মোড়েলগঞ্জে নিশানবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

0
367

এম.পলাশ শরীফ, মোড়েলগঞ্জ থেকে॥
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে নিশানবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা বিধ অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়া। মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রী চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত নতুন পাঠ্য বই নিয়ে ফেলে রখেছে অ-যতেœ অবহেলায়। সরকারি পরিকল্পনাকে করা হচ্ছে ব্যহত। বিনষ্ট করা হচ্ছে নতুন পাঠ্য বই।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, খাউলিয়া ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী নিশানবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাটি ১৯৮৪ সালে স্থাপিত। মাদ্রাসার অবকাঠামো খুবই নাজুক। কাগজে কলমে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক। উপস্থিতি খুবই কম। শিক্ষক মন্ডলী সুপারসহ ১৫ জন, করনিক একজন, ৩য় শ্রেণীর কর্মচারি ২জন, নৈশ প্রহরী ও দপ্তরি রয়েছে ২জন। দীর্ঘদিনের মাদ্রাসাটির অবকাঠামোর হয়নি কোন পরিবর্তন।
পরিপূর্ণ শিক্ষক ও কর্মচারী থাকলেও লেখা পড়ার মান শ্রেণী কক্ষগুলোর অবকাঠামোর নেই কোন পরিবর্তন। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত কক্ষগুলোর জরার্জীণ। পাশাপাশি এবতেদায়ী শাখার শ্রেণীকক্ষের একই অবস্থা সামান্য বৃষ্টি হলেই ঝাজড়া টিন থেকে পানি পড়ে ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। শিক্ষকদের অফিস কক্ষটি সেমিপাকা টিনের ছাউনি হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেণী কক্ষ দেখে মনে হবে এটি একটি আসমানিদের ঘর। সামান্য ঝড়ো বাতাস হলেই অনেক কক্ষ ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোন মতে পাশ থেকে খুটি দিয়ে মূল ঘরটিকে ঠেকানো হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টায় সপ্তম শ্রেণী শিক্ষার্থী উপস্থিতি সংখ্যা ৯ ও ৬ষ্ঠ শেণীতে ১২জন।
শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার, মিম আক্তার, জান্নাতি ও সুমাইয়া আক্তার সহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিনিয়ত তারা মাদ্রাসায় স্ব স্ব শ্রেণী কক্ষে পাঠদানে আসেন। সামান্য বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ চমকালেই ভয়ে আতংকে থাকে তারা। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মূখিন হতে পারে তারা। এ দৈন্যদশার অবসান কোথায়? এদিকে কথা উঠেছে মাদ্রাসার সুপার মো. শহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অদক্ষতার কারনে ক্ষোভ রয়েছে অভিভাবক মহলের। নিয়মিত সে মাদ্রাসায় থাকেনা। অফিসিয়াল কাজে প্রায়ই থাকেন বাহিরে। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন তিনি।
পিবিএম প্রকল্পের ১৯ হাজার টাকা আলমারী ক্রয় না করেই আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকরা। দূনীতি প্রতিরোধ বিষয়ক অনুষ্ঠান না করেই নামে মাত্র ব্যানার দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দাড় করিয়ে ছবি তুলে অফিসে প্রেরণ করেছে। অনুষ্ঠানের খরচ ৪ হাজার টাকা কাগজে কলেমে ভাউচার দেখিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড তৈরি করা বাবদ ১শ’ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। অভিভাবক লতিফ মৃধা, মাহমুদ ফরাজী, মো. জাহিদ, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আলতাফ হোসেন হাওলাদারসহ একাধিক অভিভাবকদের রয়েছে নানা ক্ষোভ।
২০১৯ সালে সরকারিভাবে শ্রেণী কক্ষের নতুন পাঠ্য বই চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত নিয়ে অযতেœ অবহেলায় ফেলে রেখেছে ¯ুÍপ আকারে জরাজীর্ণ খাটের নিচে। সুপারের সাথে রয়েছে নৈশ প্রহরী শফিকুল ইসলামের সাথে স্থানীয় দলাদলী। সুপার ও নৈশ প্রহরীর অশ্লীন বাক বিতান্ডায় সাধারণ শিক্ষকদের হতে হচ্ছে মানক্ষুন্ন।
এ সর্ম্পকে নিশানবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শহিদুল ইসলাম বলেন, স্টুডেন্ট আইর্ডি কার্ডের বাবদ ২ হাজার দুইশত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সকলে টাকা দেয়নি। অতিরিক্ত বই সংশ্লিষ্ট দপ্তর ফেরৎ না চাওয়ায় মাদ্রাসায়ই রাখা হয়েছে এসব বই।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, নতুন পাঠ্য বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদা ছাড়াও অতিরিক্ত নিয়ে থাকলে তা অবশ্যই নিজেদের তত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানে রাখতে হবে। সরকারি নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কোন সিদান্ত দেওয়া হয়নি। তবে বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই ।
মাদ্রাসার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, মাদ্রাসাটির জরাজীর্ণ অবকাঠামোর বিষয় নজর দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পাঠদানে বসার জন্য ২০ জোড়া বেঞ্চ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো দেওয়া হবে। সুপারের অনিয়মের বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।