মোড়েলগঞ্জে কনকনে শীতে খেজুর রস সংগ্রহে গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন

0
377

এম.পলাশ শরীফ, মোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট): গ্রাম বাংলার ইতিহাস-ঐতিয্য কালের বিবর্তে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। শীত মৌসুম এলেই প্রতিটি গ্রামের পাড়া মহল্লায় আনন্দের ধুম পড়ে যেতো। খেজুরের রস গুড় পিঠা-পায়েশ প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের সমরহ দেখা যেতো।
এ অঞ্চলের এক সময়ে খেজুর গাছের রস ও খেজুর গুড়ে ঐতিয্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। অপরিকল্পিত ইটভাটাগুলোতে নিয়মনিতীর কোন তোয়াক্কা না করেই দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে খেজুর গাছ। প্রশাসনের নেই কোন তদারকি। তার মধ্যেও কনকনে শীত উপেক্ষা করে গাছিরা খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের চরহোগলাবুনিয়া গ্রাম ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রাস্তার দু’পাড়ে দু’ শতাধিক খেজুর গাছ কাটছেন পেশাদার গাছিরা। মোয়াজ্জেম বেপারি, হারুন তালুকদার, খালেক তালুকদারসহ একাধিক গাছিরা বলেন, পৌষ ও মাঘ এ দু’ মাস তাদের মৌসুম। এ মৌসুমের আয় থেকে সংসার পরিচালনা করেন গাছিরা।
মোয়াজ্জেম বেপারি বলেন, বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ইটভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানোর ফলে দিন দিন খেজুর গাছ গ্রাম অঞ্চলে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাড়িয়েছে। এক সময় তিনি বর্গা নিয়ে প্রায় ২’শতাধিক গাছ কাটতেন। এ বছরে সেখানে মাত্র ২০টি গাছ কাটছেন। প্রতিদিন দুপুরে গাছ কাটা হয় এবং সকালে ১০ হাড়ি রস নামানো হয়। চাহিদা রয়েছে অনেক। প্রতি হাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০/৮০ টাকা। খেজুর গুড় প্রতিকেজি ১২০ টাকা করে বিক্রি করছেন। দীর্ঘ ১ যুগ ধরে তিনি এ পেশায় থেকে সংসারে স্ত্রী ও ৩ ছেলে ও ১মেয়েকে নিয়ে জীবনযাপন করছেন। ৩ ছেলেকে এইচএসসি পাশ ও মেয়ে নুপুর আক্তার রওশন আরা মহিলা ডিগ্রী কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
অপরদিকে গাছি হরুন তালুকদার(৫৫), জানান, এ বছরে সে ৬০টি গাছ ও গাছি খালেক তালুকদার(৭০) তিনি জানান ৪০ বছর ধরে গাছ কাটছেন এ বছরে ৩৫টি গাছ কাটছেন। তারা এ গাছি পেশা থেকে সংসার পরিচালনা করেন। গাছিদের দাবি বনবিভাগ থেকে প্রতি বছর রাস্তার দু’ পাড়ে পর্যাপ্ত খেজুর গাছ রোপন ও পরিবেশ ভারসম্য বজায় রাখার জন্য ইট ভাটায়গুলোতে খেজুর গাছ পোড়ানো বন্ধ করা হোক।