এ,এইচ শাহিন, মোংলা :মোংলায় একটি মাদ্রাসার খেলার মাঠ দীর্ঘ তিন বছরের অধিক সময় ধরে দখল করে রেখে সেখানে গো খাদ্যের ঘাস চাষ করে আসছেন স্থানীয় এক ইউপি মেম্বর। উপজেলার উত্তর চাঁদপাই গ্রামের ‘চাঁদপাই পীর মেছেরশাহ দাখিল মাদ্রাসা’র এই মাঠটি দখল করে রাখায় ওই মাদ্রাসাসহ আশপাশের সকল শিক্ষার্থীরা খেলা-ধুলাসহ নানা ধরণের বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মাঠ না থাকায় মাদ্রাসার পাঠদান শেষে কিংবা টিফিনের ফাঁকে খেলাধুলাও করতে পারে না তারা। শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মাদ্রাসাটির মাঠ বলতে কিছু নেই। মাদ্রাসার মাঠের চারপাশ দিয়ে নেট জাল দিয়ে ঘেরা। মাঠের প্রায় ১২ শতক জমিতে রয়েছে দুই হাত লম্বা সবুজ ঘাস ও কলা গাছ। ঘাসে ভরা এই জমিই মাদ্রাসাটির একমাত্র খেলার মাঠ বলে মাদ্রাসা জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির হোসেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মোঃ হোসাইন শেখ ও ৮ম শ্রেণীর রোকাইয়া আক্তার, তাইয়েবা আক্তার তান্না বলেন, আমাদের মাঠ আটকিয়ে মতি মেম্বর তার গরুর জন্য ঘাস চাষ করছেন। আমরা খেলবো কোথায়, আমাদের তো খেলার তো জায়গা নেই।
মাদ্রাসার সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, মাঠ দখল করে স্থানীয় মতি মেম্বরের ঘাস চাষ করার বিষয়টি সত্য। তবে এতে আমার কোন হাত নেই। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির (স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান) নির্দেশে ঘাস চাষ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের খেলা-ধুলা বন্ধসহ নানা অসুবিধা হচ্ছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চাঁদপাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলামের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা জহুর আলী ও মোঃ মিলন শেখ জানান, আজ তিন বছর ধরে মাঠটি দখল করে চাঁদপাই ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মতিউর রহমান তার উন্নত জাতের গরুর জন্য ঘাষ চাষ করে আসছেন। ঘাষ চাষের আগে সেখানে তিনি পেঁপে, কলাসহ বিভিন্ন শাক সবজির চাষ করে ব্যবসা করেছেন। এর সাথে মাদ্রাসার প্রিন্সিপালও জড়িত বলেও জানান তারা।
উত্তর চাঁদপাই গ্রামের অভিভাবক ও বাসিন্দারা বলেন, মেম্বর মাঠ দখল করে রাখায় মাদ্রাসায় ছেলে মেয়েরা কোন খেলাধুলা করতে পারেনা, এটি কি হতে পারে? মেম্বর-চেয়ারম্যানরা প্রভাবশালী হওয়ায় এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। তারা আক্ষেপ করে বলেন, আপনারাও লেখা-লেখি করে কিছু করতে পারবেন বলে মনে হয় না।
এদিকে ইউপি মেম্বর মতিউর রহমান মাঠ দখল করে ঘাস চাষের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি মিথ্যা বলবো না, মাঠে ঘাস চাষ করে আমার গরুকে খাওয়াই। মাঠের বালু যাতে ধুয়ে না যায় সেজন্যই আমি মাঠে এর আগে কলা, পেঁপে ও পেয়ারা গাছ লাগিয়েছি। এখন ঘাস চাষ করছি। ঘাস বড় হলে কেটে নিয়ে মাঠ ছেড়ে দিব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রবিউল ইসলাম বলেন, চাঁদপাই পীর মেছেরশাহ দাখিল মাদ্রাসার মাঠ দখল করে ঘাস চাষের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোজ খবর নিয়ে আমি দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব । #
