ময়ূর নদের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলো প্রশাসন

0
1045

এম জে ফরাজী : খুলনায় ময়ূর নদসহ সংযুক্ত ২২টি খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে নগরীর গল্লামারী ব্রিজের কাছে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা মার্কেট, স্থাপনা ও নদীর মধ্যে থাকা লিনিয়ার পার্কের একাংশ ভেঙে দেওয়া হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো দেলোয়ার হোসেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে খুলনা সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ময়ূর নদসহ মহানগরের অভ্যন্তরীণ ও পার্শ্ববর্তী খালগুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মহানগরীর ময়ূর নদসহ ২২ খালের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা, খুলনার সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা ও বসবাসের উপযোগী করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণরূপে দখলমুক্ত করা হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, খালে অবৈধ জায়গা উচ্ছেদে পৃথক তিনটি কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সচেতন মানুষসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তিনি বলেন, অবৈধ দখলদারদের তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হচ্ছে। যদি তারা তাদের স্থাপনা সরিয়ে না নেয় তাহলে তা ভেঙে দেওয়া হবে।
এদিকে উচ্ছেদ কার্যক্রম সফল করার জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট টেকনিক্যাল কমিটি ও ২৫ সদস্য বিশিষ্ট উদ্ধার কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে সোমবার খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এসব খালের বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, প্রভাবশালীরা স্রোতহীন ময়ূর নদে খুব সহজেই পাটা ও বাঁধ দিয়ে প্রতিদিনই দখল কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। পৈত্রিক সম্পত্তির মতো গাছপালা লাগানো ও চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা, এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পাকা বাড়ি-ঘর ভবন নির্মাণ করেছিলেনও অনেকে।
দুই যুগ আগেও ময়ূর নদে পালতোলা নৌকা চলাচল করতো। অনেক জেলে পরিবারের জীবিকার মূল উপজীব্য ছিল এ নদী। গোসল ও তৈজসপত্র ধোয়ার কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতো। অথচ এখন দখল ও দূষণে আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়ূর নদের সঙ্গে আগে রূপসা নদীর সরাসরি সংযোগ ছিল। দখলে নদী হারিয়েছে নিজস্বতা। ময়ূর নদকে নাব্য করতে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। তাতে পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি নগরীর খালগুলো। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটিসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠন খাল দখল মুক্তকরণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।