রমনার বটমূলে হচ্ছে না বর্ষবরণ, ছায়ানটের ক্ষমা প্রার্থনা

0
170

টাইমস ডেক্স: আসছে আরও একটি নতুন বছর। ঐতিহ্য অনুযায়ী পহেলা বৈশাখে (১৪ এপ্রিল) ভোরের আলো ফুটতেই বাংলা নতুন বছর ১৪২৮-কে বরণ করে নেবে বাঙালি জাতি। আর সেই নতুন বঙ্গাব্দ বরণের অন্যতম অনুষঙ্গ রমনার বটমূলে ছায়ানটের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। তবে দীর্ঘদিনের এই ইতিহাসে সেই অনুষঙ্গ উদযাপনে আবারো ছেদ পড়ছে। এবারও নতুন বাংলা বছরে রমনার বটমূলে কেউ গাইবে না বর্ষবরণের গান ‘এসো হে বৈশাখ…’। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সব ধরনের জনসমাগম বন্ধ থাকায় রমনার বটমূলে নেই ছায়ানটের কোনো অনুষ্ঠান। স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনেই নিয়মিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ও মিলনমেলার আয়োজন থেকে সরে এসেছে তারা। এর বদলে ছোট পরিসরের একটি অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে টেলিভিশন চ্যানেলে। এর আগে ছায়ানটের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, পহেলা বৈশাখ ভোরের অনুষ্ঠান আগেই রেকর্ড করে নেওয়া হবে। এবং সে লক্ষ্যে সম্মেলক দলের নিয়মিত মহড়াও চলছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির ক্রমান্বয় অবনতি এবং শিল্পীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কায় এই আয়োজনটি ডিজিটালি এবং পুরোনো ও নতুন পরিবেশনের মিশ্রণে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। যা বাংলা নববর্ষের প্রথম ভোরে ঘণ্টাখানেকের এই সংকলনটি বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে স¤প্রচার করা হবে। এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রমনার বটমূলে ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে ছায়ানট। গতকাল সোমবার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, করোনা মহামারীর প্রতিক‚ল পরিস্থিতির জন্য গত বছরের মতো এবারও ছায়ানট ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতিতে সকলের স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কা বটমূলের ঐতিহ্যগত আয়োজন থেকে আমাদের নিরস্ত করেছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল দর্শকশূন্য অবস্থায় অথবা পরিস্থিতি আরো বেশি প্রতিক‚ল হলে পহেলা বৈশাখ ভোরের অনুষ্ঠান আগেই রেকর্ড করে নেওয়া। সে লক্ষ্যে সম্মেলক দলের নিয়মিত মহড়াও চলছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির ক্রমান্বয় অবনতি এবং সরকারের সতর্কতামূলক বাস্তবিক সিদ্ধান্তসমূহ আমাদের মনে শিল্পীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা গভীরতর করে তোলে। আমাদের বেশ কয়েকজন শিল্পী ও কর্মীও করোনা-আক্রান্ত। ফলে সকলের নিরাপত্তা বিবেচনায় অনন্যোপায় হয়ে, আমরা ডিজিটালি এবং পুরোনো ও নতুন পরিবেশনের মিশ্রণে অনুষ্ঠান ঢেলে সাজাচ্ছি। বাংলা নববর্ষের প্রথম ভোরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ওই ঘণ্টাখানেকের সংকলন স¤প্রচার করার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। একইসাথে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও (ুড়ঁঃঁনব.পড়স/ঈযযধুধহধঁঃউরমরঃধষচষধঃভড়ৎস) অনুষ্ঠানটি দেখা যাবে।’ সবশেষে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে ছায়ানট তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের বাংলা বর্ষবরণের প্রতীকী, সংক্ষেপ ও ডিজিটাল আয়োজনটি সাজানো হয়েছে মানুষের মঙ্গল কামনা এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে উজ্জীবনী গান, বাণী ও কথন দিয়ে। সংকট-প্রভাবিত রূঢ় বাস্তবতার নিরিখে, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আপামর বাঙালির প্রাণের এই ঐতিহ্যর মহোৎসবের পূর্ণাঙ্গ আয়োজন করতে না পেরে আমরা মর্মাহত এবং জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তবে আমাদের বদ্ধমূল বিশ্বাস সুদিন ফিরবেই। সকলের মঙ্গল হোক।’