মোস্তর মোড় কৈয়া বাইপাস এলাকায় দিনে ভুমি মালিকের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড রাত হলেই ভুমিদস্যু কর্তৃক গায়েব

0
1193

সুমন আহমেদ/ফকির শহিদুল ইসলামঃ
খুলনা মহানগরীর বাইপাস মোস্তর মোড় কৈয়া সড়কে এলাকায় জমির জাল-জালিয়াতি ও ভুমিদস্যু চক্রের তৎপরতা বেড়েছে। এতে দিশেহারা সাধারন ভুমি মালিকরা সর্বস্ব খুঁইয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ভুমিদস্যুদের লোলুপ দৃষ্টি পড়লেই জমির মালিকানাতো হাতছাড়া হচ্ছেই, পাশাপাশী দিতে হচ্ছে নিজের জীবন । ভুমিদস্যু চক্রের কাছে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা মামুলী ব্যাপার । ভুমি মালিকরা দির্ঘদিন আদালতে ঘুরতে ঘুরতে জমির উপর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার নোটিশ বা চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড স্থাপন করলেও রাতের আধারে ভুমিদস্যুরা কর্তৃক সেই সাইনবোর্ড গায়েব হয়ে যায় । অথচ দিনে ভুমি মালিকের পক্ষে থানা পুলিশ থাকলেও রাতে থাকেন ভুমিদস্যুদের এমন অভিযোগ সাধারন ভুমি মালিকদের । দিন দুপুরে যারাই থানা পুলিশের উপস্থিতিতে নিজ জমিতে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়েছেন কিন্ত রাত হলে সে সাইনবোর্ড গায়েব হয়ে যায় ।
জানাগেছে,মোস্তর মোড় কৈয়া সড়কের চক আসানখালী মৌজা সি/এস ২০৭ খতিয়ানে মোট ৫.৯০ একর জমির ৪ আনা অংশে ১.৪৭৫০ মালিক ইজ্জত শেখ এবং ৪ আনা অংশে ১.৪৭৫০ মালিক জব্বার শেখ । কিন্ত উক্ত জমির দেখাশুনা দায়িত্ব পালন করেন ২ আনা অংশের মালিক হাসমাতুল্লা শেখ । পরবর্তীতে এস এ রেকর্ডে হাসমাতুল্লা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ইজ্জত শেখ, জব্বার শেখকে অনুউপস্থিত দেখিয়ে এস/এ ২৯৭ নং খতিয়ানে নিজের নামে ৪ আনা অংশ,ফেদু শেখের নামে ৪ আনা এবং আছিয়া খাতুনের নামে ৮ আনা অংশে মালিক হয়ে রেকর্ড করায় । এর পর এস/এ ২৯৮ খতিয়ানে একই ভাবে হাসমাতুল্লা নিজ নামে ৮ আনা এবং ফেদু শেখের নামে ৮ আনা অংশে মালিকানা দেখিয়ে রেকর্ড সম্পর্ন করেন । আর এ রেকর্ডে জমির প্রকৃত ৮আনা মালিক ইজ্জত শেখ ও জব্বার শেখকে জালিয়াতের আশ্রয়ে বঞ্চিত করে হাসমাতুল্লা । শুধু বঞ্চিতই নয় হাসমাতুল্লা শেখ ও ফেদু শেখ ৩৮/৩৮ নং মোকদ্দমায় রায়-ডিক্রি প্রপ্তির দাবি করলেও আদালতে ডিক্রির মূল কাগজপত্র দাখিল করতে  পারেনি । উক্ত মামলার আরজির ফটোকপি,বর্ননার আংশিক ফটোকপি,ফাইনাল ডিক্রির আদেশের ফটোকপি ও প্রাথমিক ডিক্রির ফটোকফি ৩৮/৩৮ নং মোকদ্দমার নথিতে থাকলেও মামলার মুল রায় নথিতে দেখাতে ব্যার্থ হন হাসমাতুল্লা গং । এ অবস্থায় সি/এস রেকর্ডের ৪ আনা অংশে মালিক ইজ্জত শেখ ও ৪ আনা অংশে মালিক জব্বার শেখ এর ওয়ারেশগন এস/এ ২৯৭ ও এস/এ ২৯৮ রেকর্ড সংশোধনের জন্য গত ২০/৩/১৪ইং তারিখ দেওয়ানী সাবজর্জ-২ এর আদালত ডুমুরিয়ায় মামলা করেন । অন্যদিকে এস/এ ২৯৭ ও এস/এ ২৯৮ ভুয়া ও জালিয়াত রেকর্ড মোকদ্দমার ভুমি হাসমাতুল্লার পুত্র শেখ আবুল হোসেন ও তার পুত্রদ্বয় পরস্পর যোগসাজসে স্থানীয় ভুমিদস্যু চক্র ও বিশ্বাস প্রপাট্রিজ এর মালিক তারা বিশ্বাসের নিকট নালিশি ভুমি বায়না করেন বলে ভুমির ওয়ারেশদ্বার শেখ দাউদ আলীর অভিযোগ।
। নালিশী ভুমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্বেও উল্লেখিত ভুমিতে বিশ্বাস প্রপাট্রিজ বালু ভরাটের কাজ শুরু করেন । এ বিষয়ে কথা হয় মামলার বাদী ও ভুমির প্রকৃত মালিক শেখ দাউদ আলী ও তার পুত্র বেল্লাল শেখের সাথে ,তারা জানান বিশ্বাস প্রপাট্রিজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান আমাদের ভুমিতে সাইনবোর্ড ও বালু ভরাট করছে । বিষয়টি সরেজমিন দেখে আমি বেল্লাল শেখ বিশ্বাস প্রপাট্রিজ মালিক তারা বিশ্বাসের কাছে মৌখিকভাবে জানান যে মোকদ্দমার ভুমিতে সাইনবোর্ড ও বালু ভরাট করা হচ্ছে কেন। এমন প্রশ্নে তারা বিশ্বাস বলেন আমি জানি তোমাদে ভুমি আছে এবং আদালতে মামলা চলমান আছে । আমি শেখ আবুল হোসেন ও তার পুত্রদ্বয়ের কাছ থেকে পিছনের অংশ বায়না করছি তার ভিক্তিতে ভুমিতে সাইনবোর্ড ও বালু ভরাট করা হচ্ছে । এর কয়েকদিন পর আমি জানতে পারি আমার ভুমি প্লট আকারে বিক্রির জন্য তারা বিশ্বাস বিভিন্ন পার্টিকে দেখাচ্ছে । জমি ক্রেতারা জমির কাগজপত্রে ত্রুটি এবং আমাদের মামলা থাকায় ক্রেতা আমার কাছে এলে আমি উল্লেখিত ভুমির মালিকানা বিষয়ে ত্রুটির কথা জানাই । এ কথা বিশ্বাস প্রপাট্রিজ মালিক তারা বিশ্বাসের কাছে পৌছেলে তারা বিশ্বাস আমাকে সেল ফোন বলেন বিশ্বাস প্রপাট্রিজ নিয়ে কথা বললে তোর জীব কেটে ফেলবো আমি তারা বিশ্বাস । আমার প্রতিষ্ঠান নিয়ে বা আমার ক্রেতাদের কাছে ভুমির মামলার কথা জানালে আমি তারা বিশ্বাস কাউকে জীবিত রাখবো না বলে হুমকি প্রদান করে বলে বেল্লাল শেখ

