমনিতেই গানার্সদের নিয়ে সমর্থকদের মনে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তার উপর ৩-১, ৪-২, ৫-৪ গোলে তিনবার এগিয়ে যাবার পরও এই ধরনের পরাজয় কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না সমর্থকরা। এমেরি বলেছেন, এটা একটি অন্যরকম ম্যাচ। ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরাই জয়ী ছিলাম। পেনাল্টিতে ভাগ্য ৫০-৫০ থাকে, সেখানেই আমরা পরাজিত হয়েছি। আমরা দুঃখিত, এর থেকেও বেশী কিছু আমাদের পাওনা ছিল। ২৩ বছর ১২২ দিন গড় বয়সের এই দলটি ২০১৭ সালের জানুয়ারির পর লিভারপুলের সবচেয়ে কনিষ্ট একাদশ। দলে থাকা টিনএজারদের মধ্যে ছিলেন নিকো উইলিয়ামস, হার্ভে এলিয়ট, রিহান ব্রুস্টার ও সেপ ফন ডেন বার্গ। ম্যাচের ৬ মিনিটে এ্যালেক্স অক্সালেড-চেম্বারলেইনের লো ক্রস আর্সেনাল ডিফেন্ডার শোখড্রান মুস্তাফি ক্লিয়ার করতে গেলে আত্মঘাতি গোলে পিছিয়ে পড়ে গানার্সরা। ১৯ মিনিটে মেসুত ওজিলের পাস থেকে বুকায়ো সাকার শট কেলেহার আটকে দিলেও ফিরতি বলে লুকাস টোরেইরা আর্সেনালের পক্ষে সমতা ফেরান। গত ২৪ সেপ্টেম্বরের পর এই প্রথম এবং মৌসুমের মাত্র তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন ওজিল। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির গোলে এবার ২৬ মিনিটে এগিয়ে যায় এমেরির দল। ১০ মিনিট পরে মার্টিনেলি আরো একটি গোল করেন। মৌসুমের এটি ছিল সাত ম্যাচে তার সপ্তম গোল। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে লিভারপুলের হয়ে ব্যবধান কমান জেমস মিলনার। ৫৪ মিনিটে আর্সেনালের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন এইন্সলে মেইটল্যান্ড-নাইলস। চার মিনিট পর দুর পাল্লার জোড়ালো শট থেকে অক্সালেড-চেম্বারলেইন নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। ৬২ মিনিটে জোনসের সহায়তায় ডিভোক ওরিগি লিভারপুলের হয়ে সমতা ফেরান। কিন্তু ৭০ মিনিটে মিডফিল্ডার উইলক ২৫ গজ দুর থেকে আবারো আর্সেনালকে এগিয়ে দিলে ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় গানার্সরা। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি। স্টপেজ টাইমে ওরিগি লিভারপুলের হয়ে সমতা ফেরালের ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারনের জন্য টাইব্রেকের দরকার হয়। এদিকে স্টামফোর্ড ব্রীজে চেলসির বিপক্ষে জয়ের আশায় ওলে গানার সুলশার শক্তিশালী দল নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন। মাত্র চারটি পরিবর্তন করে সুলশার মূল একাদশ সাজিয়েছিলেন। অন্যদিকে চেলসি বস ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ডের দলে ছিল ছয়টি পরিবর্তন। রোববার প্রিমিয়ার লিগে নরউইচ সিটির বিপক্ষে মার্কোস রাশফোর্ড ও এন্থনি মার্টিয়াল পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করার পর গতকাল ২৫ মিনিটে ঐ পেনাল্টিতেই এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। মার্কোস আলোনসোর বিপক্ষে ড্যানিয়েল জেমসের আদায় করা পেনাল্টি থেকে রাশফোর্ডই দলকে এগিয়ে দেন। উইল কাবালেরোকে উল্টো দিকে পাঠিয়ে রাশফোর্ড মৌসুমের ষষ্ঠ গোল পূরণ করেন। ৬১ মিনিটে দুরপাল্লার শট থেকে সমতা ফেরান মিচি বাটশুয়াই। তবে ৭৩ মিনিটে ৩০ গজ দুর থেকে রাশফোর্ডের ফ্রি-কিক ইউনাইটেডের জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিল। আরেক ম্যাচে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী উলভসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শেষ আট নিশ্চিত করেছে এ্যাস্টন ভিলা।