মোংলা বন্ধরের আয় বাড়লেও কাষ্টমসের রাজস্ব কমেছে দেড়শ কোটি টাকা

0
438

সৈয়দ বাদশা হোসেন, বাগেরহাট:
মোংলা বন্দরের আয় বাড়লেও কাস্টমসের রাজস্ব কমেছে দেড়শ কোটি টাকা। গেল প্রায় দুই দশকের স্থবিরতা কাটিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার বাড়ছে সক্ষমতা ও কর্মচাঞ্চল্য। জাহাজ আগমন নির্গমন সংখ্যাও বাড়ছে । বেড়েছে বন্দরের আয়ও সর্বশেষ ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে নীট মুনাফা হয়েছেও ১শ৩০ কোটি টাকা । মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের দাবী ২০০৯ সাল থেকে বন্দরে গতী আসতে শুরুকরেছে । আর এই ধারা বাহিকতা অব্যাহত গতীতে বাড়ছে । বন্দরের প্রধান সমস্যা নদীর নাব্যতা সংকটে ১শ’৬কোটি ৫১লাখ টাকা ব্যায়ে পশুর চ্যানেলে খনন কাজ প্রকল্প নেয়া হয় । ২০১৯- ২০১২০ অর্থবছরে ৬শ ৫১কোটি টাকা ব্যায়ে বন্দর চ্যানেলে পলি অপসারনের কাজ শুরু হয়েছে। মোংলা বন্দরে অত্যাধুনিক মোবাইল ক্রেনের অপারেশনাল কার্য শুরু হয়েছে । বন্দরের উন্নয়নের যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি। একারনে জাহাজ আগমের সংখ্যাও বেশ বেড়েছে বন্দরের অর্থ ও হিসাব শাখার তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পন্য নিয়ে বিদেশী জাহাজ এসেছে ৯শ ১২টি যা গত অর্থ বছরের ৭শ৮৪ টিথেকে ১শ২৮টি বেশী। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে পন্য উঠানো নামানো বেড়ে ১ কোটি ২লাখ মেট্রিক টনে পৌছিয়েছে। তবে এ বন্দরে নাব্যতা সংকটে কন্টেইনার জাহাজ আগমন তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে । মাসে গড়ে প্রায় ৯০ থেকে ১শ জাহাজের আগমন ঘটলেও কন্টেইনার বাহি জাহাজ আগমন হচ্ছে ৩ থেকে ৪টি । কন্টেইনার বাহি বানিজ্যিক জাহাজের সংকটের কারনে মোংলা কাস্টমসের রাজস্ব লক্ষমাত্রা ছোয়া যেন স্বপ্ন হয়ে দাড়িয়েছে। মোংলা কাস্টমসের তথ্য অনুসারে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩হাজার ২শ ৩৮ কোটি টাকা যা গেল অর্থ বছর থেকে ১শ৪৯ কোটি টাকা আদায় কম হয়েছে । আর লক্ষ মাত্রা থেকে ১হাজার ১শ৩৫কোটি টাকা কম। এবিষয়ে বন্দর ব্যাবহার কারি ও সিএ্যান্ড এফ এজন্টদের দাবী মোংলা বন্দরে কন্টেইনার বাহি বানিজ্যিক জাহাজ একেতো কম তার পর শত ভাগ পন্য পরিক্ষন হচ্ছে । এছাড়া অধীকাংশ পন্য ৩থেকে ৪বার পরিক্ষন করছে কাস্টম কর্মকর্তারা। ফলে পন্যের গুনগত মান কমে যাচ্ছে ,পন্য ইনটেক থাকছেনা। আবার কখনো কখনো পন্য খালাসে সময় বেশী লাগছে ঢাকা থেকে কখন পরিক্ষন করবেন সেই বিষয়টা জানতে সময় লাগছে । আবার ৩/৪বার পরিক্ষনে লেবার বিল গুনতে হচ্ছে ১০/১২ হাজার টাকা। সেখানে চট্রগ্রাম বন্দর,ঢাকা আই সিডি ও পান গাও বন্দরে পন্য পরিক্ষন হচ্ছে মাত্র ১০ ভাগ। শুধু তাই নয় সেখানে দিনে দিনে পন্য খালাস করা হচ্ছে । এছাড়া তারা আরো দাবী করেন মোংলা বন্দর আরো বেশী গতিশীল হোক এটা চট্রগ্রাম ,ঢাকা আইসিডি ও পান গাও বন্দরের একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট ও সরকারের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা মেনে নিতে পারছেননা বলে ইঙ্গিতদেন । এবিষয়ে মোংলা কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন এই বন্দরে ব্যাবসায়ীক পন্য কম আসে । এখানকার প্রধান রাজস্ব আসে গাড়ী আমদানী থেকে এবছর গাড়ী আমদানী কমেছে বিধায় রাজস্ব কমেছে ।আর এখানে কাস্টমসের তৎপরাতার কারনে আমদানী নিশিদ্ধ বা অবৈধ কোন মালামাল আনার কোন সুযোগ নেই । এছাড়া পূর্ব থেকে এখানে শত ভাগ পন্য পরিক্ষন হয়ে আসছে তাই করা হয়ে থাকে । তবে ব্যাবসায়ী ও সি এ্যা›ডএফ এজেন্টদের দাবী যৌক্তিক । অন্য বন্দরের সাথে এখানেও সমন্বয় থাকা দরকার।
এ বিষয়ে বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এ্যন্ড ইন্ডাস্ট্রি র সভাপতি শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন মুঠোফোনে বলেন,মোংলা বন্দর গতিশীল হোক তা চট্রগ্রাম ,ঢাকা আইসিডি ও পানগাও বন্দরের কিছু মধ্যস্থতাভোগী ব্যাবসায়ীরা মেনে নিতে পারছেনা। এই বন্দরে যারা পন্য আমদানী করছেন কৌশলে তাদেরকে নানা রকমের হয়রানীর ফন্দি আটছেন তারা । আমার কাছে মোংলা বন্দর ব্যাবহারকারি ও সিএ্যান্ড এফ এজেন্ট গন অভিযোগ করেছেন এখানকার কাস্টম শত ভাগ পন্য পরিক্ষন তো করেনই এছাড়া নানা অজুহাতে এক পন্য একাধিকবার পরিক্ষন করেন ফলে পন্যের গুনগত মান ক্ষুন্ন হয়ে থাকে একারনে ব্যাবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমি কাস্টমসের প্রতি দাবী জানাবো চট্রগ্রাম ,ঢাকা আইসিডি ও পানগাও বন্দরে ১০ ভাগ পন্য পরিক্ষন হয়ে থাকে । এছাড়া দিনের পন্য দিনে খালাসের সুযোগ পায় এখানের ব্যাবসায়রিা যেন সেই সুযোগটা পায় কোন ধরনের হয়রানীর শিকার না হয়।