জানান ।
তিনি আরো জানান, বিশ্বাস প্রপাট্রিজ সাইনবোর্ড ও বালু ভরাট করায় আমার পিতা গত ৬/৯/১৮ তারিখ নালিশী জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন । তার আবেদনের প্রেক্ষিতে যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালত খুলনা বিজ্ঞ আদালত গত ২৫ /৯/১৮ ইং তারিখ নালিশী ভুমিতে পরস্পরের শান্তিপূর্ন সহাবস্থান বজায় রাখার স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন । নিষেধাজ্ঞার আদেশে বলা হয় যে এবং ১৬-২১নং বিবাদীর আনিত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দরখাস্থদ্বয় দো-তরফাসূত্রে পরিবর্তিত আকারে মঞ্জুর করা হইলো । তাহাদের অত্র মোকদ্দমা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশি জমিতে স্ব-স্ব দখল অনুযায়ী স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন । আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নালিশি জমির বাদী লবনচরা থানা পুলিশের সহায়তায় নিজ ভুমিতে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেন । বেল্লাল শেখ জানান,আদালতের নির্দেশনায় দিন দুপরে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছি কিন্ত রাতের আধারে ভুমিদস্যু চক্রটি আমার সাইনবোর্ডটি গায়েব হয়ে যায় । এভাবে কয়েকবার নিজভুমিতে সাইনবোর্ড দিলেও রাতে ওই ভুমিদস্যুর পালিত সন্ত্রাসীরা তা চুরি করে নিয়ে যায় । তিনি আক্ষেপ করে এ প্রতিবেদকে বলেন, চক আসানখালী মৌজা এলাকার সাধারন ভুমি মালিকরা ভুমিদস্যুদের হাতে জিম্মি । প্রকৃত ভুমি মালিকরা কখনো প্রশাসনিক সহায়তা পায়না কারন ভুমিদস্যুদের কালো টাকায় কাছে নিরিহ ভুমি মালিকরা অসহায় । দিনে পুলিশ সহায়তা করে লোক দেখানো আর রাতে ভুমিদস্যুদের কালো টাকা নিয়ে নিরিহ ভুমি মালিককে হয়রানী করে বলে তিনি জানান ।