মোংলায় একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগ

0
606

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি, খুলনাটাইমস:
প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র মোংলা উপজেলার সাবেক সমন্বয়কারী জুলেখা বিবির বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাৎসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত জুলেখার বিরুদ্ধে প্রকল্পের বর্তমান দায়িত্বে থাকা মোংলা সমন্বয়কারী মোঃ কামরুজ্জামান ঢাকার কেন্দ্রীয় প্রকল্প পরিচালক বরাবরে ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগও করেছেন। আর জুলেখার বিবির এ অর্থ আত্মসাতের সাথে মোংলা প্রকল্পের সিও (কম্পিউটার অপারেটর) অর্চনা গুপ্ত ও চাঁদপাই ইউনিয়ন মাঠ সহকারী মোঃ শহিদুল ইসলাম জড়িত বলে প্রকল্প পরিচালক বরাবরে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র মোংলার বর্তমান সমন্বয়কারী মোঃ কামরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ সকল তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, প্রকল্পের সাবেক উপজেলা সমন্বয়কারী জুলেখা বিবি ২০১১ সালের ১৯ নভেম্বর মোংলায় যোগদান করে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত চাকরি করাকালীন সময় নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ প্রকল্পের ৫৪টি সমিতির পাস বইয়ের টাকা মাঠ সহকারীরা বিভিন্ন সময় তাদের প্রকল্প সমন্বয়কারী জুলেখা বিবির অফিসের যৌথ একাউন্টে জমা করেন। কিন্তু মাঠ সহকারীদের কাছে উক্ত জমা টাকার চালান থাকলেও সদস্যদের নামে সঞ্চয় ও কিস্তিতে তা পোস্টিং করা হয়নি। এতে মাঠ কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়েন। ওই কর্মকর্তা তার সমিতির সদস্যদের মাঝে ঋণ বিতরণের সময় জনপ্রতি ১০ হাজারের জন্য ১০০/২০০ টাকা করে উৎকোচ গ্রহণ করেন। উৎকোট দিতে না চাইলে কিংবা এতে কেউ প্রতিবাদ করলে তার লোন বন্ধ করে দিতেন। এছাড়া এ কর্মকর্তা তার ৩ ইউনিয়নের ৬ জন ম্যানেজারের ভাতা বাবদ ৬০ হাজার টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। তিনি বিভিন্ন সময় অফিসের ২২ লাখ ৮৩ হাজার ৫শ’ ৮০ টাকা তার নিজ একাউন্টে (সোনালী ব্যাংক, হিসাব নং- ২৯১০৩৪০৬৯২৯৪-এ) জমা করেন। পরে সুবিধা অনুযায়ী ২২ লাখ ৭ হাজার ৭শ ৪৩ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। প্রকল্পের চাঁদপাই ইউনিয়ন মাঠ সহকারী মোঃ শহিদুল ইসলামও ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫শ ৬০ টাকার হিসাব দিতে ব্যর্থ হন। এ সব অর্থ আত্মসাতে অফিসের কম্পিউটার অপারেটর অর্চনা গুপ্তও জড়িত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সাবেক সমন্বয়কারি জুলেখা বিবি, কম্পিউটর অপারেটর অর্চনা গুপ্ত ও মাঠসহকারী শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ২৬ লাখ ৩২ হাজার ৩শ ৩ টাকা আদায় করার জন্য প্রকল্প পরিচালক বরাবর পত্র দিয়েছেন বর্তমান সম্বনয়কারী মো: কামরুজ্জামান। এছাড়াও ওই কর্মকর্তা (জুলেখা বিবি) নিজে বাড়ি কেনার নামে তার অফিসের মাঠ সহকারী সুদেব গাইনের কাছ থেকে ৫০ হাজার ও শীলা রানীর কাছ থেকে ৯৪ হাজার টাকা ধার হিসেবে নিয়ে ওই টাকা আর ফেরৎ দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। অর্থ আত্মসাৎতের বিষয়টি সর্বত্র জানাজানি হওয়ার আগেই জুলেখা বিবি চলতি বছরের ৩১ জুলাই মোংলা থেকে খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলায় বদলি হয়ে যান। এ বিষয়ে জুলেখা বিবি বলেন, ৩ মাসের ছুটিতে তিনি দেশের বাহিরে থাকাকালেই হিসাবের এ গড়মিল হয়। বিষয়টি তিনি (জুলেখা) ওই সময় মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করে ছিলেন। তবে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) মোঃ আকবর হোসেন বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। #