লিগ ওয়ান : ইকার্দি, এমবাপ্পের জোড়া গোলে পিএসজির বড় জয়

0
318

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : মাওরো ইকার্দি ও কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী মার্সেইকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেই। পার্ক ডি প্রিন্সেসে চারটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। দাপুটে এই জয়ে লিগ ওয়ান টেবিলের শীর্ষে থাকা পিএসজি তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাঁতের থেকে আট পয়েন্ট এগিয়ে গেছে। আন্দ্রে ভিয়াস-বোয়াসের মার্সেইর বিপক্ষে গতকাল ২৬ মিনিটেই ইকার্দি দুই গোল করেছেন। এরপর ইনজুরি কাটিয়ে মূল একাদশে ফেরা এমবাপ্পে বিরতির আগে করেছেন আরো দুই গোল। গত পাঁচ ম্যাচে ইন্টার মিলান থেকে ধারে খেলতে আসা স্ট্রাইকার ইকার্দি এই নিয়ে সপ্তম গোল করলেন। আর এ কারনেই আরো একবার এবারের মৌসুমে ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা এডিনসন কাভানিকে মূল একাদশের বাইরে রেখেছিলেন পিএসজি বস থমাস টাচেল। ম্যাচ শেষে ক্যানাল প্লাসকে ইকার্দি বলেছেন, ‘পিএসজিতে আসার পর আমি জানতাম এখানে গোল করার বিকল্প নেই। এই একটি কাজ আমি সবসময়ই করতে চাই, এখানে আসার পরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানে আমি বেশ কিছু অসাধারন খেলোয়াড়ের সান্নিধ্য পেয়েছি। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে এ পর্যন্ত খেলা ক্লাবগুলোর মধ্যে পিএসজিই সেরা।’
সপ্তাহের মাঝামাঝিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্লাব ব্রাগের বিপক্ষে পিএসজির ৫-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে হ্যাটট্রিক করেছিলেন এমবাপ্পে। বেলজিয়ামের ঐ ম্যাচটিতে তিনি বদলী হিসেবে নেমেছিলেন। আর দুই মাস পর কাল মূল একাদশে ফিরেছেন। গত তিন ম্যাচে এই নিয়ে ৬ গোল করলেন এই ফ্রেঞ্চ তারকা। শুক্রবার মোনাকোর বিপক্ষে ঘরের মাঠে নাঁতে ১-০ গোলে পরাজিত হওয়ায় পিএসজির থেকে আট পয়েন্ট পিছিয়ে গেছে। ১১ ম্যাচে পিএসজির সংগ্রহ এখন ২৭ পয়েন্ট। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজির আরো একটি লিগ শিরোপা এখন থেকেই দৃশ্যমান হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে শুধুমাত্র নাঁতেকেই এবারের আসরে তাদের শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু সেই ক্লাবটিও এখন পিছনে চলে গেছে। আরো একবার ইনজুরি আক্রান্ত নেইমারকে ছাড়া পিএসজিকে মাঠে নামতে হয়েছিল। এছাড়া মৌসুমের সবচেয়ে আকর্ষনীয় মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গুয়েও সাইডলাইনে ছিলেন। কিন্তু তাদের কারোরই অনুপস্থিতি অনুভূত হয়নি। ফ্রান্সের সেরা-সমর্থিত ক্লাব হিসেবে বরাবরই পরিচিত পিএসজি ও মার্সেই। সে কারনেই লিগ ওয়ানের এই দুই ক্লাবের দ্বৈরথ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। যদিও দীর্ঘ সময় ধরেই প্যারিসের জায়ান্টদের বিপক্ষে মার্সেই নিজেদের যোগ্যতার প্রমান রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ৯০’র দশকে এই দুই ক্লাবের মধ্যেই শিরোপা লড়াই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০১১ সালে কাতারি মালিকের অধীনে পিএসজি লিগ ওয়ানে দাপুটে দল হিসেবে আবির্ভূত হবার পর থেকেই মার্সেই পিছিয়ে পড়েছে। ২০১১ সালের নভেম্বরের পর থেকে মার্সেই পিএসজিকে পরাজিত করতে পারেনি। তারপর থেকে টানা ২০ ম্যাচে পিএসজিই আধিপত্য দেখিয়েছে। মার্সেই কোচ ভিয়াস-বোয়াসও বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ‘আজকের ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যেভাবে খেলেছি তাতে আমি দারুন গর্বিত। কিন্তু পিএসজির বিপক্ষে এই ধরনের ফলাফলে কার্যত আমি আগ্রহী নই। আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই শিরোপা জয় করা।’ ১০ মিনিটে মার্সেইর ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার ভালেরে জার্মেই গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচের ভাগ্য হয়ত ভিন্ন হতে পারতো। কিন্তু পরমুহূর্তেই এ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার ক্রস থেকে ইকার্দির হেড মার্সেই গোলরক্ষক স্টিভ মানডানডা রুখে দিলেও ফিরতি বলে দলকে এগিয়ে দেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। ২৬ মিনিটে মার্কো ভেরাত্তির সহযোগিতায় ব্যবধান দ্বিগুন করেন ইকার্দি। এরপর প্রথমার্ধের পুরোটাই মার্সেইকে নিয়ে যেন ছেলেখেলা খেলেছে পিএসজি। ৩২ মিনিটে অফ-সাইড ট্র্যাপকে ফাঁকি দিয়ে ভেরাত্তির পাস থেকে ডি মারিয়া হয়ে বল আসে এমবাপ্পের কাছে। এই পাসে কোন ভুল করেননি এমবাপ্পে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডি মারিয়া এরপর ম্যাচে আরেকটি গোলের যোগান দেন। ৪৪ মিনিটে ডি মারিয়ার সহযোগিতায় এমবাপ্পে তার দ্বিতীয় গোল পূরণ করলে ৪-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিক পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে মার্সেই অন্তত পিএসজিকে ব্যবধান বাড়াতে দেয়নি। রোববারের অপর ম্যাচগুলোতে রেনে ৩-২ গোলের টোলুসেকে পরাজিত করে ১০ ম্যাচের জয়খরা কাটিয়েছে। এছাড়া সেইন্ট-এতিয়েনে ২-২ গোলে এমিয়েন্সের সাথে ড্র করেছে।