রুশোর ব্যাটে চড়ে হ্যাটট্রিক জয় খুলনার; এক হালি হার পূর্ণ হলো রংপুরের

0
447

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান রিলি রুশোর অপরাজিত ৬৬ রানের সুবাদে হ্যাটট্রিক জয় পলে খুলনা। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে টানা তৃতীয় জয়ের স্বাদ পেল মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্স। টুর্নামেন্টের ১৩তম ম্যাচে আজ খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রেঞ্জার্সকে। টানা চার ম্যাচ হারের লজ্জা পেল রংপুর। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৭ রান করে রংপুর। জবাবে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৫ বল বাকী রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় খুলনা। ৩ খেলায় ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট রয়েছে খুলনার। আর ৪ ম্যাচ খেলে শুন্য হাতে রয়েছে জয়হীন রংপুর।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিক। ব্যাট হাতে নেমে মোহাম্মদ নাইমকে নিয়ে মারমুখী মেজাজে শুরু করেছিলেন আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহজাদ। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরের বলে আউট হন শাহজাদ। ৭ বলে ২টি চারে ১১ রান করেন তিনি।
এরপর মিডল-অর্ডারের দু’ব্যাটসম্যান দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও নাদিফ চৌধুরিকে শিকার করে রংপুরকে চাপে ফেলেন পেসার শফিউল ইসলাম। ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর। এবারের আসরে প্রথমবারের মত খেলতে নামা ডেলপোর্ট ৪ ও নাদিফ শুন্য রানে ফিরেন।
পরবর্তীতে শুরুর ধাক্কাটা সামলে উঠার চেষ্টা করেন ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও ফজলে মাহমুদ। খুলনার বোলারদের উপর চড়াও হন নাইম। ধীরে ধীরে লড়াইয়ে ফিরতে থাকে রংপুর। ইনিংস বড় করার পথে আসরের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় পৌছে যান নাইম। কিন্তু এবার ভাগ্য সহায় হয়নি তার। রান আউটের ফাঁদে পড়ে ৪৯ রানে থামেন নাইম। ৩২ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে নাদিফের সাথে ৩৯ রান যোগ করেন নাইম। উইকেটের সাথে মানিয়ে নেয়া ফজলের সাথে জুটি বাঁধতে ক্রিজে যান রংপুরের অধিনায়ক আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী। নবীও হার মানেন পাকিস্তানের আমিরের কাছে। ৪ রান করে আউট হন তিনি।
দলীয় ৯৪ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন নবী। এ অবস্থায় দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌছে দিতে লড়াই শুরু করেন ফজলে ও ইংল্যান্ডের লুইস গ্রেগোরি। মারমুখী ছিলেন ফজলে। ২টি চার-ছক্কায় দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ফজলেকে থামিয়ে খুলনাকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন শফিউল। ৩৩ বলে ৪২ রান করে শফিউলের তৃতীয় শিকার হন ফজলে। বেশি দূর যেতে পারেননি গ্রেগোরি। ২টি চারে ২০ বলে ২২ রান করেন তিনি। ফলে ৯ উইকেটে ১৩৭ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর। খুলনার শফিউল ২১ রানে ৩টি, শহিদুল ইসলাম-আমির ২টি করে উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৩৮ রানের সহজ লক্ষ্যে প্রথম দু’ওভারেই ২৪ রান পেয়ে যায় খুলনা। এরমধ্যে ১৪ রানই ছিলো আফগানিস্তানের রহমানউল্লাহ গুরবাজের। আর ১ রান ছিলো আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত’র। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে শান্ত’কে থামান মুস্তাফিজ।
দলীয় ২৪ রানে শান্ত’র বিদায়ে ক্রিজে গুরবাজের সঙ্গী হন রুশো। ব্যাট হাতে রংপুরের বোলারদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন তারা। মারমুখী মেজাজে খেলে স্কোরবোর্ডকে শক্তপোক্ত করে তুলে গুরবাজ-রুশো জুটি। এরমধ্যে নবীর এক ওভারে ১৩, স্পিনার আরাফাত সানির এক ওভারে ১৮ ও পেসার তাসকিনের এক ওভারে ১৯ রানও নেন গুরবাজ-রুশো।
তবে এ ঝড় থামান তরুন পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। ২২ বলে ১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৭ রান করা গুরবাজ আউট করেন মুগ্ধ। দ্বিতীয় উইকেটে ২৭ বলে ৬১ রান যোগ করেন গুরবাজ-রুশো।
দলীয় ৮৫ রানে গুরবাজ ফিরলে, অধিনায়ক মুশফিককে নিয়ে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন রুশো। চলমান আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩১ বলে অপরাজিত ৬৬ রান করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। ১৭ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। রৌসু-রুশো৩৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৩ রান যোগ করেন। রংপুরের মুস্তাফিজ-মুকিদুল ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রংপুর রেঞ্জার্স : ১৩৭/৯, ২০ ওভার (নাইম ৪৯, ফজলে ৪২, শফিউল ৩/২১)।
খুলনা টাইগার্স : ১৩৮/২, ১২.৩ ওভার (রৌসু ৬৬*, গুরবাজ ৩৭, মুস্তাফিজ ১/১৮)।
ফল : খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : শফিউল ইসলাম(খুলনা)।