র‌্যাবে’র প্রতি জনগনের আস্থা যেন ভুল তথ্যের কারনে নষ্ট না হয়, সাংবাদিকদের প্রতি আহবান র‌্যাব-৬’র অধিনায়ক

0
242

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ১২ই জানুয়ারী সাতক্ষীরার জজকোর্ট এলাকায় দিনে দুপুরে নারীসহ দুইজনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় পেনাল কোড ১৮৩/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়।

এই ঘটনার আসামী নজরুল ইসলামকে গত ১৩ই জানুয়ারী বিকাল ৫টায় খুলনা মোড় হতে গ্রেফতার করার সময় তাকে নিয়ে মোটর সাইকেলে নিয়ে পলায়নের সহযোগিতা করায় তাৎক্ষণিক সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতক্ষীরা র‌্যাব ক্যাম্পে নেওয়া হয় বলে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে জানান র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ। তিনি আরও জানান পরবর্তীতে আসামী নজরুল ইসলাম ঘটনার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন এবং গোলাম সরওয়ার সাংবাদিক পরিচয় দিলে তাকে প্রধান আসামীকে ধরিয়ে দিতে সহযোগিতা করবেন এই মর্মে স্বসন্মানে রাতের খাবার পরিবেশন করিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়।

এই ঘটনায় গত ১৪ই জানুয়ারী সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা করা হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন মামলা হয়নি, আসামীও নন, তা সত্তে¡ও কেন সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা এই ঘটনাকে মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন। এসময় এই ঘটনাকে একটি তুচ্ছ মারামারির ঘটনা উল্লেখ করে বলেন কোন অপরাধ নয়, কেউ আসামী নয় তবুও র‌্যাব কর্মকর্তারা কেন এত উৎসাহী হয়ে এই অঘটন ঘটালেন তা প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন।

উক্ত ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ র‌্যাবের প্রতি জনগনের যে আস্থা সেই আস্থা যেন সাংবাদিকদের কিছু ভুল তথ্যের কারনে নষ্ট না হয় সেজন্য তিনি সাংবাদিক সমাজের প্রতি বিনিত অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সাতক্ষীরার জজকোর্ট এলাকায় দিনে দুপুরে নারীসহ দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব গোয়েন্দা তৎপরতাসহ অভিযানিক কার্যক্রম শুরু করে। র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে উক্ত ঘটনার অপরাধী নজরুল ইসলামকে আশ্রয়,প্রশ্রয় ও প্ররোচনা দিয়ে গোলাম সরওয়ার তার মোটর সাইকেলে বহন করা অবস্থায় আসামীকে খুলনা মোড় থেকে আটক করে র‌্যাব।

পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের র‌্যাব ক্যাম্পে নেওয়া হয়। এসময় উক্ত মামলার আসামী নজরুল ইসলাম তার সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করায় তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। অন্যদিকে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরে গোলাম সওয়ারের সাথে উক্ত অপরাধের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার আসামীকে পলায়নে সহায়তা করার বিষয়ে ভুল বুঝতে পেরে উক্ত ঘটানার তদন্ত কাজে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন এবং রাতের খাবার খেয়ে রাত ১১ টায় র‌্যাব ক্যাম্প ত্যাগ করেন।

পরবর্তীতে উক্ত মামলার ১নং আসামী ফজর আলী এবং আসামী নজরুল ইসলাম সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারের নিকটতম আত্মীয় এবং সেও ওই ঘটনার সাথে পরোক্ষভাবে জড়িত বলে জানতে পারে র‌্যাব। তিনি আরও বলেন নিজ ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য স্থানীয় ও অন্যান্য সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে র‌্যাব এর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার ঘৃন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। সাংবাদিকের সাথে খারাপ আচরণ কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সেটা সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট,বেআইনী ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে।
সেই সাথে উক্ত ঘটনার সত্য উদঘাটনে ও বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করা ও ক্ষতিগ্রস্থ নাগরিকে ন্যায় বিচারের পথ অমসৃন করছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।