রূপসায় শিয়ালীর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০, রিমান্ড ২ দিনের, তদন্ত কমিটি গঠন

0
195

রূপসা প্রতিনিধি :
রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের শিয়ালী গ্রামের কয়েকটি মন্দির ও দোকান ভাংচুর এর ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। খুলনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৩ এর বিচারক মোঃ সাইফুজ্জামান মঙ্গলবার দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জনায়, শনিবার (৭ আগষ্ট) সন্ধ্যায় চাঁদপুর, শিয়ালী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের কিছু লোক একত্রিত হয়ে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করে বাড়িঘর ভাংচুর করে। এসময় তাদের ঘরের মালামাল লুট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। একপর্যায়ে তারা মহাশশ্মান মন্দির, পূর্বপাড়া সার্বজনীন মন্দির ও মন্দিরের ভেতরের কিছু মুর্তি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় পূজা উদযাপন পরিষপষা পনশভ শক্তিপদ বসু বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। রবিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে সাত দিনের রিমান্ড চায়। ওই দিন রিমান্ড না দিয়ে আদালত শুনানীর দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠান। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে আদালত মঙ্গলবার আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, শরীফুল ইসলাম, শেখ মঞ্জুরুল আলম, মোঃ শরিফুল শেখ, আকরাম ফকির, মোঃ সোহেল শেখ, জামিল বিশ্বাস, শামিম শেখ, সম্রাট মোল্লা ও মমিনুল ইসলাম।
উল্লেখ্য শিয়ালি গ্রামের পূর্বপাড়া মসজিদের ইমাম নাজিমকে লাঞ্চিত, মসজিদের ভিতরে থাকা মুসাল্লিদের ইট নিক্ষেপ ও হাতা হাতির ঘটনা ঘটে ৬ আগষ্ট রাতে ইশার নামাজের সময়। একদিন পর মন্দির এবং স্থানীয় কিছু দোকান ভাংচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়।
ঘটনার পর এলাকায় জেলা পুলিশ সুপার সহ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এলাকায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মসজিদের ইমাম নাজিম সমাদ্দার জানান, গত ৫ আগষ্ট মসজিদের সামনে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৫/৩০ জন পুরুষ/ মহিলা ঢোল ও উলু দিয়ে নাম কীর্তন করতে করতে মন্দিরের দিকে যায়। ঢোল ও উলুর উচচ শব্দের কারনে মসজিদে ইশার নামাজের বিঘœতা সৃষ্টি হয়। গত ৬ আগষ্ট ইশার নামাজের সময় তারা আবারও ঢোল ও উলু দিয়ে মসজিদের সামনে উ”চ শব্দে কিছু সময় ধরে বাজাতে থাকে। তখন ইমাম তাদের কাছে গিয়ে বলেন, ভাই মসজিদে নামাজ চলছে এখান থেকে একটু সামনে গিয়ে বাজান। এই কথা শুনে শিব ধর নামে এক ব্যক্তি আমাকে গলা ধাক্কা দেয় এবং বলে মসজিদ এখানে রাখা যাবে না। এসময় ৬/৭ জন মুসাল্লিদের সাথে ২৫/৩০ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকের সাথে কথা কাটা কাটি হয় এবং মসজিদে ইট নিক্ষেপ শুরু করে। এর আগে মাসুম নামে এক যুবক মসজিদের কাছে ঢোল না বাজানোর জন্য তাদেরকে অনুরোধ করলে তাকেও মারতে আসে। পরবর্তীতে ৭ আগষ্ট বিকালে শিয়ালী গোয়াড়া শ্বশান মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশাকে আহবায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।